পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রামে বিতর্কিত যুবলীগ নেতা শীর্ষ সন্ত্রাসী নুর মোস্তফা টিনু গ্রেফতার হওয়ার পর তার ক্যাডার বাহিনীর সদস্যরা গা ঢাকা দিয়েছে। হাওয়া হয়ে গেছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরাও। র্যাব-পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন টিনুর সন্ত্রাসী বাহিনীতে কিশোরের সংখ্যা দুই শতাধিক। তাদের মধ্যে বখাটেদের পাশাপাশি বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীও রয়েছে।
এসব কিশোর দিয়ে নিয়মিত চাঁদাবাজি করাতো টিনু। এই খাতে তার মাসিক আয় ছিলো অর্ধকোটি টাকার বেশি। কিশোরদের সহজে বিপথগামী করত। আধিপত্য বিস্তারে চট্টগ্রাম কলেজ, মহসিন কলেজ ও আশপাশের এলাকায় দাঙ্গা-হাঙ্গামায়ও ব্যবহার করা হতো কিশোরদের। নগরীর চকবাজার এলাকায় বিভিন্ন দোকান পাট, ব্যবসা-বাণিজ্য কেন্দ্র ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কোচিং সেন্টার থেকে শুরু করে বিভিন্ন বহুতল ভবন, গণপরিবহন এমনকি ফুটপাতের ক্ষুদে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও তার বাহিনীর সদস্যরা নিয়মিত চাঁদা আদায় করতো। প্রতিদিন সন্ধায় ওই টাকা জমা দেয়া হতো টিনুর বাসায়।
তার বাহিনীর কিছু সদস্য মাদকের ব্যবসা করতো। কেউ আবার মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করতো। ছিনতাই, ঝাপটাবাজিতেও জড়িত ছিলো অনেকে। বেশ কয়েকটি বড় ছিনতাইয়ের ঘটনায় তার ছোট ভাইসহ অনেক ক্যাডার বিভিন্ন সময়ে পুলিশের হাতে ধরাও পড়ে। র্যাবের হাতে টিনু গ্রেফতার হওয়ায় চকবাজার এলাকার ব্যবসায়ী, কোচিং সেন্টার মালিক থেকে শুরু বাড়ির মালিকেরা খুশি। তবে সে কবে ছাড়া পেয়ে আবার নতুন উদ্যোমে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি শুরু করে তা নিয়েও উদ্বিগ্ন অনেকে। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, থানা পুলিশের সাথে টিনুর সুসম্পর্ক রয়েছে। এ কারণে তার অপকর্ম জানার পরও পুলিশ তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি।
রোববার গভীর রাতে নগরীর বাদুরতলার বাসা থেকে যুবলীগ ক্যাডার টিনুকে পাকড়াও করে র্যাব। এ সময় তার বাড়ি ঘেরাও করে অভিযান চালিয়ে সহযোগী জসিম উদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধার করা হয় পাঁচ রাউন্ড গুলিসহ একটি বিদেশি পিস্তল এবং ৬৭ রাউন্ট গুলিসহ শর্টগান। সোমবার বিকেলে তাকে পাঁচলাইশ থানায় সোপর্দ করে র্যাব। টিনু ও সহযোগী জসিমের বিরুদ্ধে থানায় অস্ত্র আইনে মামলা হয়। এসব মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে ওইদিন বিকেলে আদালতে আবেদন করা হয়। আদালত আবেদনের শুনানির জন্য আগামীকাল বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করে তাদের কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ টিনুর কাছ থেকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপকর্মের অনেক তথ্য পেয়েছে। পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, গত এক যুগ ধরে চকবাজার এলাকায় বেপরোয়া চাঁদাবাজি করে আসছে টিনু ও তার বাহিনীর কয়েকশ সদস্য। নতুন ভবন নির্মাণ থেকে শুরু করে ধনাঢ্য ব্যবসায়ী, বাড়ির মালিকরা ছিল তার টার্গেট। তাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের চাঁদা আদায় করত সে। চকবাজার, বহদ্দারহাট থেকে শুরু করে নগরীর একাংশে বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী প্রতিটি গণপরিবহন থেকে দৈনিক ভিত্তিতে চাঁদা তুলত তার বাহিনীর সদস্যরা। রিমান্ডে এনে এসব বিষয়ে তাকে আরও বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
২০০৩ সালে একটি একে-২২ রাইফেল, ১টি ম্যাগাজিনসহ ডিবির হাতে ধরা পড়ে টিনু। এ ছাড়া ২০১২ সালে চাঁন্দগাও থানায় তার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে মামলা হয়। ২০১৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি কাতালগঞ্জে এক ব্যবসায়ীর ৫ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের মামলায় পাঁচলাইশ থানা-পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন টিনুর ছোট ভাই শিপু। গত বছরের ১২ অক্টোবর মুরাদপুরে ব্যাংক থেকে ৬ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনার সঙ্গেও টিনুর বাহিনী জড়িত বলে অভিযোগ আছে। এ ছাড়া চাঁদার দাবিতে কাপাসগোলা সড়কে তেলিপট্টি মোড়ে আলিফ প্লাজা-৩ এ ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় টিনু বাহিনী। আলিফ প্লাজা-২ নামের ভবনেও চাঁদা না পেয়ে হামলা চালিয়ে মার্কেটে তালা ঝুলিয়ে দেয় তারা। এ ঘটনায়ও টিনুকে আসামি করে মামলা করেন মার্কেটের মালিক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।