পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রকল্পের পণ্য ক্রয়ে দাম নির্ধারণে ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন প্রকল্পে পণ্য ও সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে উচ্চমূল্য নির্ধারণ করায় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। এ বিষয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এ তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনেন। সভায় ৮ হাজার ৯৬৮ কোটি টাকা ব্যয়সংবলিত মোট আট প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সভায় একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভাপতিত্ব করেন। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এ বিষয়ে বিস্তারিত সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।
বৈঠক শেষে এনইসি সম্মেলন কক্ষে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, সরকার অহেতুক সমালোচিত হতে চায় না। আমরা পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবদের পণ্যের মূল্য নির্ধারণে সাবধান হতে নির্দেশনা দিয়েছি। আমাদের জানা মতে এরকম কাজ আর হবে না। তিনি জানান, প্রকল্পের যে কোনো পণ্যের দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে বাজার যাচাই করে দাম নির্ধারণ করতে হবে।
এছাড়া প্রকল্প শেষ হওয়ার আগেই তা সংশোধন প্রয়োজন হলে করতে হবে। কিন্তু শেষ হওয়ার পর যেন সংশোধনীর জন্য না আসে সে জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। রাস্তাঘাট প্রশস্ত করার ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, রাস্তার পাশে গরিব মানুষের বাড়ি ও গ্রাম যাতে ভেঙে ফেলা না হয় সে বিষয়ে বিশেষ নজর রাখতে হবে। প্রয়োজনে অ্যালাইন্টমেন্ট পরিবর্তন করে হলেও অন্যপাশ দিয়ে রাস্তা ঘুরিয়ে নিতে হবে। তারপরও বাধ্য হয়ে মানুষের ঘরবাড়ি ভাঙতে হলে তাদের উদারভাবে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ঘুরানো চলবেনা। এছাড়া ঝাড়খন্ড থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণ করা হবে, সেটি দিয়ে শুধু যে বিদ্যুৎ আমদানি হবে তা নয়, ভবিষতে হয়তো আমরা রপ্তানি করতে পারব। সরকারের প্রকল্প তদারকি সংস্থা আইএমইডিকে শক্তিশালী করারও নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া আইএমইডির বিভাগীয় অফিস স্থাপনের বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিকে বিদ্যুৎ ঘাটতি মেটাতে ভারতের ঝাড়খন্ড থেকে ১ হাজার ৪৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করবে সরকার। এজন্য ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন স্থাপন করা হবে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার রহনপুর থেকে মনাকষা সীমান্ত পর্যন্ত ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে একনেক। একই সঙ্গে ৮ হাজার ৯৬৮ কোটি টাকা ব্যয়সংবলিত মোট আট প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
এমএ মান্নান বলেন, ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যে নির্মাণাধীন ২ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র হতে ১ হাজার ৪৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হবে। এজন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর ইউনিয়ন থেকে শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়ন (বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী সংযোগস্থল) পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার ৪০০ কেভি ডাবল সার্কিট সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হবে। এর ফলে জাতীয় গ্রিডে আরো ১ হাজার ৪৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হবে। অনুমোদিত প্রকল্পটি বিদ্যুৎ বিভাগের আওতাধীন পিজিসিবি বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্পটিতে মোট ব্যয় হবে ২২৫ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে জিওবি ২১৬ কোটি এবং সংস্থার নিজস্ব ৯ কোটি টাকা। চলতি বছর থেকে ডিসেম্বর ২০২১ মেয়াদে বাস্তবায়নের লক্ষ্য ধরা হয়েছে। অন্যদিকে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ‘বিভাগীয় শহরে সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপন’ প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। পুরো অর্থ সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন থেকে বরাদ্দ দেয়া হবে। ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৩৮৮ লাখ টাকা। সভায় অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো- সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দু’টি প্রকল্প যথাক্রমে ‘ময়মনসিংহ (রঘুরামপুর)-ফুলপুর-নকলা-শেরপুর (আর-৩৭১) আঞ্চলিক মহাসড়ক উন্নয়ন’ প্রকল্প ও ‘রাজশাহী-নওহাটা-চৌমাসিয়া সড়কের বিন্দুর মোড় থেকে বিমানবন্দর হয়ে নওহাটা ব্রিজ পর্যন্ত পেভমেন্ট চার লেনে উন্নীতকরণ’ প্রকল্প; স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ‘রাজশাহী মহানগরীর উপশহর মোড় থেকে সোনাদীঘি মোড় এবং মালোপাড়া মোড় থেকে সাগরপাড়া মোড় পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন’ প্রকল্প; প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের ‘আশ্রয়ণ-২ শীর্ষক’ প্রকল্প; মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘জুনোসিস এবং আন্তঃসীমান্তীয় প্রাণিরোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ গবেষণা’ প্রকল্প; পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের ‘স্ট্রেংদেনিং মনিটরিং অ্যান্ড ইভালুয়েশন ক্যাপাবিলিটিজ অব আইএমইড (এসএমইসিআই)’ প্রকল্প। একনেক সভায় উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, কৃষিমন্ত্রী মো. আবদুর রাজ্জাক, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাবউদ্দিন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।