পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সংগঠনকে শক্তিশালী করতে এবং যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য সকল পর্যায়ে কাউন্সিলের মাধ্যমে তৃণমূলের প্রত্যক্ষ ভোটে নেতৃত্ব বের করতে চান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ লক্ষ্যে গত ১৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল ছাত্রদলের কাউন্সিল। কিন্তু দুই দিন আগে আকস্মিকভাবে নিম্ন আদালতের অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞায় স্থগিত হয়ে যায় পুরো প্রক্রিয়া।
এ জন্য সরকারপক্ষকে দায়ী করেছে বিএনপি নেতারা। সন্দেহের তীর রয়েছে নিজ দলের কয়েকজন নেতার দিকেও। স্থগিত হওয়া কাউন্সিল নিয়েও ছড়াচ্ছে নানা বিভ্রান্তি। ১৮ সেপ্টেম্বর কাউন্সিলের তারিখ নির্ধারণ করে গত ১৫ সেপ্টেম্বর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভুয়া বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়। পরে বিএনপি ও ছাত্রদলের সাবেক নেতাদের পক্ষ থেকে সেটিকে মিথ্যা বলে বিবৃতি দিতে হয়েছে। একই সাথে ছাড়ানো হচ্ছে কাউন্সিলের পরিবর্তে অনলাইনে ভোটগ্রহণ কিংবা ‘চুজ এন্ড পিক’ পদ্ধতিতে নেতা নির্বাচনের গুঞ্জনও।
তবে এসব গুঞ্জনকে সরাসরি নাকচ করে দিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র নেতা ও স্থগিত কাউন্সিলের নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সাথে সংশ্লিষ্ট সাবেক ছাত্রদল নেতারা। তারা জানান, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশনা হচ্ছে- কাউন্সিল ছাড়া অন্য কোনো প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব নির্বাচন হবে না। তৃণমূলের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে নতুন নেতাদের নির্বাচিত হতে হবে। এর বিকল্প কোনো চিন্তা-ভাবনা নেই।
তারেক রহমানের এই মনোভাবের বার্তা পেয়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীরাও উচ্ছ¡সিত। খুশি তৃণমূলের কাউন্সিলরাও। তারা কাউন্সিলের সুযোগ করে দেয়ার জন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ধন্যবাদ জানান।
বিএনপি ও ছাত্রদল নেতাদের সূত্রে জানা গেছে, শিগগিরই ছাত্রদলের কাউন্সিল হবে। আজ বা আগামীকালের মধ্যেই নতুন তারিখ ঘোষণা করা হবে। এ জন্য স্থগিত হওয়া ছাত্রদলের কাউন্সিল ইস্যুতে দফায় দফায় বৈঠক করছেন বিএনপি এবং ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র নেতারা। গতকালও ছাত্রদলের সাবেক নেতা এবং কাউন্সিলরদের অনেকে বৈঠক করেছেন। কাউন্সিলরদের বৈঠকে ছাত্রদলের ষষ্ঠ কাউন্সিল অনুষ্ঠানের প্রেক্ষিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নেয়া সকল সিদ্ধান্ত ও পরামর্শের প্রতি আস্থা জ্ঞাপন করা হয়। একইসাথে বিএনপির চেয়ারপারসন কিংবা তার অনুপস্থিতিতে অনুরূপ দায়িত্ব পালনরত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ছাত্রদলের সাংগঠনিক অভিভাবক হিসেবে ঘোষণা করেন এবং এ প্রস্তাবে উপস্থিত সকল কাউন্সিলর দ্ব্যর্থহীনভাবে সেটি সমর্থন করেন। তারেক রহমানের সিদ্ধান্তেই আসবে কাউন্সিলের ঘোষণা।
ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা এ বি এম মোশাররফ হোসেন বলেন, ছাত্রদলের সম্মেলন নিয়ে আমরা এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। কিভাবে সফলভাবে সম্মেলনটি করা যায় সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে ছাত্রদলের নেতা নির্বাচিত হবেন। এ নিয়ে গুজব বা বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সম্মেলনের বিষয়ে আদালতের একটি আদেশ আছে, আমরা বিষয়টি আইনি ও রাজনৈতিক উভয়ভাবে মোকাবেলা করছি। সূত্র জানায়, আজ বা আগামীকালের মধ্যে আদালত ছাত্রদলের কাউন্সিল অনুষ্ঠানের বিষয়ে আদালত যেসব নির্দেশনা দিয়েছেন সে মোতাবেক পদক্ষেপ নেবেন বিএনপির আইনজীবীরা। তাছাড়া দু-একদিনের মধ্যে কাউন্সিলের পুনরায় তারিখ ঘোষণা করা হতে পারে। এক্ষেত্রে ছাত্রদলের সাবেক নেতাদের পরিবর্তে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি পুনর্গঠন হবে।
কাউন্সিলরদের সভার সিদ্ধান্ত : কাউন্সিল পরিচালনা কমিটির উপর নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষিতে নয়াপল্টনস্থ ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আগত কাউন্সিলররা গতকাল দুপুরে এক সভায় মিলিত হন। কাউন্সিলর মিজানুর রহমান রাজ এর প্রস্তাবে সর্বসম্মতিক্রমে খন্দকার এনামুল হক এনামের সভাপতিত্বে এই সভায় বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সাংগঠনিক কার্যক্রম পর্যালোচনা করে কাউন্সিলরবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। সভায় গিয়াস উদ্দিন মানিক পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত করেন।
এরপর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের রূহের মাগফিরাত কামনা করা হয়। প্রতিষ্ঠাকালীন আহ্বায়ক কাজী আসাদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহবুল হক বাবলু ও নাসির উদ্দিন আহম্মেদ পিন্টুসহ সবার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ ও তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানো হয়। বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করা হয় এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি শাসকদলের আক্রোশের তীব্র নিন্দা জানায়।
সর্বোপরি ছাত্রদলের বৃহত্তর স্বার্থে বিভিন্ন পর্যায়ের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীদের অনুরোধ ও পরামর্শে ছাত্রদলের মেয়াদোত্তীর্ণ কেন্দ্রীয় কমিটি বাতিল করায় ছাত্রদলের অভিভাবক সংগঠন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে। ছাত্রদলকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে তারেক রহমানকে ছাত্রদলের গঠনতন্ত্রের সংশোধন, কাউন্সিল আহ্বান, কাউন্সিল মুলতবি করা, ছাত্রদলের নেতৃত্ব নির্ধারণে নির্বাচন পরিচালনা করাসহ যে কোনো সাংগঠনিক-রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণের দায়িত্ব প্রদান করে। পাশাপাশি গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত প্রহসনের নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানায়।
এদিকে ছাত্রদলের কাউন্সিলরদের বৈঠকের পর গতকাল বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বৈঠকে বসেন ছাত্রদলের সাবেক নেতারা। তাদের সাথে যুক্ত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৈঠকে কাউন্সিলররা যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেসব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। আজ বুধবারও আলোচনা হবে। এরপরই কাউন্সিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
বিএনপির প্রচার সম্পাদক ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বলেন, আমরা বৈঠকে ছাত্রদলের কাউন্সিলরদের প্রস্তাবনা বা সিদ্ধান্তগুলো নিয়েই আলোচনা করেছি। ছাত্রদলের সার্বিক অভিভাবক হচ্ছেন আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। কাউন্সিলররা সভায় সর্বসম্মতিক্রমে তাকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সার্বিক দায়িত্ব দিয়েছেন। আজ বুধবার আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে ফের বৈঠক হবে। কারণ কাউন্সিলররা দ্রæত সময়ের মধ্যে ছাত্রদলের সম্মেলন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।