পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাসায় শুয়ে হাত-পা ছুঁড়ে খেলছিল মনিষা। এ ফাঁকে জরুরি কাজে চার তলার বাসা থেকে নিচে নামেন মা হ্যাপি চক্রবর্তী। বাসায় অসুস্থ দাদি। হঠাৎ কি যেন হয়ে গেল। ফুটফুটে মনিষা বস্তায় বন্দি। মেহেদিবাগের বাসা থেকে এক কিলোমিটার দূরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের আঙিনায় তাকে ছুঁড়ে মারা হলো। প্লাস্টিকের বস্তা তার উপর রশি দিয়ে মুখ বাঁধা। ফুটফুটে মনিষার দম বন্ধ হওয়ার জোগাড়। তার দম ফাটা চিৎকারে এগিয়ে আসে এক পথ শিশু। সে দ্রুত সার্কিট হাউসের ফটকে দায়িত্বরত পুলিশকে বিষয়টি জানায়।
খবর পেয়ে ছুটে যান এক পুলিশ সদস্য। বস্তার মুখ খুলেই মনিষাকে কোলে তুলে নেন। তখনও থামছিল না মনিষার কান্না। গতকাল সোমবার মাত্র ৪০ দিন বয়সে ভয়ঙ্কর এক নিষ্ঠুরতার মুখোমুখি হলো নিষ্পাপ এ শিশুটি। পুলিশ তাকে নিয়ে ছোটে চমেক হাসপাতালে। জরুরি বিভাগে চিকিৎসার পর মনিষাকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালের আট নম্বর শিশু ওয়ার্ডে। প্রফেসর ডা. শারমিন ও ডা. পারমিতা শিশুটির চিকিৎসা করেন।
এদিকে বাসায় ফিরেই মনিষাকে না পেয়ে চিৎকার শুরু করেন স্কুল শিক্ষিকা মা হ্যাপি চক্রবর্তী। তাৎক্ষণিক বিষয়টি স্বামী নগরীর সিজিএস স্কুলের শিক্ষক মানিক চক্রবর্তীকে জানান। তিনি দ্রæত ফোন করেন ৯৯৯-এ। চকবাজার থানা থেকে পুলিশ ছুটে যায় তার বাসায়। মনিষার মায়ের বক্তব্য শুনে শিশুটিকে উদ্ধারে আশপাশে অভিযানে নামে পুলিশ। এরমধ্যে খবর আসে সার্কিট হাউসে পাওয়া গেছে একটি শিশু। মনিষার বাবা-মা ছোটেন হাসপাতালে। সেখানে গিয়ে খুঁজে পান বুকের ধন মনিষা চক্রবর্তীকে। তাকে বুকে নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা। ছেলে হওয়ার ১০ বছর পর কোলজুড়ে আসে মনিষা। তাকে হারিয়ে কয়েক ঘণ্টা নির্বাক ছিলেন বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যরা।
কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, দুপুর ১টার পর কে বা কারা শিশুটিকে একটি বাজারের ব্যাগে ভরে সার্কিট হাউসের পূর্ব পাশের দেওয়ালের ফাঁক দিয়ে রেখে যায়। মুখ বাঁধা ব্যাগে শিশুটি হাত-পা ছুঁড়ে কান্নাকাটি করছিল। খবর পেয়ে সেখানে কর্তব্যরত পুলিশের এএসআই হামিদুল ইসলাম শিশুটিকে উদ্ধার করেন। তিনি বলেন, উফ! কী নিষ্ঠুরতা। এমন একটি ফুটফুটে শিশুকে এভাবে কেউ মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে পারে তা কল্পনারও বাইরে। বেলা দেড়টায় শিশুটিকে নিয়ে হাসপাতালে যান তিনি।
চকবাজার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রেয়াজউদ্দিন চৌধুরী বলেন, শিশু মনিষা চক্রবর্তীর বাবা-মা দুজনই শিক্ষকতা করেন। বাবা কর্মস্থলে থাকলেও মাতৃকালীন ছুটিতে থাকা মা হ্যাপি চক্রবর্তী বাসায় ছিলেন। বড় ছেলে স্কুলে বাসায় মানিক চক্রবর্তীর বৃদ্ধা মা। শাশুড়িকে মনিষার দিকে খেয়াল রাখার কথা বলে জরুরি কাজে বাসার বাইরে যান তিনি। এ ফাঁকে কে বা কারা শিশুটিকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায়। কারা এ কান্ড করেছে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। তবে পুলিশের ধারণা, কোন চোর শিশুটিকে চুরি করে নিয়ে যাচ্ছিল।
সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী জানান, শিশুটির অবস্থা ভাল। স্বাভাবিকভাবে ৪০ দিনের একটি শিশুর জন্য এটি কঠিন পরিস্থিতি ছিল। তাকে সুস্থ ও স্বাভাবিক করার জন্য যা কিছু করার দরকার আমরা করছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।