Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাবা-মাকে ডেকে অপমানের অভিযোগ

মিরপুরে কলেজ ছাত্রের আত্মহত্যার চেষ্টা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

পরীক্ষায় খারাপ ফলাফল করায় বাবা-মাকে ডেকে অপমানের জেরে এক শিক্ষার্থী কলেজ ভবন থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আহত শিক্ষার্থীকে আগারগাঁওয়ের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম শাহরিয়ার আলম আকাশ। গতকাল সোমবার বেলা ১১টার দিকে মিরপুরের বনফুল আদিবাসী গ্রিনহার্ট কলেজে এ ঘটনা ঘটে। আকাশ কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থী।
এদিকে, শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার চেষ্টার কথা কলেজে ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা কলেজের ভেতরে ভাংচুর চালায়। তারা ৯ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের ডাক দিয়েছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কলেজে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
আত্মহত্যার চেষ্টাকারী শিক্ষার্থী আকাশের বন্ধুরা বলেন, আকাশ ক্লাস পরীক্ষায় খারাপ ফলাফলের কারণে কলেজের রেক্টর সজল কান্তি রায় ওর বাবা-মাকে কলেজে ডেকেছিলেন। সবার সামনে তাদেরকে অপমান এবং খারাপ আচরণ করা হয়। বিষয়টি সহ্য করতে না পেরে আকাশ কলেজের তিনতলা থেকে লাফ দেয়। এতে ওর মাথা ফেটে যায়। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনাটি কলেজে জানাজানি হলে শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ক্লাসরুম ভাংচুর করে। বন্ধুরা আরও বলেন, সম্প্রতি আকাশের মা ব্রেন স্ট্রোক করায় তার পরীক্ষা খারাপ হয়েছে। বিষয়টি কলেজের রেক্টর জানলেও তিনি ওর পরিবারকে ডেকে খারাপ আচরণ করেছেন। শিক্ষকদের চাপের কারণেই মূলত আকাশ আত্মহত্যার চেষ্টা করতে বাধ্য হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কলেজের সিসিটিভি ফুটেজে আত্মহত্যা চেষ্টার ভিডিও ধারণ থাকলেও সেগুলো কলেজ কর্তৃপক্ষ নষ্ট করেছে। তারা প্রমাণ লোপাট করতে ক্যামেরা খুলে ফেলেছে। ফুটেজ ডিলিট করার কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে ভাংচুর চালায়। শিক্ষার্থীরা রেক্টর সজল কান্তির অপসারণ ও ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস বর্জনের ডাক দিয়েছে। কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আকাশ কলেজের দোতলার সিঁড়ি থেকে একতলায় পড়ে যায়। তাকে তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার করে আগারগাঁওয়ের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সান্সেস ও হাসপাতালে নেওয়া হয়।
কলেজের রেক্টর সজল চন্দ্র সরকার বলেন, এই শিক্ষার্থী আগামী বছর এইচএসসি পরীক্ষা দেবে। স¤প্রতি পরীক্ষার ফল খারাপ হওয়ায় আজকে (গতকাল) আমরা ফোন করে তার বাবাকে কলেজে আসতে বলি। এ কথা জেনেই ওই ছাত্র ক্লাসরুম থেকে বের হয়ে যায়। এরপরই এই ঘটনা ঘটে।
আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, মঙ্গলবার থেকে কলেজে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। রেক্টরের পদত্যাগ, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত, আহত ছাত্রের চিকিৎসার সব দায়িত্ব কর্তৃপক্ষকে নেওয়া, কোচিং বাণিজ্য বন্ধসহ ৯ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত তারা ক্লাস বা পরীক্ষায় অংশ নেবে না।
কলেজের অধ্যক্ষ সুধির কুমার মন্ডল বলেন, ছেলেটা কোথা থেকে কীভাবে লাফ দিয়েছে সেটা অনুসন্ধ্যান করা হচ্ছে। এছাড়া বাবা-মাকে অপমানের অভিযোগটিও ক্ষতিয়ে দেখা হবে।
পুলিশের পল্লবী জোনের সহকারী উপকমিশনার (এডিসি) কামাল হোসেন বলেন, ছেলেটির চিকিৎসা হচ্ছে। আমরা তার খোঁজখবর নিচ্ছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। কলেজ ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে যোগাযোগ করলে চিকিৎসক মনসুর আহমেদ বলেন, ছেলেটি সুস্থ আছে। কথাবার্তা বলছে। তার সিটি স্ক্যান হয়েছে। রিপোর্ট পেলে অবস্থা বোঝা যাবে। সে এখন স্বাভাবিক আছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ