পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীর যানজট নিরসনে সবচেয়ে বড় উদ্যোগ ফ্লাইওভার নির্মাণ। একে একে এ পর্যন্ত ৯টি ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হয়েছে। এতে ব্যয় হয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা। এগুলো হলো, মহাখালী ওভারপাস, খিলগাঁও ফ্লাইওভার, বিজয় সরণি-তেজগাঁও লিংক রোড ওভারপাস, টঙ্গী ওভারপাস, বনানী ওভারপাস, মিরপুর-এয়ারপোর্ট রোড ফ্লাইওভার, কুড়িল ফ্লাইওভার, মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার ও মালিবাগ-মগবাজার ফ্লাইওভার। এগুলোর মধ্যে একমাত্র যাত্রাবাড়ী-গুলিস্তান ফ্লাইওভারটি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে। এ কারণে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতাসহ পরিবেশের দিক থেকে এ ফ্লাইওভারকে অন্যগুলো থেকে সহজেই আলাদা করা যায়। উদ্বোধনের পর থেকে এ ফ্লাইওভারে বাতি বা আলোর কোনো সঙ্কট নেই। দুর্ঘটনারোধে লাগানো আছে স্পিডোমিটার। মোড়ে মোড়ে লাগানো আছে নির্ধারিত গতিবেগের সাইন। শুরুর পর পর টোল নিয়ে কিছু ঝামেলা হলেও টোলবক্স বৃদ্ধি করায় এখন আর আগের মতো টোল দিতে দেরি হয় না।
মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার দিয়ে যারা নিয়মিত যাতায়াত করে তাদের সবার চোখে পড়বে ফ্লাইওভারের উপরের পরিচ্ছন্ন পরিবেশ। একটু টুকরো কাগজও এই ফ্লাইওভারের উপর পড়ে থাকতে দেখা যায় না। প্রতিদিন কয়েক দফায় এই ফ্লাইওভারের উপরিভাগ পরিস্কার করা হয়। কাঁধে ব্যাগ নিয়ে এক মাথা থেকে হেঁটে আরেক মাথায় যান এখানকার পরিচ্ছন্নকর্মীরা। তারা ফ্লাইওভারের উপরে পড়ে থাকা কাগজ, প্যাকেট, পলিথিন, কলার খোসাসহ সব ধরণের ময়লা আবর্জনা কুড়িয়ে ব্যাগে ভরে। আলাপকালে একজন পরিচ্ছন্নকর্মী জানান, প্রতিদিন কমপক্ষে দুই বার করে ফ্লাইওভারের উপরিভাগ পরিচ্ছন্ন করা হয়। তবে বিশেষ দিনে এ কাজ তিন/চারবারও করা হয়। উপরে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলেই ফ্লাইওভার কর্তৃপক্ষের নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মী এসে হাজির হয়। প্রয়োজনে তারাই পুলিশকে খবর দেয়। একজন নিরাপত্তা কর্মী জানান, ফ্লাইওভারের উপরে দুর্ঘটনায় আহতদেরকে এখানকার নিরাপত্তা কর্মীরাই বেশিরভাগ সময় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। এর বিপরীতে ঢাকার অন্যান্য ফ্লাইওভারগুলো মোটেও নিরাপদ বা পরিচ্ছন্ন নয়। কুড়িল ফ্লাইওভারে একবার উঠলে শুধুমাত্র অপরিচ্ছন্ন পরিবেশের জন্য কেউ আর দ্বিতীয় বার উঠতে চাইবে না। শুধু অপরিচ্ছন্ন তা নয়, ভেঙেচুরে একাকার হয়ে যাওয়া এ ফ্লাইওভারটি অবহেলা অযত্মে পরিত্যক্ত হতে চলেছে। অপরচ্ছিন্ন পরিবেশের কারণে রাতে নেশাখোরদের আাড্ডা জমে কুড়িল ফ্লাইওভারে। কুড়িল থেকে ওঠার সময় কয়েকটি স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হলেও সেদিকে কারো নজর নেই। ভুক্তভোগিরা জানান, বিমানবন্দর সড়কসহ গুলশান-বনানী ও ক্যান্টনেমেন্ট এলাকার যাত্রীদের চলাচলের জন্য এই ফ্লাইওভারটি মোটেও উপযোগী নয়।
উদ্ভোধনের পর থেকে হানিফ ফ্লাইওভারে পর্যাপ্ত বাতি জ্বলছে। বরং কোনো কোনো মোড়ে আলোর স্বল্পতা দেখা গেলে সেখানে বাতির সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। এ কারণে এ ফ্লাইওভারে নিরাপত্তার ঝুঁকি কম। তবে গুলিস্তান থেকে ঢাকা-মাওয়া সড়কের দিকে যেতে যে র্যাম্প আছে সেখানে রাতের বেলা কিছু যুবক-যুবতী আড্ডা দেয়। এতে অনেকেই আতঙ্কিত। জুরাইনের এক ব্যবসায়ী বলেন, ফ্লাইওভারের ধোলাইপাড় অংশটি দিয়ে তুলনামূলক কম গাড়ি চলাচল করে। এই সুযোগে এ অংশকে ডেটিং স্পট হিসাবে ব্যবহার করছে কিছু উচ্ছৃঙ্খল যুবক। যাদের অধিকাংশই মোটরসাইকেল নিয়ে হাজির হয়। রাতের বেলা অনেককে আপত্তিকর অবস্থায় দেখা যায়। এটা বন্ধ হওয়া দরকার। পক্ষান্তরে মালিবাগ-মগবাজার ফ্লাইওভারে উদ্বোধনের পর গত প্রায় দুই বছরেও বাতি জ্বলেনি বললেই চলে। প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে এতে। ছিনতাইকারীদের নিরাপদ জোনে পরিণত হয়েছে মালিবাগ ফ্লাইওভার। কিছুদিন আগেও এ ফ্লাইওভারের উপরে খুনের ঘটনা ঘটেছে। সেই থেকে ভুতুড়ে এ ফ্লাইওভারে রাতে যানবাহন অনেক কমে গেছে।
এদিকে, চালু হওয়ার পর পরই হানিফ ফ্লাইওভারে সিঁড়ি লাগিয়ে যাত্রীওঠানামা করানো হতো। বাসগুলো ফ্লাইওভারের উপরেই দাঁড়াতো। শুরুর প্রথম বছরে পর পর কয়েকটি দুর্ঘটনায় বেশ কয়েকজনের মৃত্যূর ঘটনায় সিঁড়িগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। ২০১৬ সালে আবার নতুন করে সিঁড়িগুলো খুলে দেয়া হয়। একই সাথে নতুন নতুন মিলিয়ে মোট ৭টি সিঁড়ি লাগানো হয়। ফ্লাইওভারের উপরে বাস ও টেম্পু স্ট্যান্ডও বানানো হয়। গাড়িগুলো যাতে দ্রুত গতিতে চলতে না পারে সেজন্য ওপরের রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে রাখা হয়। শেষ পর্যন্ত উচ্চ আদালতের নির্দেশে সিঁড়িগুলো অপসারণ করে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। এখন সিঁড়ি নেই। ফ্লাইওভারের উপরে দুএকটি স্থানে বাস দাঁড়ায়। যাত্রাবাড়ী থেকে গুলিস্তান আসার সময় আগে রাজধানী মার্কেটের কাছে টিকাটুলি মোড়ে সবগুলো বাস দাঁড়াতো। কিছুদিন যাবত সেটাও বন্ধ করা হয়েছে। আলাপকালে হানিফ ফ্লাইওভারের উপর দিয়ে যারা নিয়মিত যাতায়াত করেন তারা পরিচ্ছন্নতার জন্য এই ফ্লাইওভারের প্রশংসা করে বলেছেন, পরিচ্ছন্ন পরিবেশে কার না চলতে ভালো লাগে?
২০১৩ সালের ১১ অক্টোবর দেশের দীর্ঘতম ফ্লাইওভার মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এটি সরকারি-সেরকারি অংশীদারিত্বে নির্মিত দেশের প্রথম কোনো প্রকল্প। এটির চুক্তি স্বাক্ষর হয় ২০০৫ সালের ২১ জুন। আর প্রথম নির্মাণকাজ উদ্বোধন হয় ২০০৬ সালের ৪ জুন। দ্বিতীয়বার নির্মাণকাজ শুরু হয় ২২ জুন ২০১০। এটির দৈর্ঘ্য ১১.৮ কি.মি. র্যাম্পসহ। এর লেন : ৪টি। পাইল সংখ্যা : ২,৩৬৬টি। পিলার সংখ্যা : ৩১৫টি। সেগমেন্টাল স্প্যান সংখ্যা : ২১৪। টোল প্লাজা : ৭টি। কনসেশন পিরিয়ড : ২৪ বছর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।