পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বরিশাল বিভাগীয় সদরে প্রায় ১৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রথমবারের মত জাতীয় পর্যটন প্রতিষ্ঠানের আবাসন ও চিত্ত বিনোদন সুবিধা সম্বলিত অবকাঠামো নির্মিত হতে যাচ্ছে। এর মধ্যে প্রায় ১৫৩ কোটি টাকা ব্যয়ে বরিশাল মহানগরীতে একটি পর্যটন মোটেলসহ ট্রেনিং ইনস্টিটিউট এবং নগরীর অদূরে মাধবপাশা দূর্গাসাগর দীঘির পাড়ে ১৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি বিশ্রামাগারসহ পিকনিক স্পট গড়ে তোলা হবে। ফলে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে ভ্রমণ পিপাসু মানুষের দীর্ঘদিনের আবাসন সঙ্কটসহ চিত্ত বিনোদনের অভাব ঘুচতে যাচ্ছে। দূর্গাসাগরের প্রকল্পটি ইতোমধ্যে চ‚ড়ান্ত অনুমোদন লাভ করেছে। আগামী জানুয়ারী মাসের মধ্যে দূর্গাসাগরে অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শুরু হবে। বরিশাল মহানগরীর প্রকল্পটিও একনেকের অনুমোদন শেষে চলতি অর্থবছরে কাজ শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে।
বরিশালই একমাত্র বিভাগীয় সদর যেখানে এখন পর্যন্ত জাতীয় পর্যটন প্রতিষ্ঠানের কোন স্থাপনা নেই। নতুন এসব অবকাঠামো নির্মিত হলে শুধু বরিশাল মহানগরী নয় সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের পর্যটন সুবিধাই স¤প্রসারিত হবে। এমনকি এ পর্যটন মোটেল কুয়াকাটাসহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে ভ্রমণে আসা পর্যটকদের জন্য একটি ট্রানজিট স্পট হিসেবেও কাজ করবে। একই সাথে ঢাকার বাইরে বরিশালে একটি হোটেল ম্যানেজমেন্ট ও ট্যুরিজম ট্রেনিং সেন্টার স্থাপিত হতে যাচ্ছে। এর ফলে দেশে বিদেশে বিপুল চাহিদার এ ধরনের দক্ষ কর্মী গড়ে তোলা সম্ভব হবে। উপকৃত হবে দক্ষিণাঞ্চলের শিক্ষিত বেকার তরুণ সমাজ।
দীর্ঘ দিনের দাবির প্রেক্ষিতে সাবেক বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বরিশালে পর্যটন সুবিধা স¤প্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তিনি বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলাপ করে সবুজ সঙ্কেত লাভের পরে নগরীতে পর্যটন মোটেলের জন্য জমি খুঁজতে শুরু করেন। কিন্তু সুবিধাজনক স্থানে কোন খালি জমি না পাওয়ায় অবশেষে নদী বন্দরের কাছে বিআইডবিøউটিএর পরিত্যক্ত নৌ কারখানার খালি জমিতে পর্যটন মোটেল নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
কিন্তু বিষয়টি নিয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দীর্ঘ টানা পোড়নে অনেক সময় পেরিয়ে যায়। অবশেষে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে নদী বন্দরের অদূরে বাঁধ রোডের পাশে কীর্তনখোলা নদীর তীরে বিআইডবিøউটিএর মেরিন ওয়ার্কশপের অভ্যন্তরে এক একর জমি পর্যটন কর্পোরেশনকে ৩০ বছরের জন্য লিজ প্রদানে সরকারি নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। এরই প্রেক্ষিতে দুটি রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চুক্তিপত্র সম্পাদন হয়েছে বছর দুয়েক আগে। চুক্তি অনুযায়ী লিজকৃত জমিতে পর্যটন স্থাপনা গড়ে তুলবে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন (বিপিসি)। জমির ভাড়া ছাড়াও পর্যটন মোটেলটির লাভ-লোকসানের অংশীদারিত্ব থাকবে বিআইডবিøউটিএর।
তবে চুক্তিপত্র সম্পাদনের প্রায় দু’বছর পরেও পর্যটন মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিয়ে খুব বেশিদূর এগুতে পারেনি। বিপিসির পক্ষ থেকে ‘বরিশাল পর্যটন মোটেল ও ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন প্রকল্প’ নামের একটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) মন্ত্রণালয়ে দাখিল করা হয়েছে। একাধিক লিফট সম্বলিত ৮তলা মোটেল ভবনটিতে ৮০টি কক্ষ থাকবে। যার মধ্যে দুটি এক্সিকিউটিভ স্যুট, ৩৮টি দৈত শয্যার কক্ষ ও ৪০টি তিন শয্যার কক্ষ থাকবে। এছাড়াও অত্যাধুনিক মানসম্মত রেস্ট্রুরেন্ট, পুল ক্যাফে, সুইমিং পুল, জিম ও স্পা সুবিধা থাকবে এ মোটেলটিতে। ভবিষ্যতে এখানে রিভার ক্রুজের ব্যবস্থা সম্বলিত আরো একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে পর্যটকরা মোটেলটির পার্শ্ববর্তী কীর্তনখোলা নদীতে নৌ বিহারও করতে পারবেন।
বরিশালের এ পর্যটন মোটেলে সংযুক্ত ট্রেনিং সেন্টারটিতে প্রতি ব্যাচে ৪০ জন করে হোটেল ম্যানেজমেন্ট ও ট্যুরিজমের ওপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারবেন। সাড়ে ৩ মাসের এ প্রশিক্ষণ শেষে সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে। বরিশালে মোটেল ও ট্রেনিং সেন্টারটির কাজ আগামী বছরের জানুয়ারী থেকে ২০২২ সালের জুন মাসের মধ্যে শেষ করার কথা রয়েছে ডিপিপিতে। তবে সব কিছুই নির্ভর করছে প্রকল্পটির চুড়ান্ত অনুমোদনের ওপর। এখনো এ সংক্রান্ত ডিপিপি মন্ত্রণালয়ের যাচাই পর্যায়ে রয়েছে। সেখানের অনুমোদন শেষে পরিকল্পনা কমিশনে যাবে। পরিকল্পনা কমিশনের কারিগরি কমিটি ও প্রি-একনেকের অনুমোদনের পরে তা চুড়ান্ত অনুমোদনে একনেকে উপস্থাপন করতে কতদিন লাগবে তা বলতে পারেননি পর্যটন কর্পোরেশনের দায়িত্বশীল কেউ।
অপরদিকে বরিশাল মহানগরী থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দূরে মাধবপাশার ঐতিহাসিক দূর্গাসাগর দীঘিরপাড়ে ১৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি অত্যাধুনিক বিশ্রামাগারসহ রেস্ট্রুরেন্ট ও পিকনিক স্পট গড়ে তোলা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনের অনুমোদন লাভ করেছে। আগামী জানুয়ারীর মধ্যেই প্রকল্পটির অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শুরুর কথা রয়েছে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী দূর্গাসাগর দীঘির পূর্বপাড়ে ৩ তলা ভিতের ওপর একটি দোতালা বিশ্রামাগার ভবন নির্মাণ করা হবে। নিচতলায় রেস্ট্রুরেন্ট ও সুভেনির শপ থাকবে। দোতালায় মূল বিশ্রামাগারে থাকবে ৮টি কক্ষ। এছাড়া পূর্ব পাড়ে একটি ঘাটলা ও দক্ষিণ পাড়ে কয়েকটি পিকনিক শেড নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন পর্যটন কর্পোরেশনের জিএম (পরিকল্পনা)। দীঘিটির চার পাশে ওয়াকওয়ে নির্মাণসহ পুরনো দুটি ঘাটলা সংস্কার করা হবে। তবে দীঘিটির পাড়ে একটি ওয়াচ টাওয়ার স্থাপনের প্রস্তবনা বাদ দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। পর্যটন কর্পোরেশনের এ দুটি প্রকল্পই পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে পর্যটন কর্পোরেশন সরাসরি বাস্তবায়ন করবে বলে জানা গেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।