পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভোলায় নদীভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ভাঙন রোধে চলছে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ। অনেক এলাকা হুমকির মুখে পড়েছে, প্রয়োজন স্থায়ী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করা। ভোলা হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দ্বীপ। যার তিন দিকে নদী এবং একদিকে বঙ্গোপসাগর। ভোলা জেলায় ২০ লাখ মানুষের বসবাস।
চীনের দুঃখ হচ্ছে হোয়াংহো নদী আর ভোলার দুঃখ হচ্ছে নদীভাঙন। ভোলা হচ্ছে অপার সম্ভাবনাময় এলাকা। এখানে রয়েছে ২৫০, ২২৫, ও ৩৪.৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্লান্ট, শাহবাজপুর গ্যাস ক্ষেত্র। নদী ভেঙে গ্যাস ক্ষেত্রের অতি সন্নিকটে এসে পড়েছে মেঘনা নদী। নদী ভাঙার কারণে ভোলার ভৌগলিক অবস্থান মানচিত্র থেকে অনেক ছোট হয়ে গিয়েছে। ভোলাকে নদী ভাঙনের হাত থেকে রক্ষার জন্য বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন চেষ্টাও করা হয়েছে। কিন্তু তেমন একটা ফলপ্রসু হয়নি।
সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ভোলা-১ আসনের সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদের নেতৃত্বে ভোলা-৩ আসনের এমপি নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন, ভোলা-২ আসনের এমপি আলী আজম মুকুল ও ভোলা-৪ আসনের এমপি ও সাবেক উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকল্প দ্বারা ভোলা জেলাকে নদী ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করার যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন। ফলশ্রুতিতে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজও চলছে।
ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে ও সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড ২০১৬-১৭ সাল থেকে শুরু করে ভোলা ডিভিশন-১ এর তত্ত¡াবধানে ভোলা ইলিশা ফেরিঘাটের দুই পাশে ৩৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩.৯৫ কি.মি. নদী তীর সংরক্ষণ কাজ, কাচিয়া ৬০০ মিটার, রাজাপুর ৩০৬ মি., রাজাপুর-পূর্ব ইলিশা ৩৯৫ মি., তুলাতুলি ৩৪০ মি., ইলিশা নাদের মিয়ার হাট ৫৫০ মি., শিবপুর ৩৩০ মি., বোরহাউদ্দিন উপজেলার ভবানীপুর, পক্ষিয়া ইউনিয়ন ৩.৪৫ কি.মি. ৫৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে, দৌলতখান ১.৩ কি.মি. ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে নদী ভাঙনের সিসি বøক, জিওব্যাগসহ জরুরি ও আপদকালীন কাজ চলছে বলে জানান বাপাউবো ডিভিশন-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. বাবুল আকতার।
দৌলতখানের সাংবাদিক কাজী জামাল ও মিজান জানান, চৌকিঘাট, চরপাতা, দৌলতখান থানাসহ পৌরসভার অনেক এলাকা এখন হুমকির মুখে রয়েছে। স্থানীয় মৌলভী হাফিজুল্লাহ বলেন, এসব বøকের কাজ বর্ষার সময়ে করার কারণে সঠিকভাবে করা হচ্ছে না। শুষ্ক মৌসুমে নদীভাঙন রোধের কাজ করা হলে কাজ সঠিকভাবে হতো। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ জানায় যখন বরাদ্ধ পাওয়া যায় তখনই কাজ হয়।
ভোলা বাপাউবো ডিভিশন-২ এর সদ্য বদলিকৃত নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কায়ছার আলম ও উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. ছালাউদ্দিন সানি জানান, তার এলাকা অর্থাৎ লালমোহন-তজুমুদ্দিন ও চরফ্যাশন-মনপুরায় নদীভাঙন রোধে অনেক প্রকল্পের কাজ চলছে আবার অনেক জায়গায় নদীভাঙনও অব্যাহত রয়েছে।
যেসব স্থানে কাজ চলছে তা হল ৬০৯ কোটি টাকা ব্যয়ে তজুমুদ্দিন-চাচড়া-কেয়ামুল্লাহ ৬.৫০ কি.মি. নদী তীর সংরক্ষণ, ৪৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে লালমোহন-লর্ডহার্ডিঞ্জ ধলীগৌঢ় নগড় ইউনিয়ন ২.৭৮ কি.মি. নদী তীর প্রতিরক্ষা ও ড্রেজিং, ২৭৮ কোটি টাকা ব্যয়ে চরফ্যাশন পৌর শহর প্রতিরক্ষা, ৫২৩ কোটি ব্যয়ে বকশির হাট-বাবুরহাট-চর কুকরি মুকরি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ প্রকল্প, ৩১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে মনপুরা-রামনেওয়াজ-ঘোষের হাট প্রতিরক্ষা মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে।
কিন্তু এত বড় বড় প্রকল্পের মাধ্যমেও বন্ধ করা যাচ্ছে না নদীভাঙন। যেখানে কাজ চলছে সে এলাকায় ভাঙন কিছুটা বন্ধ থাকলেও অন্য জায়গায় ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ডিভিশন-২ এর যেসব এলাকা ভাঙছে তা হল তজুমুদ্দিন গুরিন্দা, চাচড়া, খাসের হাট বাজার, মনপুরার সাকুচিয়া, রামনেওয়াজ, মাছঘাট, চৌধুরী পাড়া, সামরাজ মৎস্য অবতরন কেন্দ্রসহ ভাঙছে অনেক এলাকা।
চরফ্যাসন প্রেসক্লাবের সভাপতি ও কুকরি মুকরির ইউপি চেয়ারম্যান হাসেম মহাজন জানান, কুকরি মুকরি, ঢালচর, নীল কমল, বকশির হাট, ঘোষের হাট, নজরুল নগর, মুজিব নগরসহ চর ফ্যাশনের বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। তবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দাবি ভোলার ভাঙন বন্ধ করতে হলে স্থায়ীভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
বাপাউবো কর্তৃপক্ষ জানান, মেঘনা নদীর তীর বেশি ভাঙছে। সেক্ষেত্রে তেতুলিয়া নদীর তীর এলাকায় কিছুটা কম ভাঙছে। সরকার ইতোমধ্যে নদীভাঙন রোধে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ শুরু করলেও ভোলার ৩৬৫ কি.মি. নদী এলাকার বিভিন্ন জায়গায় ভাঙনের কারণে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সম্পদসহ অনেক এলাকা রয়েছে হুমকির মুখে।
বাপাউবো’র প্রধান প্রকৌশলী মো. হারুন অর রশিদ ইনকিলাবকে জানান, ভোলা জেলা ও মনপুরার ভাঙন বন্ধ করতে হলে বড় প্রকল্পের মাধ্যমে ভোলার চারপাশে সিসি ব্লক দিয়ে স্থায়ীভাবে প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পাউবো ইতোমধ্যে জেলায় প্রায় ৫০ কি.মি. এলাকাজুড়ে নদী তীর সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে। আর কাজও প্রায় শেষের দিকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।