পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর তাজমহল রোড পার্কে অবৈধভাবে গড়ে তোলা স্থাপনা উচ্ছেদ নিয়ে উত্তর সিটি কর্পোরেশনের অভিযানের সময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ঢিল ছোঁড়াছুড়ির ঘটনা ঘটেছে। ডিএনসিসির দুজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একটি দল গতকাল রোববার দুপুরে তাজমহল রোডের সি-বøকের খেলার মাঠ ও পার্কের দক্ষিণ পশ্চিম কোনায় থাকা একটি টিনশেড উচ্ছেদ করতে গেলে এ ঘটনা ঘটে। তাজমহল রোড মাঠের একাংশে গড়ে তোলা ওই ঘরটি জামি’আ বাইতুল আমান মিনার মসজিদ ও ইসলামী কেন্দ্রের রান্না ঘর হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল।
ঘরটি ভাঙতে গেলে প্রথমে মাদরাসার শিক্ষার্থীরা সিটি কর্পোরেশনের কর্মী এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে গরম পানি, মরিচের গুঁড়া এবং ইটপাটকেল ছুড়ে মারে। এর পাল্টায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও লাঠিসোঁটা নিয়ে মাদরাসা ছাত্রদের ধাওয়া দিলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় ইটের আঘাতে এক মাদরাসা ছাত্র আহত হন বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।
নাজমুল ইসলাম নামে এক মাদরাসা ছাত্র বলেন, ওই ঘরটি প্রায় ৬০০ ছাত্রের রান্নার কাজে ব্যবহৃত হতো। আমরা বলেছিলাম আমাদেরকে বিকল্প একটি জায়গা দিয়ে ঘরটি ভেঙে দিতে। কিন্তু কোনো বিকল্প ব্যবস্থা না রেখে সেটা ভেঙে দিল। গতকাল আমাদের রান্না হয়নি। এখন আমাদের রান্না কোথায় হবে, আমরা কি খাব জানি না।
প্রায় আধা ঘণ্টা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার পর ডিএনসিসির কর্মকর্তা, পুলিশ ও স্থানীয়রা মাদরাসার শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আধাপাকা ওই ঘরটি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
ডিএনসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাজিদ আনোয়ার সাংবাদিকদের বলেন, রাজধানীর মাঠ ও পার্ক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় তাজমহল রোড মাঠেরও সৌন্দর্যবর্ধন ও সংস্কার কাজ চলছে। ইতোমধ্যে নব্বই শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আমরা ছয় মাস আগে থেকেই মাদরাসা কমিটির লোকজনকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। আলাদা জায়গায় রান্নাঘর তৈরি করে দেওয়ার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছ। কিন্তু তারা মানেননি। এজন্য উচ্ছেদ করতে হয়েছে। উচ্ছেদ অভিযান চালানোর সময় মাদরাসা পরিচালনা কমিটির লোকজন শিক্ষার্থীদের উসকে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপস্থিতির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ডিএনসিসির সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর আলেয়া সারোয়ার ডেইজি সাংবাদিকদের বলেন, আওয়ামী লীগের কেউ লাঠি হাত ছিল না। অতি উৎসাহী হয়ে কেউ লাঠি নিয়ে থাকলে আমি তাদের বলেছি- তোমরা আওয়ামী লীগের লোক হলে এ ধরনের কাজ করবে না। এটা বলার পর তারা তাৎক্ষণিক লাঠি ফেলে দিয়েছে। এখানে আমরা জনগণের সেবা করতে এসেছি, মারামারি করতে আসিনি। সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা কর্মচারীরা চলে যাওয়ার পর বিক্ষুদ্ধ মাদরাসা ছাত্ররা আবারও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ধাওয়া দেয়। এ সময় মাঠে থাকা নির্মাণসামগ্রী ভাঙচুর করে তারা। উন্নয়ন কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারের অস্থায়ী কার্যালয়ও ভেঙে ফেলা হয়। জামি’আ বাইতুল আমান মিনার মসজিদ ও ইসলামী কেন্দ্রের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মকবুল হোসেন এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম রতন বলেন, পার্কের নির্মাণ সামগ্রী লুট করে নিয়ে গেছে। ইগো প্রবলেমের কারণে মকবুল সাহেব এই কাজে বাধা দিচ্ছে। তিনি ওই মসজিদ কমিটির সভাপতি। আমরা তাদের বলেছি, ঘরটা যেহেতু অবৈধভাবে বানানো হয়েছে এটা সরিয়ে নিন। আমরা বিকল্প জায়গায় ভবন করে দেই। উনি নিজেও মেয়রের সঙ্গে কথা বলেছেন কয়েকবার। কিন্তু তারা কোনো কথাই শুনছেন না। গতকাল যে ঘটনা ঘটানো হয়েছে, এরপরে কী হবে আমি ঠিক জানি না। অন্যদিকে মসজিদ ও মাদরাসা কমিটির সভাপতি মকবুল হোসেন দাবি করেন, ওই মাঠের মালিক সিটি কর্পোরেশন নয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।