Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাপা চাইলে রংপুর-৩ আসন ছেড়ে দিতে পারে আ’লীগ

সাংবাদিকদের ওবায়দুল কাদের

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:০৭ এএম

এরশাদের আসন হিসেবে পরিচিত জাতীয় সংসদের রংপুর-৩ আসনে উপ-নির্বাচনে জাতীয় পার্টি (জাপা) ছাড় চাইলে আওয়ামী লীগ বিবেচনা করতে পারে বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেতু ভবনে কোরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশনের সঙ্গে চুক্তি সই অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসন ভাগাভাগির চিত্রও তুলে ধরেন।

আওয়ামী লীগ রংপুর-৩ আসন প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, রংপুরের আসনটি আসলে জোটের নিয়ম (একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসন ভাগ-বাটোয়ারা) অনুযায়ী জাপার ছিল, এরশাদ সাহেবের আসন। জোটগত সিট বণ্টনে এটা জাপার ছিল। এখন জাপা সংসদে বিরোধীদলের আসনে। এখন তারা আলাদাভাবে নির্বাচনে আসলে আসতে পারে, সেটা তাদের ব্যাপার। আর যদি জোটগতভাবে আমাদের কাছে আসনটি চান, তখন আমরা বিবেচনা করব। এই মুহূর্তে আমাদের প্রার্থী (নৌকার প্রার্থী রেজাউল করিম রাজু) আছে। যতক্ষণ পর্যন্ত আলোচনা না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না। তারাও কোনো আবেদন করেননি। তাই এই ব্যাপারে কিছু বলা যাচ্ছে না।

মুসলিমবিদ্বেষী মোদী সরকারের বিজেপির আসাম রাজ্য সরকারের এনআরসি বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা ভারত সরকারের কাছে এনআরসি বিষয়ে তাদের মন্তব্য জানতে চেয়েছিলাম; তখন ভারত সরকারের পক্ষ থেকে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকায় বলে গেছেন। ওখান থেকে আমরা যেটা পেলাম, এ নিয়ে বাংলাদেশের উদ্বেগের কোনো কারণ নেই। তবে, আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। বিচ্ছিন্নভাবে ভারতের কে কী বক্তব্য দিল সেটা আমাদের কাছে বিবেচ্য নয়। ভারত সরকার আমাদের কী বলেছে সেটাই বিবেচ্য বিষয়।

মহাসড়কে টোল আদায় যাত্রীদের বাড়তি ভোগান্তির কারণ হবে কি না জানতে চাইলে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, আগে যে দূরত্ব যেতেন চার ঘণ্টায়; এখন যাচ্ছেন তিন ঘণ্টায়। সময় বাঁচবে এখানে লসের কোনো কারণ নেই। আর সমঝোতা স্মারক সই হলো। এটা চুক্তি পর্যন্ত গড়াতে অনেক সময় নেবে। এখনও টোলের বিষয়টি নির্ধারণই হয়নি। কাজেই এটা ডাবল কী ট্রিপল হবে। টোল নির্ধারণের প্রাথমিক কোনো আলাপ-আলোচনা পর্যন্ত হয়নি।

মহাসড়কে টোল আদায়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপির নেতাদের অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, মহাসড়ক করার কোনো অভিজ্ঞতা তো বিএনপি দলের নেই। যখন ক্ষমতায় ছিল তখন চার লেনের কোনো রাস্তাই ছিল না। পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল এসব তারা স্বপ্নেও দেখেনি। এদেশে সড়ক অবকাঠোমোর যে উন্নয়ন হয়েছে, এসবের বিষয় বিএনপির কোনো অভিজ্ঞতা নেই। অন্য দেশেও টোল আদায় হয়, এটা তারা জেনেও না জানার ভান ধরছে।

সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী কেইসি এর একটি কারিগরি দল পদ্মা বহুমুখী সেতু এলাকা পরিদর্শন করে সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ পদ্ধতি, প্রয়োজনীয় জনবল ইত্যাদি সম্বলিত একটি কারিগরি প্রস্তাব দাখিল করবে। কারিগরি প্রস্তাব যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন এবং সেতু পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত ম্যানুয়েল অনুযায়ী কেইসি আর্থিক প্রস্তাব দাখিল করবে। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ ও কেইসি এর মধ্যে নেগোসিয়েশন এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের পর উভয়পক্ষের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। কেইসি পদ্মা সেতুর টোল আদায়ে ইলেক্ট্রনিক টোল কালেকশন (ইটিসি) পদ্ধতি চালু করবে। ইটিসি লেন স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিচালিত হবে এবং এ ক্ষেত্রে কোনো যানবাহনকে টোল বুথে থামতে হবে না। কেইসি পদ্মা সেতুর রক্ষণাবেক্ষণে পারফরমেন্স বেইজড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম চালু করবে। এই পদ্ধতিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে রক্ষণাবেক্ষণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও এ সংক্রান্ত বাজেট প্রণয়নে সহায়ক হবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের মূল সেতুর সবকটি পাইল ড্রাইভিং এর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। মূল সেতুর বাস্তব কাজের অগ্রগতি শতকরা ৮৩ দশমিক ৫০ ভাগ এবং আর্থিক অগ্রগতি শতকরা ৭৩ দশমিক ৩৭ ভাগ। নদীশাসন কাজের বাস্তব অগ্রগতি শতকরা ৬২ দশমিক ৫০ ভাগ এবং আর্থিক অগ্রগতি শতকরা ৪৮ দশমিক ৪০ ভাগ। সংযোগ সড়কের অগ্রগতি শতকরা ১০০ ভাগ। প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি শতকরা ৭৩ দশমিক ৫০ ভাগ। মোট পিয়ার ৪২টি। এর মধ্যে ৩১টির কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ১১টির কাজ চলমান আছে এবং এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে।

পদ্মা বহুমুখী সেতুর পরিচালন, রক্ষণাবেক্ষণ ও টোল আদায়ে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠান কোরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশন (কেইসি) এবং বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। সমঝোতা স্মারকে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের পক্ষে পরিচালক (প্রশাসন) মো: রেজাউল হায়দার এবং কেইসি এর পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক শিন ইয়ং সুক নিজ নিজ পক্ষে স্বাক্ষর করেন। এ সময় মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ছাড়াও সেতু বিভাগের সিনিয়র সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো: শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী কাজী মো: ফেরদাউস, ঢাকা আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো: শাহাবুদ্দিন খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ