Inqilab Logo

শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রশাসনের কেউ না কেউ জড়িত

ক্যাসিনো কেলেঙ্কারি নিয়ে অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

চলমান ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান প্রসঙ্গে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, প্রশাসন জানে না এমন কোনো কাজ বাংলাদেশে হতে পারে না। এর সঙ্গে কেউ না কেউ কোনো না কোনোভাবে জড়িত থাকতে পারে। তাদের যে রেসপনসিবিলিটি তা অ্যাবজর্ব (হজম) করতে পারবে না। সেখান থেকে তারা কেউ বেরিয়ে আসতে পারে না। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে নিরাপদ সড়ক বিষয়ে এক সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বিশ্ব ব্যাংক ও জাতিসংঘের যৌথ উদ্যোগে এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়। আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ক্যাসিনোতে অভিযান চালানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলার পরই এ অভিযান, ক্যাসিনোর এই ট্রেডিশনটা আদৌ গ্রহণযোগ্য নয়। আমার বিশ্বাস, আমরা যে এখানে মিটিং করছি, এটাও প্রশাসন জানে। এজন্য ওটাও (ক্যাসিনো) প্রশাসনের জানা উচিত ছিল। তারা যদি না জেনে থাকে, তাহলে তারা অবশ্যই এক্সপ্লেইন (ব্যক্ষা) করবেন।

আয়োজিত অনুষ্ঠানের বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আগামী দশকের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনা হবে। আমরা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে বদ্ধপরিকর। আমরা নিশ্চিত যে বাংলাদেশের সকল নাগরিকের আন্তরিক সহযোগিতা এবং সমন্বয়ের ফলে নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জনে সফল হব। এর আগে অনুষ্ঠানে ঢাকার সড়ক নিরাপদ করার সমাধানের লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংক ও জাতিসংঘ যৌথভাবে ‘রোড সেফটি চ্যাম্পিয়নস’ নামের একটি ভিডিও প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করে।

অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাংক দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টউইগ শেফার বলেন, শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশকে অবশ্যই সড়ক নিরাপত্তা উন্নয়নে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে।

শেফার বলেন, বিপুল পরিমাণ মানুষের ক্ষতি ছাড়াও রাস্তার দুর্বল সুরক্ষা একটি দেশের প্রবৃদ্ধি এবং বিকাশকে হ্রাস করতে পারে। তবে সড়ক দুর্ঘটনাগুলো বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রতিরোধযোগ্য এবং কাজের সময় এখনই। বাংলাদেশের সড়ক নিরাপত্তা উন্নয়নে বিশ্বব্যাংক এবং জাতিসংঘ একযোগে সহযোগিতা প্রদানের জন্য প্রস্তুত।

অনুষ্ঠানে বলা হয়, সড়ক নিরাপত্তা সংকট, ম্যালেরিয়া, য²া অথবা এইচআইভি এর মতো রোগের সঙ্গে তুলনাযোগ্য যা বিশ্বব্যাপী মহামারি আকার ধারণ করেছে। সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতি বছর বিশ্বের প্রায় ১ দশমিক ৩৫ মিলিয়ন মানুষ মারা যায়। আনুমানিক এক-চতুর্থাংশ বেশি ঘটে দক্ষিণ এশিয়ায়। বাংলাদেশের সড়ক দুর্ঘটনা পরিস্থিতিও উদ্বেগজনক। গত দুই দশকে দক্ষিণ এশিয়ার তুলনায় মাথাপিছু দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর হার বেড়েছে গড়ে তিনগুণ। জাতিসংঘ মহাসচিবের সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক বিশেষ দূত জন টড বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা বাংলাদেশের ৫ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশু মৃত্যুর চতুর্থ প্রধান কারণ এবং ৬৭ শতাংশ ভুক্তভোগী ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী। অকাল মৃত্যু ও আহতের অর্থনৈতিক ও মানব মূল্য অপরিসীম। তবে আমরা বাংলাদেশ সরকারের প্রতিশ্রুতির মধ্যে অপার সম্ভাবনা দেখছি এবং উন্নততর সড়ক নিরাপত্তার জন্য একসঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় রয়েছি। বিশ্বব্যাংক দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টউইগ শেফার জাতিসংঘ মহাসচিবের সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক বিশেষ দূত জন টড এর সঙ্গে যৌথভাবে দুদিনের সফরে আসেন। গতকাল ছিল বাংলাদেশ সফরের সমাপ্তির দিন। সফর শেষ করার আগে তারা ‘সকলের জন্য সড়ক নিরাপত্তা’ বিষয়ক সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন। এই সফর কালীন সময় শেফার ও টড অর্থমন্ত্রী, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, স্বাধীনতা পরবর্তী প্রথম উন্নয়ন সহযোগীদের মধ্যে একটি হলো বিশ্বব্যাংক, যে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশকে সহায়তা প্রদান করছে। এর পর থেকে বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশে ৩৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি অনুদান, সুদমুক্ত ও রেয়াতের ঋণ এর প্রতিশ্রুতি প্রদান করছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অর্থমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ