Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিচারকদের জন্য ফেসবুক ব্যবহার নীতিমালা জারি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

বিচারকদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘ফেসবুক’ ব্যবহারের নীতিমালা জারি করেছেন সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসন। গতকাল রোববার সুপ্রিমকোর্ট রেজিস্ট্রার জেনারেল ড. মো. জাকির হোসেনের স্বাক্ষরে এ নীতিমালা জারি করা হয়।

নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়, বর্তমান বাংলাদেশ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যাপক উন্নয়নের সুযোগে ইন্টারনেটভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের মাত্রা অতীতের তুলনায় অনেক বেড়েছে। এ প্রযুক্তির মাধ্যমে কম্পিউটার, স্মার্টফোন এবং অনুরূপ যে কোনো ডিভাইসের মাধ্যমে যেকোনো ব্যক্তির তথ্য, ছবি, অডিও ও ভিডিও আপলোড করা যায়। অতিমাত্রায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ফলে এক ধরনের আসক্তি তৈরি হয় - যা ব্যক্তি ও পেশাগত জীবনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এর প্রেক্ষিতে সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ‘সকল সরকারি কর্মচারীদের জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার সংক্রান্ত নির্দেশিকা ২০১৬’ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে কোনো নীতিমালা বা নির্দেশিকা নেয়া হয়নি। এ অবস্থা ‘সুপ্রিমকোর্ট স্পেশাল কমিটি ফর জুডিশিয়াল রি-ফরম’-এর সুপারিশক্রমে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে একটি অনুসরণীয় নির্দেশনা সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছে।

বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে নিম্নের বিষয়গুলো পরিহার করতে হবে। (ক) জাতীয় ঐক্য ও চেতনার পরিপন্থী কোনো প্রকার তথ্য, মন্তব্য ও অনুভ‚তি প্রকাশ ও প্রচার। (খ) কোনো স¤প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভ‚তিতে আঘাত লাগতে পারে এমন কোনো তথ্য, মন্তব্য বা অনুভ‚তি প্রকাশ ও প্রচার। (গ) রাজনৈতিক মতাদর্শ বা আলোচনা সংশ্লিষ্ট কোনো তথ্য, মন্তব্য বা অনুভ‚তি প্রকাশ ও প্রচার। (ঘ) কোনো স¤প্রদায়ের প্রতি বৈষম্যমূলক বা হেয় প্রতিপন্নমূলক কোনো তথ্য, মন্তব্য বা অনুভ‚তি প্রকাশ ও প্রচার। (ঙ) কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা রাষ্ট্রকে হেয়প্রতিপন্ন করে এমন কোনো তথ্য, মন্তব্য বা অনুভ‚তি প্রকাশ ও প্রচার। (চ) লিঙ্গ বৈষম্যমূলক কোনো তথ্য, মন্তব্য বা অনুভ‚তি প্রকাশ ও প্রচার (ছ) জনমনে অসন্তোষ ও অপ্রীতিকর মনোভব সৃষ্টি করতে পারে এমন কোনো তথ্য, মন্তব্য বা অনুভ‚তি প্রচার ও প্রকাশ। (জ ) কোনো মামলা সংক্রান্তে বিরূপ মন্তব্য বা ব্যক্তিগত অনুভ‚তি প্রকাশ বা প্রচার। (ঝ) নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ বা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কোনো সিদ্ধান্তের বিষয়ে কোনো বিরূপ মন্তব্য বা ব্যক্তিগত অনুভ‚তি প্রকাশ বা প্রচার। (ঞ) বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের মাননীয় বিচারপতিদের ছবি বা ভিডিও ক্লিপ প্রকার ও প্রচার। (ট) অপ্রাসঙ্গিক, অপ্রয়োজনীয়, মানহানিকর এবং নৈতিকতা পরিপন্থি কোনো স্ট্যাটাস, পোস্ট, লিংক, ছবি ইত্যাদিতে অন্যজনকে সংযুক্তরণ (ট্যাগিং), আদান- প্রদান (শেয়ারিং), প্রকাশ ও প্রচার। নীতিমালায় কিছু অনুসরণীয় বিষয়ও উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন : (ক) প্রকাশিতব্য লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও ইত্যাদি নির্বাচন ও বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। (খ) প্রকাশিত তথ্য-উপাত্তের যথার্থতা ও নির্ভরযোগ্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে। (গ) ব্যক্তিগত ও পারিবারিক তথ্য আদান-প্রদান প্রকাশ ও প্রচারের ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতা এবং বিচারকসুলভ মনোভব অবলম্বন করতে হবে। (ঘ) অপ্রয়োজনীয় বা গুরুত্বহীন বিষয়ে তথ্য, স্ট্যাটাস বা পোস্ট দেয়া যাবে না। (ঙ) বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের জন্য একটি পোর্টাল/গ্রæপ থাকতে পারে, যেখানে বিচারাধীন মামলার বিষয় এবং ব্যক্তিগত বিষয় ব্যতীত কেবল আইনগত বিষয়ে একাডেমিক আলোচনা ও তথ্য আদান-প্রদান করা যাবে। (চ) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল ও বিচারকসুলভ আচরণ করতে হবে এবং রাষ্ট্রীয় অনুশাসন মেনে চলতে হবে। (ছ) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো তথ্য আদান-প্রদান ও বন্ধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। নিজ কর্মক্ষেত্রে মামলার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বা মামলা পরিচালনার সঙ্গে জড়িত কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করা যাবে না। (জ) বাস্তব ও স্বাভাবিক অবস্থায় সহকর্মীদের সাথে মিথস্ক্রিয়া সংক্রান্ত নিয়ম-নীতি, করণীয় ও বর্জনীয় দিকসমূহের প্রতিফলন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও নিশ্চিত করতে হবে।



 

Show all comments
  • Yourchoice51 ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ২:০৯ এএম says : 0
    দারুন নীতিমালা! সব বিচারকদের এই নীতিমালা হিফজ করা বাধতামূলক করা হয়েছি কি?
    Total Reply(0) Reply
  • সুলাইমান ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১০:০৪ এএম says : 0
    দৈনিক সর্বোচ্চ কতটা সময় তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করতে পারবে, তা যদি নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা থাকত,তাহলে কতইনা সুন্দর হতো!
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ