Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তবুও চলছে রিকশা

রাজধানীর ৩ সড়কে নিষেধাজ্ঞা বহাল

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে রাজধানীর তিনটি সড়কে রিকশা চলাচল নিষিদ্ধ করেছিল সরকার। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতাভুক্ত এ সড়কগুলো হলো, কুড়িল বিশ্বরোড থেকে মালিবাগ হয়ে সায়েদাবাদ, মিরপুর রোডের গাবতলি-ধানমন্ডি হয়ে আজিমপুর এবং সাইন্সল্যাব থেকে শাহবাগ পর্যন্ত সড়ক। পরীক্ষামূলকভাবে গত ৭ এপ্রিল থেকে প্রধান এ তিনটি সড়কে রিকশা চলাচল বন্ধ করার ঘোষণা দেওয়া হয়। এর আগে গত ৩ জুলাই রিকশা চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। সেদিনের ঘোষণার পর ৭ জুলাই ওই তিন সড়কের কোথাও কোথাও রিকশা বন্ধ হলে আন্দোলনে নামেন চালকরা। এরপর ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়রদের সঙ্গে রিকশাচালকদের পৃথক দু’টি সভা হয়। এসব সভায় সিদ্ধান্ত হয়, রাজধানীতে চলাচলকারী অবৈধ রিকশা বন্ধ করতে হবে। আর বৈধগুলোকে নির্দিষ্ট রুটে চলাচল করার সুযোগ দিতে হবে।

উভয়পক্ষের সেই সিদ্ধান্তের পর কয়েকদিন ওই তিন সড়কে রিকশা চলাচল বন্ধ থাকলেও তদরকির অভাবে এখন আবার অবাধে রিকশা চলাচল করছে। গতকাল শনিবার সরেজমিনে রামপুরা-মালিবাগ-সায়েদাবাদ সড়কে আগের মতোই রিকশার ভিড় দেখা গেছে। শুধু তাই নয়, রিকশার কারণে গাড়িগুলো নির্ধারিত গতিতে চলতে পারছে না-একাধিক স্পটে সেই চিত্রই চোখে পড়েছে।

দুই সিটি কর্পোরেশন প্রধান তিনটি সড়কে রিকশা চলাচল নিষিদ্ধ করার পর এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ভার পড়েছিল ট্রাফিক বিভাগের ওপর। তাদের শিথিলতার কারণেই আবার সড়কে রিকশা চলাচল করছে বলে জানান ভুক্তভোগিরা। বাস চালকরা জানান, নিষিদ্ধ ঘোষণার পর কয়েকদিন রিকশা চলাচল পুরোপুরি বন্ধ না হলেও সংখ্যা কমে গিয়েছিল। তখন যানজট অনেকটাই সহনীয় পর্যায়ে এসেছিল। এমনকি রাতে কুড়িল থেকে মালিবাগ পর্যন্ত সড়কের কোথাও কোনো যানজট ছিল না। যাত্রীরা আরামে কম সময়ে ভ্রমণ করার সুযোগ পেয়েছেন তখন। রামপুরার বাসিন্দা গোলাম মাবুদ নামে এক বেসরকারি চাকরিজীবী বলেন, রিকশা বন্ধের কয়েকদিন বাসে উঠে কয়েক মিনিটে মতিঝিলে এসেছি। অফিস শেষ করে সন্ধ্যার পর বাসায় ফিরতে আরও কম সময় লেগেছে। কিন্তু তিনি বলেন, যানজট নিরসনে সরকার হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প নিয়েছে। অথচ রিকশা বন্ধের সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে পরলো না। এটা খুবই দুঃখজনক। এভাবে প্রধান সড়কে রিকশা চললে যানজট নিরসন করা সম্ভব হবে বলে মনে হয় না।

জানা গেছে, রিকশা বন্ধে দুই সিটি কর্পোরেশনের সিদ্ধান্ত সমন্বয় করছে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ)। সিটি করপোরেশনের মেয়রকে কমিটির প্রধান করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু তারপরেও এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয়নি। বরং অনিয়মই এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রিকশা চলাচলের ব্যাপারে ডিটিসিএ নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রাকিবুর রহমান বলেন, প্রধান তিন সড়কে রিকশা চলবে না, সেই সিদ্ধান্ত এখনো বহাল রয়েছে। কিন্তু যাদের বাস্তবায়ন করার কথা, তারা যদি না করে থাকে, তার কারণ তারাই বলতে পারবে। তিনি বলেন, সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার যখন কাউন্ট করা হবে, তখন তাদের ব্যাখা চাওয়া হবে।
রাজধানীতে বৈধ রিকশার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি অবৈধ রিকশা চলাচল করে। ঢাকায় ১৯৮৬ সালের পর আর কোনো রিকশার লাইসেন্স দেওয়া হয়নি। সেই হিসেব অনুযায়ী লাইসেন্সভুক্ত অযান্ত্রিক যানবাহন মাত্র ৫৮ হাজার ৭৬৭টি। এর মধ্যে রিকশা ৫২ হাজার ৭১২টি, ব্যক্তিগত রিকশা ২৫টি, ভ্যান ৫ হাজার ৮৬০টি, মাল টানা টালি গাড়ি তিনটি, ঠেলা গাড়ি ৭৬টি ও ঘোড়ার গাড়ি রয়েছে ১৪টি। অথচ ঢাকায় রিকশা চলছে ১০ লাখেরও বেশি। এর সাথে আছে লক্ষাধিক ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক। হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা সত্তে¡ও ইজিবাইক ও ব্যাটারিচালিত রিকশা খোদ রাজধানীতে অবাদে চলছে। সেগুলো বন্ধ করারও কোনো উদ্যোগ নেই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ