আকাশে মেঘ-বজ্রের ঘনঘটায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত। আবার কখনো তালপাকা গরম। এইতো ভাদ্রের ‘স্বাভাবিক’ আবহাওয়া। কিন্তু শ্রাবণের শেষ দুই সপ্তাহ থেকে ভাদ্র মাসের গেলো ষোলো দিন মিলে অন্তত টানা চার সপ্তাহ বা প্রায় এক মাস ধরে দেশে নেই মেঘ-বাদল। বরং উটকো গরমে-ঘামে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা হয়ে উঠেছে অসহনীয়।

আজও (রোববার) ঢাকাসহ দেশের অধিকাংশ স্থানে উল্লেখযোগ্য হারে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। বরং কোথাও কোথাও বাড়তে পারে গরমের তেজ। তবে আর দুয়েকদিন পর স্বস্তির বৃষ্টির সম্ভাবনা দেখছে আবহাওয়া বিভাগ।
গতকাল (শনিবার) সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় বিক্ষিপ্ত দুয়েক জায়গায় ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি ছাড়া তেমন কোনো বৃষ্টিপাত হয়নি। সারাদিনে বিচ্ছিন্নভাবে কুমিল্লায় ৩১ মিলিমিটার, ঈশ্বারদীতে ১৫, রাজারহাটে ৮, টেকনাফে ৭, সিলেটে ৬ মি.মি. বৃষ্টিপাত ছাড়া সমগ্র দেশে খরতপ্ত আবহাওয়া বিরাজ করছে। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ভোলায় ৩৫.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকার তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৩৩.২ এবং সর্বনিম্ন ২৯.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এরমধ্যে রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পারদ উঠে গেছে অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বে। গতকাল সারাদেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৭ থেকে ২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও বেশি। এতে করে তীব্র গরমে স্বস্তি মিলছে না দিনে-রাতে। বিদ্যুতের বিভ্রাট ও লোডশেডিংয়ের কারণে মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়ে গেছে। বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমান অস্বাভাবিক বেশি থাকায় গরমের সাথে অতিরিক্ত ঘাম ঝরছে, মানুষ দ্রুত কাহিল ও অসুস্থ হয়ে পড়ছে। গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতার হার ছিল ৭৪ শতাংশ, যা সকালে ছিল ৯২ শতাংশ। এ সময় আবার অনেকে গরমে স্বস্তির জন্য গলা ভেজাতে গিয়ে রাস্তাঘাটের পাশে খোলা জায়গায় বরফ মেশানো দূষিত শরবৎ ও হরেক রকম পানীয় পান করে ডায়রিয়া, জন্ডিসসহ বিভিন্ন রোগে অসুস্থ হচ্ছে।

আজ (রোববার) সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায়, ঢাকা ও খুলনা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। কোথাও কোথাও হতে পারে মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ।

আজ দেশের দক্ষিণাঞ্চলে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। তবে দেশের অন্যত্র তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় বৃষ্টি-বজ্রবৃষ্টির প্রবণতা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এরপরের ৫ দিনে আবহাওয়ায় সামান্য পরিবর্তন হতে পারে।

আবহাওয়া বিভাগ জানায় বর্ষার মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং বঙ্গোপসাগরে দুর্বল থেকে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।