পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বেনামী দরখাস্ত দিয়ে পদস্থ সরকারি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন ব্যক্তিকে হয়রানিকারক ‘নাটেরগুরু’ আহসান আলীকে এখনো প্রশ্রয় দিচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তার বিপুল অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগসহ জাল-জালিয়াতির নানা অভিযোগ থাকলেও তার বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি প্রতিষ্ঠানটি। বরং বার বার অভিযোগ থেকে তাকে দায়মুক্তি দেয়া হয়েছে। আর এর ফলে দুদকের কথিত কর্মকর্তা মানুষের সঙ্গে প্রতারণার মাত্রা আরো জোরদার করার সুযোগ পেয়েছেন।
দুদক সূত্র জানায়, নানা দুর্নীতি এবং বিভিন্নজনের বিরুদ্ধে বেনামী অভিযোগ দিয়ে প্রায়ই হয়রানি করতেন দুদকের সাবেক উপ-পরিচালক মো. আহসান আলী। এসব অভিযোগের কারণে ২০১৫ সালে তাকে উপ-পরিচালক হিসেবে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। এরপর থেকে তিনি আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। কখনও তিনি দুদকের ‘হবু ডিজি’, কখনো দুদকের চেয়ারম্যানের ‘কাছের লোক’ কখনো ‘দুদক পরিচালক’ পরিচয় দিয়ে মানুষজনের সঙ্গে প্রতারণা করছেন।
সূত্রটি জানায়, দুদকে চাকরিকালে আহসান আলী নিজ সহকর্মীদের বিরুদ্ধে একের পর এক বেনামী অভিযোগ দাখিল করতেন। তার বিরুদ্ধেও কোনো কোনো কর্মকর্তা দুর্নীতির অভিযোগ দেন। অভিযোগে আহসান আলীর বিরুদ্ধে নামে-বেনামে কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য তুলে ধরা হয়। কিন্তু অনুসন্ধান প্রক্রিয়ায় দেখা যায়, আহসান আলী সম্পদ বিবরণীর সঙ্গে যে আয়কর নথি দাখিল করেছেন প্রতিবার কমিশন সেটিই গ্রহণ করে বিনা বাক্যে দায়মুক্তি দিয়েছে। অন্যদের যে প্রক্রিয়ায় অনুসন্ধান করা হয়Ñ আহসান আলীর ক্ষেত্রে সেই প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হয়নি। ফলে অনুদঘাটিতই থেকে যায় তার সম্পদ-সা¤্রাজ্য।
সূত্রমতে, ২০১৫ সালে আহসান আলীর বিরুদ্ধে একটি অনুসন্ধান শুরু হয়। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, আহসান আলীর নামে-বেনামে তার রয়েছে বিপুল সম্পদ। এর মধ্যে নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকার রোড-০৫, বাড়ি নম্বর ৪৭-এ ৩ কাঠা প্লটের ওপর ৩ তলা ভবন। ২০১২ সাল থেকে ২০১৫ সালের নথিতে এ বাড়ির তথ্য উল্লেখ করেন। আয়কর নথিতে আহসান আলী এটির দাম দেখিয়েছেন ৯১ লাখ টাকা। কমিশন সেটিই মেনে নিয়েছে। আহসান আলী তার আয়কর নথিতে ১ কোটি ২ লাখ ৭৭ হাজার টাকার সম্পদ রয়েছে বলে দাবি করেন। এর মধ্যে ৫০ লাখ টাকা ব্যাংক ঋণ। মোট আয়ের উৎস মিলেছে ১ কোটি ১৫ লাখ ৭৭,১৫০ টাকা। কমিশন বিনা প্রশ্নে সেটিই মেনে নেয়।
দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীর তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের ক্ষেত্রে যেভাবে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং ভূমি অফিস থেকে রেকর্ডপত্র চাওয়া হয়-আহসান আলীর জন্য তেমন তথ্য চাওয়া হয়নি। অন্যদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে যেভাবে তলবি নোটিস দেয়া হয়, সংবাদ মাধ্যমে প্রচার করা হয় আহসান আলীর ক্ষেত্রে তেমনটি ঘটেনি। ফলে অনেকটা গোপনেই একাধিকবার দায়মুক্তি দেয়া হয় তাকে। সর্বশেষ ২০১৬ সালে তাকে দায়মুক্তি প্রদানের সুপারিশ করে কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
দুদকের বিশেষ অনুসন্ধান-তদন্ত-১ এর তৎকালীন উপ-পরিচালক (বর্তমানে পরিচালক) ঋত্বিক সাহা, তৎকালীন পরিচালক (বিশেষ অনুসন্ধান ও তদন্ত-১) পরিচালক (বর্তমানে অবসর-পূর্ব ছুটি ভোগরত) এ কে এম জায়েদ হোসেন খান আহসান আলীর অনুসন্ধান প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। অনুসন্ধান করেন তৎকালীন উপ-পরিচালক (বর্তমানে পরিচালক) মো. জুলফিকার আলী। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংস্থার একজন পরিচালক জানান, আহসান আলীকে নিয়ে দুদক বিব্রত। প্রতিষ্ঠানের গ্রহণযোগ্য এবং সুনাম প্রশ্নবিদ্ধ করছে। এ কারণে তার সম্পদের অনুসন্ধানের ফাইলটি নতুন করে চালু করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার বেলাল হোসাইন চৌধুরীর বিরুদ্ধে শত শত কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানে নামে দুদক। পরে জানা যায়, ওই কাস্টমস কর্মকর্তার কাছে দুদকের হবু মহাপরিচালক পরিচয় দিয়ে ৩১টি চালানের শুল্ক ফাঁকির তদবির করতে গিয়েছিলেন আহসান আলী। সেটিতে ব্যর্থ হয়ে আহসান আলী একের পর এক বেলাল হোসাইন চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুদকসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে অভিযোগ দায়ের করেন। তারই করা একটি বেনামী অভিযোগ নিয়ে দুদক বেলাল হোসাইনের বিরুদ্ধে ৯ মাস অনুসন্ধান চালায়। চলতি বছর ২৪ জুলাই ভায়াগ্রা আটকের পর তার পেছনে আহসান আলী লেগেছেন বলে অভিযোগ তোলেন বেলাল হোসাইন। ৯ মাস ধরে দুদকের যশোর বিভাগীয় কার্যালয় বেলালের বিষয়ে অনুসন্ধান চালায়। একই অভিযোগের তদন্ত করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ১৫টি অভিযোগের একটিও প্রমাণ হয়নি কোনো তদন্তে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।