পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
উন্নত দেশের মতো বাংলাদেশের মহাসড়কেও টোল বসানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে আদায়কৃত টোলের টাকা রাখার জন্য একটি আলাদা অ্যাকাউন্ট করার কথা বলেছেন। সেই অর্থ দিয়ে যেন মহাসড়কের সংস্কার করা যা, এ বিষয়েও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
গতকাল মঙ্গলবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) এর বৈঠকে দেশের ২১টি মহাসড়কে এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপন শীর্ষক প্রকল্প অনুমোদন দিতে গিয়ে এ নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। একনেকে মোট ১০ প্রকল্পে অনুমোদন দেয়া হয়। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট খরচ ধরা হয়েছে ৬ হাজার ৩২৬ কোটি ২৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৫ হাজার ৩২৬ কোটি ৯১ লাখ টাকা এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থা থেকে ৯৯৯ কোটি টাকা খরচ করা হবে। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা। পরে সংবাদ ব্রিফিং এ প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন নির্দেশনার বিষয়ে জানান পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা সচিব নুরুল আমিন, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম এবং ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য শামীমা নার্গীস।
পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, উন্নত দেশের মতো আমাদের দেশেও বড় বড় মহাসড়ক যেমন ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা রংপুর ও ঢাকা-ময়মনসিংহ এসব মহাসড়কে টোলের ব্যবস্থা রাখতে হবে। শুধু তাই নয়, টোলের মাধ্যমে আদায় করা টাকা রাখার জন্য একটি আলাদা অ্যাকাউন্ট করতে হবে। সেই টাকা দিয়ে মহাসড়কগুলো সংস্কার করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ব্রিজে আমরা টোল নিই। সড়ক নয়, জাতীয় মহাসড়কগুলোতে থাকা ব্রিজ ছাড়াও রাস্তার ওপর টোল বসানো হবে। সারাবিশ্বে তাই আছে। টোলে কত টাকা নির্ধারণ হবে, সেটা ঠিক করব এখন। কারণ এইভাবে আর পারা যাবে না। বর্তমান সরকার প্রধানের নির্দেশ তুলে ধরে এম এ মান্নান আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই টাকা ব্যয় করা হবে রাস্তা মেরামতে। পশ্চিমা দেশে এটা খুবই জনপ্রিয়। এটাকে তারা বলে ‘ইউজার পেইড’ বা ব্যবহার করেন, পেমেন্ট করেন। এই টোলের টাকা আলাদা অ্যাকাউন্টে যাবে। এগুলো রাস্তার মেরামতে ব্যয় করা হবে।’ কীভাবে টোল আদায় হবে এমন প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশে আমরা যেটা দেখেছি, সেকশন সেকশন হয়। ধরুন, ২০০ মাইল রাস্তা। প্রত্যেক ৫০ মাইল রাস্তায় একটা গেট থাকে। স্থানীয় গাড়িগুলো ১০ মাইল গিয়ে আরেক রাস্তায় গেলে টোল আসবে না। লং ডিসটেন্স ট্রাভেলারদের (দূরবর্তী যানবাহন) জন্য এটা হবে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কাজ করবে আমাদের প্রকৌশলীরা। এখানে অযৌক্তিক কিছু হবে না বলেও জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।
২১টি মহাসড়কে এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপনের বিষয়েও নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। পরিকল্পনা মন্ত্রী জানান, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন আছে। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে কেউ যাতে টেম্পারিং করতে না পারে। এটা সময়ের দাবী। কিন্তু এমন সিস্টেম করতে হবে যাতে লোক থাকুক আর নাই থাকুক এর উপর দিয়ে গাড়ী গেলেই যেন গাড়ীর নাম, নাম্বার, ওজন এবং বিস্তারিত উঠে যায়। এসব তথ্য যেন কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো একটি জায়গা থেকে মনিটরিং করা হয়। তাছাড়া ট্রাক বা কাভার্ডভ্যানগুলো যেন নির্দিষ্ট মাপের তুলনায় বেশি না হয়।’
প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শের বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী আরো জানান, যে কোনো উন্নয়ন প্রকল্পের প্রয়োজনীয় জনবল যেন আগে থেকেই নিয়োগের ব্যবস্থা করা হয়। তাদের প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য কার্যক্রমের ব্যবস্থা প্রকল্পের মধ্যেই থাকতে হবে। যাতে প্রকল্প শুরু হলে জনবলের কারণে বাস্তবায়ন বাঁধাগ্রস্ত না হয়।
জেলা খানার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বিষয়ে এমএ মান্নান বলেন, দেশের সব জেল খানায় ভার্চুয়াল কারাগার স্থাপন করতে হবে। যাতে দুর্ধষ আসামীদের জেল থেকে আদালতে টানাটানি করতে না হয়। যেসব আসামীর ছিনতাই বা অন্য কোনো সমস্যা থাকতে পারে সেসব আসামীকে ক্যামেরার মাধ্যমে এজলাসে বসেই বিচারক যাতে বিচার করতে পারেন।
প্রধানমন্ত্রীর বরাত দিয়ে এম এ মান্নান আরও জানান, দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কি পরিমাণ শিক্ষার্থী আছে তার একটি পরিসংখ্যান চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বলেছেন পুরনো বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে যাতে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয় যে তারা কত শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারবে। এজন্য একটি নীতিমালা করতে হবে। প্রয়োজন হলে যেসব জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় নেই সেসব জেলায় নতুন করে করতে হবে।
একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে- কুড়িগ্রাম (দাসের হাট)-ভুরুঙ্গামারী-সোনাহাট স্থলবন্দর সড়ককে জাতীয় মহাসড়কে উন্নীতকরণ প্রকল্প, এর খরচ ধরা হয়েছে ৬৮৫ কোটি টাকা। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আওতাধীন গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে পণ্যবহনের উৎসমুখে এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা। ভুয়াপুর-তারাকান্দি জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৩০৭ কোটি টাকা। চারলেনে উন্নীত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চার বছরের জন্য পারফরম্যান্স বেইজড অপারেশন ও দৃঢ়করণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৭৯৩ কোটি টাকা।
পানির গুণগতমান পরীক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১৭৮ কোটি টাকা। নরসিংদী জেলা কারাগার নির্মাণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৩২৬ কোটি টাকা। মানসম্পন্ন বীজ আলু উৎপাদন ও সংরক্ষণ এবং কৃষক পর্যায়ে বিতরণ জোরদারকরণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৬৮৮ কোটি টাকা। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কাব-স্কাউটিং সম্প্রসারণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৩৫৫ কোটি টাকা। পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৪৫১ কোটি টাকা। কনভারশন অব ১৫০ মেগাওয়াট সিলেট গ্যাস টারবাইন পাওয়ার প্ল্যান্ট টু ২২৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৯১০ কোটি টাকা।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।