পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ক্ষমতা ভোগ করার জন্য নয়, মানুষের সেবা করার ব্রত নিয়েই আমি কাজ করে যাচ্ছি। কতকগুলো লক্ষ্য স্থির করে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আশা করি, সেটা অর্জন করতে পারব।
গতকাল বিকেলে ড. আবদুল কালাম স্মৃতি আন্তর্জাতিক শ্রেষ্ঠত্ব পুরস্কার-২০১৯ গ্রহণ শেষে গণভবনে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা কিছু দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত দেশে নিয়ে যেতে চাই। ২১০০ সাল পর্যন্ত আমাদের পরিকল্পনা আছে। যেন বাংলাদেশের মানুষ উন্নত জীবন পায়, এ লক্ষ্যে আমরা দীর্ঘমেয়াদি এসব পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করার জন্য ভারতের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সহযোগিতামূলক মনোভাব থাকলে উন্নয়ন করাটা সহজ হয়। আমরা সবসময় বন্ধুসুলভ সম্পর্ক ধরে রাখার চেষ্টা করেছি। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক গত এক দশকে অনেক উঁচুতে পৌঁছেছে। দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অনেক অগ্রগতি হয়েছে। সরকার প্রধান বলেন, ভারত সবসময় বাংলাদেশের জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে। ছিটমহল বিনিময় ও স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ও ভারত যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে তা নজিরবিহীন।
বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার ইচ্ছা ছিল সোনার বাংলা গড়ে তোলা। মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা। আর এ জন্য তিনি ত্যাগ স্বীকার করেছেন। এ দেশের মানুষের কথা মনে করেই তিনি স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। তার কথায় এ দেশের মানুষ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। তিনি এ দেশের মানুষকে গভীরভাবে ভালোবাসতেন। আমাদের চেয়েও (সন্তানদের) তিনি মানুষকেই বেশি ভালোবেসেছেন।
দেশের অগ্রগতির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ২৯তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। ২০১৯ সালে আমাদের মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে ১৯০৯ মার্কিন ডলারে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক এক শতাংশ। এটাকে ১০-এ নিয়ে যেতে চাই। দেশের দারিদ্র্য এখন ২১ শতাংশে নেমে এসেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ দেশের জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। এজন্য আজ আমি তাদের জন্য কাজ করতে পারছি। খাদ্যের পর মানুষের পুষ্টি নিরাপত্তার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। জনগণের জন্য আরও বেশি কাজ করার ক্ষেত্রে এই পুরস্কার আমাকে অনুপ্রাণিত করবে।
২১ সালে বাণিজ্যিক অপারেশন : মেট্রোরেল পুলিশ ইউনিট গঠনের নির্দেশ
মেট্রোরেলের নিরাপত্তার জন্য পৃথক পুলিশ ইউনিট গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঢাকায় মেট্রোরেল প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে গতকাল সোমবার গণভবনে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন দেখার সময় এই নির্দেশ দেন তিনি।
মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী পুরোদমে এগিয়ে চলছে এবং ২০২১ সালের ডিসেম্বরে মেট্রোরেল বাণিজ্যিক অপারেশনে যাবে বলে জানানো হয়েছে মেট্রোরেল প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতি বিষয়ে পর্যালোচনা সভায়।
সভায় মেট্রোরেলের অগ্রগতি বিষয়ে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এম এ এন সিদ্দিক। ইতোমধ্যে এমআরটি (ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট) লাইন-৬ এর ৩০ দশমিক ৫ শতাংশ কাজের অগ্রগতি হয়েছে বলেও জানান এম এ এন সিদ্দিক। এমআরটি-৬ লাইনের প্রথম পর্যায়ে নির্মাণের জন্য নির্ধারিত উত্তরা তৃতীয় পর্ব থেকে আগারগাঁও অংশের অগ্রগতি ৪৬ শতাংশ, দ্বিতীয় পর্যায়ে নির্মাণের জন্য নির্ধারিত আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের অগ্রগতি ২৩ দশমিক ৫ শতাংশ। ইলেকট্রিক্যাল ও মেকানিক্যাল সিস্টেম এবং রোলিং স্টক ও ডিপো ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ কাজের সমন্বিত অগ্রগতি ১৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ বলে জানানো হয় সভায়। প্রধানমন্ত্রী মেট্রোরেলের প্রতিটি বিষয় মনোযোগ সহকারে প্রত্যক্ষ করেন এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন। খুঁটিনাটি বিষয়গুলোতেও তিনি প্রয়োজনীয় সমাধান ও নির্দেশনা দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মেট্রোরেলের নিরাপত্তার জন্য মেট্রোরেল পুলিশ থাকবে। তাদের ট্রেনিং দিতে হবে। দেশের প্রথম মেট্রোরেলের নির্মাণকাজের সার্বিক গড় অগ্রগতি ৩০.০৫ শতাংশ। পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনে মেট্রোরেল প্রকল্পের অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরেন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক। এতে দেখা যায়, প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশে কাজের অগ্রগতি ৪৬.০০ শতাংশ। এছাড়া দ্বিতীয় পর্যায়ে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত অংশে কাজের অগ্রগতি ২৩.৫০ শতাংশ এবং ইলেকট্রিক্যাল, মেকানিক্যাল সিস্টেম ও রোলিং স্টক (রেলকোচ) ও ডিপো ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ কাজের সমন্বিত অগ্রগতি ১৯.৮৭ শতাংশ। ঢাকা ও আশপাশের এলাকার যানজট নিরসন ও পরিবেশ উন্নয়নে আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থা হিসেবে ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) বা মেট্রোরেলের পরিকল্পনা, সার্ভে, ডিজাইন, অর্থায়ন, নির্মাণ, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ২০১৩ সালের ৩ জুন ডিএমটিসিএল গঠন করা হয়।
এর ধারাবাহিকতায় ২০৩০ সালের মধ্যে ছয়টি মেট্রোরেলের সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার জন্য পরিকল্পনা নেয় সরকার। এর মধ্যে এমআরটি-৬ এ উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ সবচেয়ে বেশি এগিয়েছে। প্রথম পর্যায়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময় ধরা হলেও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পরে তা এগিয়ে আনা হয় বলে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছিলেন।
প্রকল্পের প্রথম ধাপ উত্তরা থেকে আগারগাঁওয়ে এ বছরের শেষ নাগাদ ট্রেন চালুর আশা প্রকাশ করছেন সরকারের কর্মকর্তারা। দ্বিতীয় ধাপ আগারগাঁও থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে বলে গত অক্টোবরে বলেছিলেন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তবে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী জাপান সরকারের দাতা সংস্থা জাইকার একটি প্রতিনিধিদল গত ফেব্রুয়ারিতে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের সঙ্গে সাক্ষাতে এমআরটি-৬ প্রকল্পের কাজ ২০২২ সালে শেষ হবে বলে জানিয়েছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান, সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আখতার হোসেন ভূঁইয়াসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় ঢাকার সাবেক পুলিশ কমিশনার বর্তমানে জাতীয় নিরাপত্তা সেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আছাদুজ্জামান মিয়াকে এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।