Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ত্যাগ চাই মর্সিয়া ক্রন্দন চাহি না

মুহাম্মদ সানাউল্লাহ | প্রকাশের সময় : ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

নববর্ষ উদযাপন বলতে ইসলামে কোন বিষয় নেই। বরং বর্ষ উদযাপনের নামে জৈবিক উল্লাস আর বাধভাঙা নোংরামী ইসলামের দৃষ্টিতে কদর্য ও নিষিদ্ধ কাজ। পরকালের অভিযাত্রীদল হিসেবে চিরতরে ফেলে আসা বিগত সময়গুলোর জন্য আত্মবিশ্লেষণ করাই বরং উচিত। আমীরুল মুমিনীন উমার (রা.) বলেন :
‘তোমাদের নিজেদের হিসাব গ্রহণ কর তোমাদের কাছ থেকে হিসাব নেয়ার পূর্বে এবং সেসবকে ওজন করে নাও ওজন দেয়ার পূর্বে।’ তিরমিযী হা: ২৪৫৯

এভাবে আত্মবিশ্লেষণের পথ ধরে অতীতের ব্যর্থতার অনুতাপ ও আত্মপীড়ন থেকে উদ্ধার পেতে নতুন বছর বরং নতুন প্রত্যয়ের ল্যান্ডমার্ক হতে পারে। আগামীর প্রতিটি দিনে যেন সুন্দর ও পূণ্যময়তার বিশাল অর্জন জমা করা যায় তার জন্য চিত্তে ব্যকুলতা দেখা দিতে পারে। আর এটি হওয়া বড় কাম্য। মহান আল্লাহ বলেন :
‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহভীতি অবলম্বন কর এবং তোমাদের প্রত্যেকের উচিত চিন্তা করে দেখা, আগামীকালের জন্য সে কী (পূণ্য আকারে) অগ্রিম প্রেরণ করেছে। আর তোমরা আল্লাহভীতি অবলম্বন কর: তোমরা যা কর নিশ্চয় আল্লাহ সে সম্পর্কে সবিশেষ অবহিত। সূরা হাশর : ১৮

নববর্ষ উদযাপন তা ঈসায়ী কাল হোক আর হিজরী সাল হোক কোনটিই ইসলামে স্বীকৃত নয়। নববর্ষ উদযাপনের কোন আমল না রসূলুল্লাহ (স.) থেকে এসেছে, না সাহাবাগণ রাদিয়াল্লাহু আনহুম থেকে এসেছে। এ ধরনের কোন কাজের অস্তিত্ব পূর্ববর্তী জমহুর আলেমগণের মধ্যে আদৌ বিদ্যমান ছিল না।
মহানবী (স.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি এমন আমল করল যে আমল আমরা করিনি, তা পরিত্যাজ্য। সহীহ মুসলিম হা: ১৭১৮

ঘটা করে নববর্ষ উদযাপন করা, ঈদের ন্যায় এই সময় আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠা এসব কিছুই বিজাতীয় রীতিনীতি, মহান আল্লাহ বলেন :
‘বলুন আল্লাহর হিদায়াতই প্রকৃত হেদায়াত। আর যদি আপনার কাছে জ্ঞান আসার পরেও আপনি তাদের (ইয়াহুদ-নাসারা) অনুসরণ করেন তবে আল্লাহ পক্ষ থেকে আপনার কোন অভিভবক থাকবে না এবং কোন সাহায্যকারীও থাকবে না।’ সূরা বাকারা আয়াত: ১২০

বস্তুত ইয়াহুদ-নাসারাদের সভ্যতা সংস্কৃতির সাথে মিলে গিয়ে আমরাও আজ ধর্ম-কর্মের মৌলিকত্ব থেকে সরে পড়েছি। অথচ উচিত হলো তাদের আনন্দ উল্লাসপূর্ণ প্রবৃত্তিতাড়িত এসব কর্মকান্ড থেকে বেঁচে থাকা। উমার (রা.) বলেন :
তোমরা আল্লাহর দুশমনদের ঈদ থেকে বিরত থাকো। সহীহ বুখারী আত্তারীখুল কাবীর, হা: ১৮০৪
মহানবী (স.) এ মর্মে হুশিয়ার করেছেন: ‘যে বিজাতীয় সাদৃশ্য গ্রহণ করবে সে তাদের মধ্যেই গণ্য হবে।’ আবু দাউদ হা: ৪০৩১, সনদ হাসান

ইসলামে হিজরী সাল অপরিসীম গুরুত্ব বহন করে। ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব ও স্বকীয়তা বজায় রাখার এক অনন্য উদ্দেশেই হিজরী সালের প্রবর্তন। বিশ্বময় হিজরী সালের গুরুত্ব প্রতিষ্ঠা মুসলিম উম্মাহর প্রতিটি সদস্যের দায়িত্ব। একটি সালের বিদায় নেয়া এবং আরেকটি সালের আগমন যেন হয় গ্লানি ও অনুতাপ মুছে আল্লাহর আনুগত্য ও পুণ্যশীলতার সৃদৃঢ় পদক্ষেপ। আমীন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ