Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

এডিবির অর্থায়নে ৬ লেন হচ্ছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক

নতুন সড়ক যুগে প্রবেশ করছে সিলেট

ফয়সাল আমীন | প্রকাশের সময় : ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

অবশেষে নতুন সড়ক যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে সিলেট। এডিবির অর্থায়নে ৬ লেন হচ্ছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক। বুধবার সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদ কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতকালে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ অর্থ ছাড়ের বিষয়টি জানান। প্রধানমন্ত্রী সড়ক উন্নতির উপর আগ্রহ দেখিয়েছেন এবং দ্রুত প্রাথমিক কাজ শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন।

গণচীনের অর্থায়নে নিকট অতীতে ৪ লেনে উন্নীত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়েছিল সর্বত্র। কিন্তু সড়ক সচিবকে ঘুষ দেওয়ার জনশ্রুতিতে যবনিকাপাত ঘটে সিলেট-ঢাকা সড়কের উন্নতি। এবার এডিবির মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মহাসড়কগুলোর প্রতিটিতে চার লেনের পাশাপাশি ধীরগতির যানবাহনের জন্য আলাদা লেন থাকবে। প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে এডিবি এ অর্থায়ন করছে বলে জানিয়েছেন মনমোহন পারকাশ। এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) ঢাকা-সিলেট ৬ লেন সড়ক কাজের অর্থ ছাড়ে সম্মতি দেয়ায় শিগগিরই ঢাকা-সিলেট ৬ লেন সড়কের কাজ শুরু হবে বলে আশা দেখা দিয়েছে। গতকাল সকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন এ তথ্য জানান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা সিলেটবাসীর জন্য একটা সুখবর। এটি বৃহত্তর সিলেট বিভাগের ইতিহাসের অন্যতম সফল মেগা রোড নেটওয়ার্ক প্রকল্প হবে। আমি বলতে চাই আমার একটি স্বপ্নপূরণ হতে চলেছে। এজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন। এই প্রজেক্টটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পায়োরিটি প্রজেক্ট। প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ হাজার ১৪০ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। চলতি সময় থেকে ডিসেম্বর ২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছে।

ড. মোমেন আরো বলেন, চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি চায়না হারবার ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার কাজটি পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছিলো। এজন্য সড়ক ও মহাসড়ক সচিব নজরুল ইসলাম খানকে ৫০ লাখ টাকা ঘুষ সাধে কোম্পানিটি। এ প্রকল্পে চীন সরকারের অর্থায়ন করার কথা। কিন্তু ঘুষ সাধার অপরাধে এই কোম্পানিকে বাতিল করেছে বাংলাদেশ সরকার। পরবর্তীতে আমরা এডিবির সাথে যোগাযোগ করলে তারা ইতিবাচক সাড়া দেয়। নতুন পরিকল্পনায় চারটি ফ্লাইওভার, ১০টি আন্ডারপাস, ৪২টি ফুটওভার ব্রিজ, তিনটি ট্রাক স্ট্যান্ড এবং দু’টি রেস্ট হাউজ থাকবে সড়কটিতে। সিলেট চা উৎপাদনে ঐতিহ্যবাহী অঞ্চল। বর্তমানে এখানে বড় বড় শিল্প-কারখানা গড়ে উঠছে। রয়েছে বেশ কয়েকটি সিমেন্ট ও সার কারখানা। সিলেটের পাথর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যায়। প্রচুর তেল ও গ্যাসের খনি রয়েছে। বিশেষত: অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির দ্বার বেগবান করতেই ঢাকা-সিলেট ৬ লেন সড়ক নির্মিত হচ্ছে এডিবির অর্থায়নে।

এ ব্যাপারে সুজন সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, হচ্ছে হবে আশাবাদের স্বপ্ন নয়। আমরা দ্রুত চাই প্রকল্পের বাস্তবায়ন। সড়ক ব্যবস্থার বেহলা দশায় বলতে গেলে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে সিলেট। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও দেশের অগ্রগতি শক্তিশালী করতে হলে সিলেটের রাজনীতিক নেতৃবৃন্দসহ শীর্ষ জনপ্রতিনিধিরা একযোগে কাজ করে সিলেটকে এগিয়ে নেয়ার মধ্যে দিয়ে দেশকে এগিয়ে নেয়া এখন সময়ের দাবি। দুনিয়া এখন হাতের মুঠোয় কিন্তু সেই বাস্তবতা বিবেচনায় সিলেট-ঢাকা যোগাযোগ ব্যবস্থা যেন কঠিন এখন হিসেবে নিকেশে পূর্ণ। ৯ ঘণ্টায় সিলেট থেকে সরাসরি সাত সমুদ্র তের নদী পার হয়ে লন্ডন যাওয়া সম্ভব হলেও সিলেট-ঢাকা দূরত্ব মাড়ানোর অনিশ্চিয়তা থেকেই যায়।



 

Show all comments
  • রফিকুল ইসলাম ২৬ নভেম্বর, ২০১৯, ৪:৪৩ পিএম says : 0
    ১০বছর লেগেগেল পরিকল্পনা আর সিদ্ধান্ত নিতেই, কবে কাজ হবে জানিনা আমরা সিলেটবাসী শুধু স্বপ্ন দেখেই গেলাম।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ