বর্ষার সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে আকাল ঘনঘোর মেঘে ঢেকেছে। শীতল হাওয়ার সাথে প্রায় সারাদেশে বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। তবে কোথাও কোথাও স্বল্পবৃষ্টি এবং বাতাসে জলীয়বাষ্পের হার বেশি থাকায় ঘাম ঝড়ানো ভ্যাপসা গরম তেমন কমেনি। গতকাল (সোমবার) সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও রংপুর বিভাগে হালকা থেকে মাঝারি বর্ষণ হয়েছে। কোথাও মুষলধারে কিংবা ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আপাতত নেই। আর ময়মনসিংহ, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগে হালকা ও গুঁড়িবৃষ্টি হয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত সীতাকুন্ডে ৭৩ মিলিমিটার। এ সময় ঢাকায় ২২, চট্টগ্রামে ৪৭, সিলেটে ৩৭, রংপুরে ২২, বরিশালে ১০ মি.মি.সহ অধিকাংশ স্থানে বৃষ্টিপাত হয়।

বৃষ্টিহীন রাজশাহী নগরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫.২ ডিগ্রি সে.। ঢাকার তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৩৩.৭ এবং সর্বনিম্ন ২৬.৮ ডিগ্রি সে.। গতকাল সন্ধ্যা ৬ টায় ঢাকায় বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমান ছিল ৯০ শতাংশ। এদিকে আজকালও (মঙ্গল-বুধবার) দেশের অধিকাংশ স্থানে বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, ঢাকা ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় আবহাওয়ার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। এরপরের ৫ দিনের শেষ দিকে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে।

আবহাওয়া বিভাগ জানায়, বর্ষার মৌসুমী বায়ুর বলয়ের একটি বর্ধিতাংশ ভারতের রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ অতিক্রম করে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি থেকে প্রবল অবস্থায় রয়েছে। আবহাওয়ার সতর্কবার্তায় আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানান, ভারতের ছত্তিশগড় ও এর সংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি বর্তমানে মধ্যপ্রদেশ ও এর সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।

লঘুচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্য ও তীব্রতা বিরাজ করছে। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা, উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে সকল মাছ ধরা নৌযান-ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

এদিকে চলতি সপ্তাহের (৮ থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর) কৃষি আবহাওয়া পূর্বাভাসে কৃষি আবহাওয়া মহাশাখার উপ-পরিচালক কাওসার পারভীন জানান, এ সপ্তাহে দৈনিক উজ¦¦ল সূর্য কিরণকাল সাড়ে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টার মধ্যে স্থায়ী থাকতে পারে। এ সময় সারাদেশে অনেক জায়গায় হালকা (দৈনিক ৪ থেকে ১০ মি. মি.) থেকে মাঝারি ধরনের (১১ থেকে ২২ মি. মি.) বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। সে সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী (২৩ থেকে ৪৩ মি. মি.) বর্ষণ হতে পারে। এ সপ্তাহে সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে।