Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সংসদে ভোট নিয়ে বিভ্রান্তি প্রথমে ‘না’ পরে ‘হ্যাঁ’

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

 তামাকজাত দ্রব্যের ওপর প্রচলিত স্তরভিত্তিক মূল্যের শতকরা হার পদ্ধতির পরিবর্তে সুনির্দিষ্ট করারোপ করার দাবি জানিয়ে বেসরকারি সিদ্ধান্ত প্রস্তাব এনেছিলেন সরকারি দলের সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী।
প্রস্তাবটি উত্থাপনের পর অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল তার ব্যাখ্যা দিয়ে প্রস্তাবটি প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান। পরে প্রস্তাব উত্থাপনকারীকে প্রস্তাবটি প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান স্পিকার।
সাবের হোসেন চৌধুরী সেই প্রস্তাব প্রত্যাহার না করায় প্রস্তাবটি প্রত্যাহারে সংসদ ভোটে দেন স্পিকার। এ সময় সরকারি দলের সদস্যরা বুঝতে না পেরে প্রথমে ‘না’ ভোট দিয়ে বসেন।

এরপর স্পিকার বলেন, সকল প্রকার তামাক জাতীয় দ্রব্যের ওপরে প্রচলিত অ্যাড ভ্যালোরেম পদ্ধতির পরিবর্তে সুনির্দিষ্ট কর আরোপ করার প্রস্তাবটি সংসদের প্রসিডিং থেকে প্রত্যাহার করা হোক, যারা এর পক্ষে আছেন ‘হ্যাঁ’ বলুন।
এ সময় অধিকাংশ সংসদ সদস্য চুপ থাকেন। এরপর যখন স্পিকার ‘না’ বলেন, সঙ্গে সঙ্গে সরকারি দলের সদস্যরা ‘না’ বলেন। এতেই ঘটে বিপত্তি। পরে স্পিকার আবার বলেন, সদস্যরা আপনারা একটু মনোযোগ দেবেন। এরপর স্পিকার পুনরায় প্রস্তাব ভোটে দিলে সংসদ সদস্যরা ‘হ্যাঁ’ ভোট দিলে প্রস্তাবটি প্রত্যাহার হয়।

এরপর সাবের হোসেন চৌধুরী অভিযোগ করেন এখানে পক্ষপাতিত্ব করা হয়েছে। প্রস্তাবের পক্ষে তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে তামাকের যে কর-কাঠামো তা অত্যন্ত জটিল, পুরনো ও অকার্যকর। বিশ্বের মাত্র ছয়টি দেশে এভাবে করারোপ করা হয়। অন্যদিকে ফিলিপাইন, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়াসহ বেশির ভাগ দেশে সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি চালু আছে। এটি করা হলে রাজস্ব আয় বাড়বে।
গতকাল রাতে একাদশ জাতীয় সংসদের চতুর্থ অধিবেশনে সাবের হোসেন চৌধুরী উত্থাপিত সিদ্ধান্ত প্রস্তাব নিয়ে এ ঘটনা ঘটে।

সাবের হোসেন চৌধুরীর বক্তব্যের জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বর্তমান আইনে তামাকপণ্যে সুনির্দিষ্ট করারোপের সুযোগ নেই। চলমান বাজেটে স্তরভিত্তিক শুল্কারোপ করা হয়েছে। রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে এবং গ্রাহকের ক্রয় ক্ষমতা বিবেচনায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে ক্রমান্বয়ে সুনির্দিষ্ট করারোপ পদ্ধতি চালু করার বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে একদিন হয়তো এটি হবে।

মন্ত্রীর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সাধারণত প্রস্তবকারী সদস্যরা তাদের সিদ্ধান্ত প্রস্তাব প্রত্যাহার করে নেন। কিন্তু মন্ত্রীর বক্তব্যে ‘সন্তুষ্ট’ না হয়ে সাবের হোসেন চৌধুরী তার প্রস্তাব প্রত্যাহার করতে রাজি হননি। তখন নিয়ম অনুযায়ী তার প্রস্তাবটি প্রত্যাহারের জন্য কণ্ঠভোটে দেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।

পরে সাবের হোসেন চৌধুরী এ বিষয়ে স্পিকারের কাছে ক্লারিফিকেশন চান। তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য সরকারের রাজস্ব বাড়ানো। তামাক কোম্পানিকে মুনাফা করার সুযোগ করে দেওয়া আমাদের লক্ষ্য না। একটা ভোটে সরকারের পতন হয়ে যেত না। এটা সরকারের বিপক্ষের ভোট না।

এরপর ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ফ্লোর নিয়ে দাঁড়িয়ে সাবের হোসেন চৌধুরীকে সমর্থন করেন। এরপর স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, প্রথমে আমি একটু কনফিউসড ছিলাম। যার ফলে পুনরায় উপস্থাপন করেছি এবং ভিন্ন ফল এসেছে। যদি সংসদ সদস্যরা আপনার (সাবের হোসেন চৌধুরী) পক্ষে ভোট দিতেন তাহলে দ্বিতীয়বার একই ফল হতো।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ