পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে ৬ষ্ঠ দিনের মতো আন্দোলন করেছে শিক্ষার্থীরা। গতকাল ভিসি বিরোধী স্লোগানে প্রতিবাদ মুখর ছিল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। ভিসির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও কেলেঙ্কারি নিয়ে গান, কবিতা, ছড়া পরিবেশন করা হচ্ছে আমরণ অনশন মঞ্চে।
স্লোগান দিতে দিতে কৃষি বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী সীমান্ত মালাকার অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। ভিসির পদত্যাগই একমাত্র সমাধান জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, আমাদের এক দফা এক দাবি দুর্নীতিগ্রস্ত এই ভিসির পদত্যাগ। গতকাল ক্যাম্পাসের একাডেমিক ভবনের সামনে আমরণ অনশন মঞ্চে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এমএসসি গণিত বিভাগের ছাত্র মো. আল গালিব।
লিখিত বক্তব্যে মো. আল গালিব বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধু প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা এক স্বৈরাচারী ভিসির বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি, যার নৈতিক স্খলন চরম পর্যায়ে। আমরা তার বন্দি জিঞ্জির থেকে মুক্ত হওয়ার আন্দোলন করছি। তিনি আরও বলেন, অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বৈরাচারী কায়দায় ভিসি খোন্দকার নাসির উদ্দিন মুক্তমনা শিক্ষক ও সমস্ত শিক্ষার্থীকে দমিয়ে রেখে শিক্ষার পরিবেশ কলুষিত করে যাচ্ছেন। এ কারণে অন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমরা প্রতিনিয়ত পিছিয়ে পড়ছি।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা জানেন, গত পাঁচ দিন ধরে বিনা বিরতিতে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে যাচ্ছি। এতে সংহতি প্রকাশ করেছে সব বিশ্ববিদ্যালয়সহ বুদ্ধিজীবী ও সুশীল সমাজ। এই আন্দোলনে বিঘ্ন ঘটাতে আমাদের ওপর নির্যাতন ও হামলা চালানো হয়েছে। আমাদের কোণঠাসা করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন দমিয়ে রাখা যাবে না। ভিসি পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। এ সময় আইন বিভাগের ছাত্র শফিকুল ইসলাম, আব্দুলাহ আল রাফি, নাহিদ মোল্লা, লোকপ্রশাসন বিভাগের ছাত্রী রেহেনুমা তাবাসসুমসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতদের হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে পদত্যাগ করা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মো. হুমায়ুন কবীর জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সোমবার রাতে গোপালগঞ্জ সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। এতে আন্দোলনে নতুন মোড় নিয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এ ঘটনারও বিচার দাবি করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ছাত্র ইমতিয়াজ আহম্মেদ শাফিন বলেন, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল না বানিয়ে, টাকা আত্মসাত করে ভিসি আমাদের ক্যাম্পাসকে কলঙ্কিত করেছে। তিনি নিয়োগ ও ভর্তি বাণিজ্য করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপর্যয় ডেকে এনেছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বা প্রেসিডেন্টের আদেশ ছাড়া আমরা আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়াবো না।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিন বলেন, আমার শিক্ষার্থীরা আমার কাছে সন্তানতুল্য। তাদের সাথে আমাদের মান অভিমান থাকতে পারে। তাই তারা দাবি দাওয়া নিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছে। তাদের ১৪ দাবি অনেক আগেই মেনে নেয়া হয়েছে। তারা এক সময় আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেবে। তবে শিক্ষার্থীদের হুমকি দেয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।
পদত্যাগী সহকারী প্রক্টরের মিথ্যাচারের প্রতিবাদ প্রক্টরিয়াল টিমের:
বশেমুরবিপ্রবির পদত্যাগী সহকারী প্রক্টর হুমায়ুন কবীরের মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে প্রক্টরিয়াল টিম। সোমবার প্রক্টরিয়াল টিম প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিবাদ জানায়।
এতে বলা হয়েছে, স্বনামধন্য একটি পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ থেকে আমরা জানতে পেরেছি যে, মো. হুমায়ুন কবীর (প্রভাষক, সমাজ বিজ্ঞান বিভাগ, বশেমুরবিপ্রবি) আমাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের প্রশাসনের বিরুদ্ধে উসকে দেবার জন্য অনবরত বিভিন্ন রকম মিথ্যাচারের আশ্রয় নিচ্ছেন। সেই অনলাইন সংস্করণে হুমায়ুন কবীর প্রশাসনের যে মিটিংয়ের কথা উল্লেখ করেছেন তা সম্পূর্ণ বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এ ধরনের কোনো মিটিং বা সিদ্ধান্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে হয়নি। এছাড়া গত কয়েক মাস ধরে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য হিসেবে তিনি মিটিংয়ে অনুপস্থিত থেকেছেন এবং বিভিন্ন দায়িত্ব পালন থেকে বিরত ছিলেন। এর কারণ প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, তার যে আকাক্সক্ষা ছিল, সেটা উপাচার্য মহোদয় পূরণ করেননি, তাই তিনি দায়িত্ব পালনে অনিচ্ছুক। সেসব কথার প্রমাণ আমাদের কাছে আছে।
এ ব্যাপারে সহকারী প্রক্টর হুমায়ুন কবীর বলেন, পদত্যাগ করার পর থেকে আমি ভিসি পন্থি শিক্ষকদের হুমকির মধ্যে আছি। কয়েকজন শিক্ষক আমাকে মোবাইলে ফোন করে গালিগালাজ করেছেন। তাই নৈতিকভাবে আমাকে ছোট করার জন্য প্রক্টরিয়াল টিম এ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন। কারণ ওই টিমের সব সদস্যই ভিসি সমর্থক শিক্ষক। আমি ভিসি ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে যা বলেছি তা শতভাগ সত্য।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. মো. বশির উদ্দীন বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার সাথে ভিসি ও প্রশাসন জড়িত বলে হুমায়ুন কবীর বক্তব্য দিয়েছে। এ নিয়ে আমি কোন মন্তব্য করতে চাই না। পদত্যাগী সহকারী প্রক্টর এ বিষয়ে যদি কোন প্রমাণ দেখাতে পারে তবে, আমি পদত্যাগ করবো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।