পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মদ, জুয়া ব্যক্তিকে ধ্বংস করে, পরিবারকে ধ্বংস করে, সমাজকে ধ্বংস করে এবং রাষ্ট্রকে বিকলাঙ্গ করে। কাজেই এর মারণ ছোবল থেকে যুব সমাজসহ সকলকে মুক্ত করতেই হবে। এ কাজ শুরু করে সরকার একটি প্রশংসনীয় দায়িত্ব পালন করছে। গতকাল রাজধানীসহ সারা দেশের অধিকাংশ মসজিদের খুৎবাপূর্ব বয়ানে উঠে আসে এসব বিষয়। যুগোপযোগী খুৎবা দেয়ায় মুসল্লিরাও এসব বয়ান শুনেছেন গভীর মনোযোগে।
বয়ানে খতীবগণ বলেন, নবী করিম (সা.)-এর আগমনের সময় মক্কায় নানা ধরনের জুয়ার প্রচলন ছিল। বর্তমানে প্রাচীন পদ্ধতি ছাড়াও জুয়ার ক্ষেত্রে আরো বহু নতুন নতুন পদ্ধতি আবিষ্কৃত হয়েছে। যেমন হাউজি, টাকা বাজি রেখে ঘোড়দৌড় ও তাস খেলা ইত্যাদি। এগুলো সবই হারাম। নাম পরিবর্তনের কারণে বস্তুর মূল প্রকৃতি এবং হুকুম পরিবর্তন হয় না। কাজেই প্রাচীনকালে প্রচলিত জুয়া সম্পর্কে যে হুকুম প্রযোজ্য ছিল, আধুনিক কালের জুয়ার ক্ষেত্রেও সেসব হুকুম প্রযোজ্য। ইসলাম ধর্মে জুয়া হারাম। একাধিক আয়াত ও হাদিস শরীফে এ সম্পর্কে স্পষ্ট বিবরণ রয়েছে।
মাদকের কুফল বর্ণনা করতে গিয়ে খতীবগণ বলেন, মাদকের কারণে খোদ রাজধানীতেই সস্ত্রীক একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে খুন করে তাদেরই একমাত্র মেয়ে। পবিত্র কুরআনের আয়াত উদ্ধৃত করে খতীবগণ বয়ানে বলেন, আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেছেন, ‘হে মুমিনগণ! মদ, জুয়া, মূর্তি পূজার বেদি ও ভাগ্য নির্ণয়ক তীর ঘৃণিত বস্তু, শয়তানি কাজ। সুতরাং তোমরা তা বর্জন কর, যাতে তোমরা সাফল্যমন্ডিত হতে পার। মদ ও জুয়ার মাধ্যমে শয়তান তো চায় তোমাদের মাঝে শত্রুতা আর বিদ্বেষ সৃষ্টি করতে, আল্লাহর স্মরণ ও নামাজ থেকে তোমাদের বাধা দিতে। কাজেই তোমরা কি এসব থেকে বিরত থাকবে?’ -সূরা মায়িদা: ৯০-৯১
খতীবগণ বয়ানে বলেন, আয়াতে মদ ও জুয়াকে ঘৃণ্য বস্তু আখ্যায়িত করা হয়েছে। এগুলোকে শয়তানের কাজ বলা হয়েছে। আয়াতে এগুলো থেকে দূরে থাকার হুকুম করা হয়েছে। মাদক ও জুয়ার মাধ্যমে পরষ্পরের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি হয়। অধিকন্তু এর দ্বারা শয়তান মানুষকে নামাজ আদায় করা এবং আল্লাহর স্মরণ থেকে বিমুখ রাখে। কাজেই মদের ন্যায় জুয়াও হারাম। এর হারাম হওয়ার বিষয়টি কুরআনের অকাট্য দলীল দ্বারা প্রমাণিত।
গত বুধবার থেকে রাজধানীতে ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে এবং এরও আগে কিশোর গ্যংয়ের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্টদের অভিনন্দন জানিয়ে বক্তাগণ বলেন, কিশোররা আগামী দিনে যুবক তথা দেশের প্রাণশক্তি হবে। তারাই সমাজ পরিচালনা করবে। আর বর্তমানের যুবশক্তি আগামী দিনে দেশের কর্ণধার হবে। এসব কিশোর ও যুবকরা যদি অধঃপতনের অতল গহ্বরে নিমজ্জিত হয় তবে দেশ ভাল থাকতে পারে না, সমাজ ভাল থাকতে পারে না, পরিবার ভাল থাকতে পারে না, এমনকি এসব কিশোর-যুবকরাও ভাল থাকতে পারে না।
খতীবগণ আরো বলেন, পত্রিকার পাতা ওল্টালেই মাদকের ভয়াবহ বিস্তারের কথা দেখা যায়। নানা ধরনের মাদক সমাজকে কুরে কুরে খাচ্ছে। যুবকদের প্রাণশক্তি নিঃশ্বেষ হয়ে যাচ্ছে। মাদক গ্রহণের ফলে পরিবারের সাথে যুবকদের সুসম্পর্ক থাকে না, সমাজে একঘরে হয়ে যায়। মাদকের অর্থ যোগাতে পরিবারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে, এমনকি পিতামাতাকে নির্যাতন ও হত্যার ভুরিভুরি প্রমাণ আমাদের সামনে বিদ্যমান।
খৎবাপূর্ব বয়ানে সমাজ সংস্কারে ধর্মীয় অনুশাসনের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, পিতামাতার হত্যাকারী একটি মেয়েকে সুপথে আনার জন্য সংশোধন কেন্দ্রসহ বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। অবশেষে তাকে ধর্মীয় অনুশাসনের আওতায় আনা হলে তার মধ্যে পরিবর্তন আসে। এসব কথা জানা গেছে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে। কাজেই সব মাদকসেবী ও জুয়াড়ীকে সুপথে আনার জন্য ইসলামী অনুশাসনের আওতায় আনার বিকল্প নেই বলে খতীবগণ বয়ানে উল্লেখ করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।