পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের স্মরণে গণভবনে আয়োজিত ছাত্র সমাবেশে ভেতরে ঢোকা নিয়ে বিবাদে জড়িয়েছে ছাত্রলীগ। নিজেদের মধ্যে ধাক্কা-ধাক্কি ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লাঠিচার্জে নারী নেত্রীসহ বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। এছাড়াও প্রচন্ড গরমে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থেকে অসুস্থ হয়েছেন অনেকে। এ ঘটনার জন্য নেতাদের অব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনার অভাবকে দায়ি করছেন ভুক্তভোগী নেতা-কর্মীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গত কমিটির কেন্দ্রীয় এক নেতা বলেন, সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নেতাকর্মীদের শৃঙ্খলাবদ্ধ করতে ব্যর্থ হয়। গণভবনের ভিতরে ঢোকা নিয়ে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা লাঠিচার্জ করে। এতে অনেকেই আহত হয়।
বিশৃঙ্খল এমন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় পড়ে ছাত্রলীগের নারী নেত্রীরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ছাত্রলীগের হল কমিটির এক নেত্রী গতকাল বিকেলে বলেন, এখানে প্রচুর ঠেলাঠেলি। কোনো লাইন নেই, কিচ্ছু নেই। ছেলেরা মেয়েদের একদম পিষে, অবস্থা অনেক খারাপ। মেয়েরা খুবই হেনস্তার শিকার হয়েছে। অনেকেই ধাক্কাধাক্কি করে ঢুকতে পারলেও ঢোকার সিস্টেমটা ভালো ছিল না। শৃঙ্খলার প্রচুর অভাব ছিল।
পরিস্থতি সমাল দিতে পরে হস্তক্ষেপ করেন আওয়ামীলীগের নেতারা। সংগঠনটির উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া কিছুক্ষণ পরপরই মাইকে ঘোষণা দিয়ে বিশৃঙ্খলাকারীদের শান্ত হওয়ার অনুরোধ করেন। ভুক্তভোগী নেতাদের অভিযোগ,শৃঙ্খলা রক্ষায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের সিনিয়র কাউকেই কাজে লাগানো হয় নি। এর ফলে কেন্দ্রীয়, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় ও মহানগর উত্তর-দক্ষিণের অনেক সিনিয়র নেতাই ঢুকতে পারে নি।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সকাল থেকে ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতা-কর্মীরা ছাত্র সমাবেশে যোগ দিতে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের গণভবনের সামনে জড়ো হন। দুপুরে সমাবেশস্থলে প্রবেশ করতে শুরু করে নেতা-কর্মীরা। একপর্যায়ে অনুষ্ঠানস্থলের ধারণক্ষমতা শেষ হয়ে যাওয়ায় গেট বন্ধ করে দেয় নিরাপত্তারক্ষীরা। পরে আসা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তখন ধাক্কাধাক্কি শুরু করলে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক ছাত্রলীগ কর্মী ইনকিলাবকে বলেন, আমরা প্রথমে যখন যাই তখন গেইট খুলেনি। পরে গেইট খোলার সময় অনেক নেতা-কর্মী একসঙ্গে ঢুকতে চাইলে সমস্যা হয়। এতে ধাক্কা-ধাক্কিতে অনেকে আহত হয়। ঢাবির মুহসীন হল ছাত্রলীগের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইনকিলাবকে বলেন, সারাদেশের সব ইউনিট থেকে নেতাকর্মীরা এসেছে। আমরা দেড় ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকার পর বলতেছে গেট বন্ধ, ভেতরে ঢোকা যাবে না। তবে, আমি চলে আসার সময় মহানগরের কর্মীদের বিবাদে জড়াতে দেখেছি।
ছাত্রলীগের গত কমিটির সহ-সম্পাদক এসএম মামুন বলেন, ছাত্রলীগের শোক দিবস উপলক্ষে এই আয়োজন সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক এর দায়ভার এড়াতে পারে না। তিনি বলেন, গণভবনে যারা আসবে তাদের পদবিসহ সংখ্যাটা অবশ্যই নির্ধারণ করে দেয়া উচিত ছিল। এ ধরনের কর্মসূচিতে শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের একটি টিম থাকে। তারাও এখানে কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে নি।
এদিকে, বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি হওয়ায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাসহ বিশ্ববিদ্যালয় ও হলের অনেক নেতা গণভবনের ভেতরে ঢুকতে না পেরে ফেরত আসেন। এ বিষয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় এক সহ-সভাপতি বলেন, সেখানে ৮-১০ হাজার লোক ছিল। এত ভিড় ছিল যে, ঢোকার কোনো সুযোগই ছিল না। এজন্য আমি ফেরত চলে এসেছি।
শিক্ষার্থীদের অসুস্থ হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করে ঢাবির একটি রুটের বাস ড্রাইভার বলেন, গণভবনের গেইটে কি হয়েছে জানি না, তবে হঠাৎ করেই শিক্ষার্থীরা একজন অসুস্থ ছাত্রীকে নিয়ে আসেন। তারা গাড়িতে উঠে গাড়ি ছাড়তে বলেন। এভাবে বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীসহ ১০-১১টি গাড়ি ফেরত আসে। মিরপুর রুটের একজন বাস ড্রাইভার বলেন, সেখানে অনেক ধস্তাধস্তি হয়েছে। একদম হাজী ক্যাম্পের মতো অবস্থা। কেউ পায়ের নিচে, কেউ শরীরের নিচে পড়েছে। ফলে বেশ কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়ে।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনের মুঠোফোনে কল এবং ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায় নি। আর সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর ফোনে বারবার কল দিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয় নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।