Inqilab Logo

শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘নিরাপদ শহর’ হচ্ছে ঢাকা

সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৪৪ এএম

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, অপরাধী শনাক্ত করে ধরা ও যানজট নিরসনে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার মতো বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে ‘সেফ সিটি প্রজেক্ট’ তথা ‘নিরাপদ শহর’ প্রকল্প গ্রহণ করতে যাচ্ছে সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ‘ডিজিটাল কেস ডায়েরি’ এর উপর পর্যালোচনা সভা শেষে মন্ত্রী এ কথা বলেন। এদিকে, জাতীয় জরুরি সেবা তথা ৯৯৯ নম্বরের আওতা বাড়ানোসহ কারাগারে থাকা বন্দিদের সাথে স্বজনদের কথা বলার জন্য সারাদেশের কারাগারগুলোতে ‘স্বজন’ কর্মসূচি চালুর চিন্তাভাবনা চলছে বলে তিনি জানান।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সেফ সিটির বিষয়টি অনেক দিন ধরে চিন্তা করছি। ঢাকা শহরে ৬ হাজার পাকা রাস্তা রয়েছে। আমরা সারা ঢাকায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিভিন্ন ধরনের ক্যামেরা স্থাপন করবো। এখানে আমরা ট্রাফিক কন্ট্রোল করবো। যানজট নিরসনে ট্রাফিক মানেজমেন্ট সেফ সিটির মধ্যে নিয়ে আসছি। গাড়িগুলোকে শনাক্তকরণের জন্য গাড়ির নম্বর প্লেট দিয়ে সেই ধরনের ব্যবস্থা করছি। চেহারা চিহ্নিতকরণের জন্য ক্যামেরার ব্যবস্থা থাকবে। উন্নত বিশ্বের মতো অপরাধীর এনআইডি থেকে ছবি নিয়ে ক্যামেরার মাধ্যমে তাকে শনাক্তকরণের ব্যবস্থার জন্য প্রচেষ্টা নিচ্ছি। একটি প্রকল্প তৈরি করে খুব শিগগিরই পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়ে দেবো। ঢাকা শহরকে ক্রাইমমুক্ত করার প্রচেষ্টা থাকবে।

মন্ত্রী আরও বলেন, ঢাকার বিভিন্ন স্থান ক্যামেরার আওতায় আনায় ক্রাইম কিছুটা কমে যাচ্ছে। আরও কমানোর জন্য সারা ঢাকা সিটিতে ক্যামেরা স্থাপন করবো। এই ক্যামেরা গতানুগতিক ক্যামেরা নয়। এর ভিন্নতা রয়েছে, ফেস ডিটিকশন করবে। কোনো ছবি বা গাড়ির যদি ছবি দেই তখন ক্যামেরা থেকে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে সংকেত আসবে। বিশ্বের উন্নত শহরগুলোতে এসব ক্যামেরা বসানো হয়। প্রথম অবস্থায় ঢাকায় সফল হলে পরে চট্টগ্রাম ও অন্যান্য সিটিতে দেওয়া হবে। ঢাকাসহ ১০ সিটি করপোরেশনে ডিজিটাল সেফ সিটি প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পুরোটা ডিজটালাইজড করবো বলে অঙ্গীকারাবদ্ধ।

৯৯৯ এর আওতা বাড়ছে

এদিকে, মন্ত্রী বলেন, ৯৯৯ সার্ভিস অত্যন্ত জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এটার পিছনে আমাদের আইসিটি উপদেষ্টার পরিকল্পনা ছিল। জনসাধারণের একটা বিশ্বাস এসেছে যে ৯৯৯ টিপলে সার্ভিস পাবে এবং পাচ্ছে তাই। জাতীয় জরুরি সেবার আওতা বাড়াতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ৯৯৯ এর নীতিমালা প্রণয়নের জন্য অতিরিক্ত সচিব (পুলিশ) আহŸায়ক করে ৬ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছি। ৯৯৯ আরো কীভাবে জনবাবন্ধব হতে পারে, জনগণের সেবায় আরো কীভাবে ৯৯৯ নিয়োজিত হতে পারে এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে ৯৯৯ কীভাবে আরো সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী হবে এবং আরো বেশি সেবা দেওয়া যাবে তা নিয়ে কাজ করবে।

কমিটিতে সুরক্ষা সেবা বিভাগের যুগ্মসচিব (ফায়ার সার্ভিস), উপ-মহা পুলিশ পরিদর্শক ব্যারিস্টার মো. হারুন অর রশিদ, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ তবারক উল্ল্যাহ (৯৯৯ পরিচালনা করছেন), স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের প্রতিনিধি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (আইন) রয়েছেন। জননিরাপত্তা বিভাগ ও আইসিটি বিভাগ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে।
বৈঠকে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, এ পর্যন্ত এক কোটি ৪২ লাখ কল রিসিভ করেছে ৯৯৯। এ সেবার বর্তমান জনবল ১৪২ জন। আরও ৫০০ জন নিয়োগ দেওয়া হবে। সভায় পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীনসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সব কারাগারে ‘স্বজন’ কর্মসূচি চালু
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, জনপ্রিয়তার কারণে দেশের সব কারাগারে বন্দিদের সঙ্গে আত্মীয়-স্বজনদের কথা বলার জন্য ‘স্বজন’ কর্মসূচি চালুর চিন্তাভাবনা চলছে। বর্তমানে পরীক্ষামূলকভাবে টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে ‘স্বজন’ কর্মসূচি চালু আছে। দেখা গেছে, ‘স্বজন’ চালুর পর বন্দিদের আত্মীয়-স্বজনদের সরাসরি জেলখানায় এসে দেখা করার প্রবণতা কমেছে ৮০ শতাংশ। এই কর্মসূচি অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়েছে। উল্লেখ্য, ‘স্বজন’ কর্মসূচি এমন একটি ব্যবস্থাÑ যার মাধ্যমে বন্দিদের সঙ্গে স্বজনদের টেলিফোন বা মোবাইল ফোনে কথা বলার ব্যবস্থা করা হয়। ফলে বন্দিদের সঙ্গে কথা বলতে কারাগারে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ