Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘কাশ্মীরিদের অধিকার ফিরিয়ে দাও’

বিক্ষোভ সমাবেশে খালেকুজ্জামান

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম | আপডেট : ৪:৫৯ পিএম, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

কাশ্মীরি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার ফিরিয়ে দেয়া, আসামের নাগরিক তালিকা করে বাংলাদেশের ওপর চাপ প্রয়োগের ষড়যন্ত্র এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সরকারের ব্যর্থতার প্রতিবাদে বাসদ গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। সমাবেশে বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বাংলাদেশ সরকারকে ভারতের প্রতি অনুগত না থেকে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এখনই আসামের এনআরসি বিষয়ে সতর্ক থাকা, পুশব্যাকের ভারতীয় নীলনকশা ঠেকাতে সীমান্তে বিজিবির নজরদারি জোরদার করা এবং কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়ানোর জোর দাবি জানান। তিনি ভারতীয় শাসকগোষ্ঠীর এহেন চক্রান্তের বিরুদ্ধে দেশের সকল বাম প্রগতিশীল দেশপ্রেমিক জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।

খালেকুজ্জামান বলেন, বন্ধুত্বের নামে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে সুর মেলাচ্ছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এটা নতজানু পররাষ্ট্রনীতির বহিঃপ্রকাশ। আমামের এনআরসি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়। অথচ বাংলাদেশ সরকারও এ বিষয়কে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে উল্লেখ করছে। তিনি বলেন, ঐতিহাসিক সম্মতির মাধ্যমে স্বীকৃত সাংবিধানিকভাবে গৃহীত কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা ও বিশেষত্ব ভারতের স্বাধীনতার পর থেকে চলে আসছে। সেকুলার ঘোষিত ভারতকে হিন্দুত্ববাদী শৃঙ্খলে শক্তপোক্ত করে বাঁধার অংশ হিসেবে গেরুয়াধারী বিজেপি সরকার বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে ৩৭০ ধারা ও ৩৫(ক) বাতিলের মধ্য দিয়ে পরিকল্পিতভাবে এহেন উসকানিমূলক পদক্ষেপ নিয়ে রাজ্য মর্যাদার স্থান থেকেও জম্মু কাশ্মীরকে নিচে নামিয়ে আনলো। কাশ্মীরের মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।

খালেকুজ্জামান বলেন, উন্নয়নের ডামাডোল বাজতে থাকা বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ রাজনীতি, অর্থব্যবস্থা, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতিজনিত সঙ্কটের মাঝেই চারিদিক থেকে বাহ্যিক বহুমাত্রিক সঙ্কট ক্রমাগত চেপে আসছে। মিয়ানমার ১০-১১ লাখ রোহিঙ্গা ঠেলে দিয়েছে, ভারত আসাম থেকে কখনো ৪০ লাখ, কখনো ২০ লাখ আসাম নিবাসীকে বাংলাদেশী বলে বাংলাদেশে পাঠাতে চাইছে, চারিদিকে কাঁটাতার, ন্যায্য পানির হিস্যা বঞ্চনা, সাগরের তেল-গ্যাস লুণ্ঠনের নতুন মহড়া ইত্যাদি মিলে সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি, কূটনীতি ও পদক্ষেপসমূহের দৈন্য ও ব্যর্থতার খেসারত বহু মূল্যে দেশবাসীকে দিতে হবে, যা কাক্সিক্ষত ও প্রত্যাশিত ছিল না।

খালেকুজ্জামান বলেন, একদিকে রোহিঙ্গা সঙ্কট, অন্যদিকে আসামে নাগরিক তালিকা দিয়ে বাদ পড়াদের বাংলাদেশে পুশব্যাপক করার ষড়যন্ত্র, ব্যাংক ও আর্থিক খাতে সীমাহীন লুটপাট, মেগা প্রকল্পে মেগা দুর্নীতি, জনগণের বাক স্বাধীনতা হরণ, গণতান্ত্রিক অধিকার ভোটাধিকার হরণ, সাগরের গ্যাস-ক্ষেত্র রফতানির বিধান রেখে মডেল পিএসসি ২০১৯ প্রণয়ন করে জাতীয় স্বার্থ জলাঞ্জলি দিচ্ছে, বিদেশী কোম্পানি ও দেশীয় কমিশনভোগীদের স্বার্থ রক্ষা করার পাঁয়তারা চলছে। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় নির্মিত মহাসড়কে আবার জনগণের কাছ থেকে ট্যাক্স-টোল আদায়ের পরিকল্পনা করছে। এক কথায় দেশে যে চরম ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন চলছে তার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ গণ-আন্দোলন গড়ে তোলা এবং শাসক বুর্জোয়া শ্রেণির বিরুদ্ধে বাম গণতান্ত্রিক বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তোলার জন্য সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।

ঢাকা মহানগর বাসদের আহ্বায়ক বজলুর রশীদ ফিরোজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড রাজেকুজ্জামান রতন, কেন্দ্রীয় পাঠচক্রের সদস্য নিখিল দাস ও জুলফিকার আলী। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ