পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কেউ তাকে মনে রাখেনি! নীরবে চলে গেল মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ আতাউল গণি ওসমানীর জন্মবার্ষিকী। গতকাল ছিল তার ১০১তম জন্মবার্ষিকী। কিন্তু কেউ তাকে স্মরণ করেনি। ১৯১৮ সালের পহেলা সেপ্টেম্বর সুনামগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এমএজি ওসমানী। তার বাবার নাম খান বাহাদুর মফিজুর রহমান, মাতা জোবেদা খাতুন। তার পিতৃপুরুষের বাড়ি সিলেট জেলার বালাগঞ্জ তথা বর্তমানে ওসমানীনগর থানা দয়ামীরে। তিনি ১৯৮৪ সালে ৬৬ বছর বয়সে লন্ডনের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
এমএজি ওসমানী ১৯৩৯ সালে জুলাই মাসে ব্রিটিশ ভারতের সেনাবাহিনীতে ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৪০ সালে ৫ অক্টোবর তিনি ইন্ডিয়ান মিলিটারি একাডেমি দেরাদুন থেকে সামরিক শিক্ষা সমাপ্ত করে ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান আর্মিতে কমিশন প্রাপ্ত হন। ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধে অংশ নেয়া ওসমানী কর্মময় জীবনে সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৬৭ সালের ১৬ ফেব্রæয়ারি অবসর গ্রহণ করে ১৯৭০ সালের জুলাই মাসে তিনি রাজনীতিতে যোগদান করেন। ওই বছরের ডিসেম্বরে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ফেঞ্চুগঞ্জ-বালাগঞ্জ-বিশ্বনাথ থানার সমন্বয়ে গঠিত আসন থেকে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করে পাকিস্তানের গণপরিষদে জয়লাভ করেন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে জাতির সঙ্কটময় মুহূর্তে তিনি মুক্তিযুদ্ধের অধিনায়ক নিযুক্ত হন এবং শত্রুর বিরুদ্ধে মোকাবেলা করার স্বার্থে একটি সেনাবাহিনী, একটি গেরিলা বাহিনী গড়ে তোলেন। চরম বিপর্যয়ের মোকাবেলায় অসম ও অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে তিনি পাকিস্তানের সুশিক্ষিত ও সুসজ্জিত শত্রুবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়ে সশস্ত্র যুদ্ধ বিজয় অর্জন করেন।
জাতির প্রতি তার চরম ত্যাগ ও মহান সেবার স্বীকৃতি স্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্নেল ওসমানীকে জেনারেল পদে সম্মানিরত করেন। ১৯৭২ সালের ৭ এপ্রিল হতে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়কের পদ বিলুপ্ত হওয়ায় তিনি সামরিক বাহিনী থেকে ছুটি নেন এবং বাংলাদেশ গণপরিষদের সদস্য হিসেবে পরিষদের আসন গ্রহণ করেন।
ওসমানী ১৯৭২ বঙ্গবন্ধুর সরকারের জাহাজ চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌ ও বিমান চলাচল মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। অতঃপর ১৯৭৩ সালের নির্বাচনের পরও আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী হন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর বাকশাল গঠন প্রশ্নে ভিন্নমত পোষণ করে ১৯৭৪ সালের ১ মে তিনি মন্ত্রিসভা ও সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তিনি ১৯৭৫ সালের ২৯ আগস্ট তৎকালীন প্রেসিডেন্ট খন্দকার মোশতাক আহমদের অনুরোধে প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ৩ নভেম্বর পদত্যাগ করেন। ১৯৭৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর নিজস্ব রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় জনতা পার্টি’ গঠন করেন। তিনি ১৯৭৮ এবং ১৯৮১ সালে দু’বার প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেন।
মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেয়া জাতির এই কৃতি সন্তানের কথা কেউ মনে রাখেনি। গতকাল ১০১তম জন্মদিনে একটি প্যাড সর্বস্ব দল তাকে স্মরণ করেছে। বলা যায় নীরবে চলে গেছে জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তানের জন্মবার্ষিকী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।