পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নোয়াখালী জেলা শহর থেকে শুরু করে বিভিন্ন উপজেলা এমনকি ইউনিয়নেও এক শ্রেণির উঠতি তরুণ ও কিশোরের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পেয়েছে। চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও মাদক বিক্রিতে জড়িয়ে পড়ছে এসব কিশোররা। এর জন্য পরিবারের উদাসীনতা দায়ী হলেও অনেক অভিভাবক উশৃঙ্খল সন্তানদের ভয়ে এখন রীতিমত নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
বিশেষ করে ১৩ বছর থেকে ১৮/২০ বছর বয়সীরা অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে বেশি। হাটবাজার, সুপার মার্কেট, বাস ও রেলস্টেশন, প্রতিটি পাড়া মহল্লায় এদের অবাধ বিচরণ লক্ষনীয়। এসব কিশোর অপরাধীর মুখে ‘বড় ভাই’ এর নাম শোনা যায়। বিপদ আপদে এরা বড় ভাইয়ের নাম ব্যবহার করে থাকে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব বড় ভাইদের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক পরিচিতি রয়েছে। ফলে অপরাধ করেও এরা সহজে পার পেয়ে যাচ্ছে। নোয়াখালী জেলা শহরে মেহেদী হাসান শাওন ও আনোয়ার হোসেন হৃদয়ের নেতৃত্বে ১৫/২০ জনের সদস্যের ভয়ঙ্কর কিশোর মামা গ্রুপ তৎপর রয়েছে। এ গ্রুপের কাজ হচ্ছে, কেনাকাটা করতে আসা নবদম্পতি, গৃহিনীকে ইভটিজিংয়ের ফাঁদে ফেলে টাকা পয়সা, স্বর্ণালংকার, মোবাইল হাতিয়ে নেয়া এবং সুযোগ বুঝে চাঁদাবাজি করা।
গত মঙ্গলবার দুপুরে মেহেদী হাসান শাওন ও আনোয়ার হোসেন হৃদয়ের নেতৃত্বে ৬/৭ জন যুবক হাতিয়া উপজেলার ভ‚মিহীন বাজারে মো. জাফরকে হঠাৎ মারধর ও এক পর্যায়ে তাকে পাশের একটি হোটেলে নিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে। এ সময় জাফরের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে সন্ত্রাসী অপরাধী শাওন ও হৃদয়কে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। একইদিন বিকালে আটককৃত দুইজনের নাম উল্লেখ করে ৪/৫জনের বিরুদ্ধে সুধারাম থানায় দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত দুই বছর র্যাব পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে মাদকদ্রব্যসহ ৫০ জনকে আটক এবং ও অস্ত্রশস্ত্রসহ ১০ জনকে আটক করে। আটককৃতদের অধিকাংশের বসয় ১৮ থেকে ২০ বছর। অপরদিকে ইভটিজিং ঘটনায় আটককৃতের ১২ জনই কিশোর বয়সের। এরা সকাল বিকাল সন্ধায় ৪/৫ দলবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করে।
পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা দীর্ঘদিন যাবত জেলা শহরে ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মহিলাদের উত্যক্ত করে আসছে। এ ছাড়া পুরো জেলা জুড়ে একটি শক্তিশালী হোন্ডা চোর চক্র সক্রিয় রয়েছে। গত দুই বছরে জেলা শহর ও আবাসিক এলাকা থেকে শতাধিক হোন্ডা চুরি হয়। কিন্তু পুলিশ একটি হোন্ডাও উদ্ধার কিংবা হোন্ডা চোর চক্রের কাউকে আটক করতে পারেনি। ফলে হাট বাজারে কেনাকাটা করতে আসা হোন্ডা চালকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
সরজমিনে কয়েকটি উপজেলা পর্যবেক্ষন করে দেখা গেছে, মেঘনাবেষ্টিত হাতিয়া উপজেলা, সূবর্ণচর, কবিরহাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার গ্রামাঞ্চলে যাত্রীবাহী কয়েক হাজার হোন্ডা রয়েছে। স্থানীয় ভাষায় এগুলোকে ‘টানা হোন্ডা’ বলে। এগুলোর বৈধ কোন কাগজপত্র নেই। নোয়াখালীর প্রতিটি উপজেলায় মদ, গাঁজা, হেরোইন, ইয়াবা বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে পুলিশ ও র্যাব দীর্ঘদিন ধরে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে। পুলিশ ও র্যাবের হাতে মাদকদ্রব্যসহ আটককৃতদের অধিকাংশ কিশোর ও যুবক বয়সের। পাচারকারীরা এসব কিশোর যুবককে ব্যবহার করছে। নোয়াখালীতে গত এক বছর ৫০টি ইভটিজিংয়ের ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে বিভিন্ন উপজেলা থেকে পুলিশ ২৫ জনকে আটক করেছে। লক্ষনীয় যে, আটককৃতদের সবাই কিশোর। এ অঞ্চলে কিশোর যুবক বিপদগামী হবার জন্য অভিভাবকদের দায়ী করছে অনেকে। কিশোর ও উঠতি বয়সের সন্তানের বিষয়ে অনেক পরিবারের উদাসীতার সুযোগে এরা অপরাধীচক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ৪/৫ জনের ছোট ছোট দল জেলা শহরের বিভিন্ন স্পটে অবস্থান করে থাকে।
এরমধ্যে রাতের বেলায় জেলার বাহির থেকে আগত বাস যাত্রীদের গতিরোধ করে সর্বস্ব ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। নোয়াখালী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সন্মুখে অবস্থিত নোয়াখালী পৌর পার্কে স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের আড্ডাস্থল ছিল। প্রতিদিন স্কুল কলেজ ফাঁকি দিয়ে ছেলে-মেয়েরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা পৌরপার্কে আড্ডা দেয়। পরে অভিভাবকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করায় এখন দৃশ্যপট পাল্টেছে।
নোয়াখালী পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, নোয়াখালী জেলা শহরের কিশোর গ্যাং, বাহিনী কিংবা কোন অপরাধীর স্থান নেই। যে অপরাধ করবে তাকে তাৎক্ষনিকভাবে আটক করে আইনের আওতায় আনা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।