Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ডেঙ্গু মোকাবেলায় পুরো সফল হতে পারিনি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩১ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০০ এএম

জনসচেতনতার জন্য ডেঙ্গু মোকাবেলা করা সহজ হয়েছে বলে মন্তব্য করে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেছেন, তারপরও আমরা শতভাগ সফল হইনি। গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত ‘নাগরিক সেবা নিশ্চিতে স্থানীয় সরকারের করণীয়’ শীর্ষক এক সেমিনারে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

তাজুল ইসলাম বলেন, নগর অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠায় অনেক কিছু ঠিক হতে সময় লাগবে। সব কিছুর জন্য দীর্ঘমেয়েদী পরিকল্পনা দরকার। আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এছাড়াও সব কিছুর জন্য দরকার জনসচেতনতা। জনসচেতনতার জন্য ডেঙ্গু মোকাবেলা করা সহজ হয়েছে। যদিও ডেঙ্গু মোকাবেলায় আমরা শতভাগ সফল হতে পারেনি। যতটুকু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়েছে এর প্রধান কারণ জনসচেতনা।

মন্ত্রী বলেন, ঢাকা শহরে স্যুয়ারেজ সিস্টেম নিয়ে আমাদের কাজ শুরু হয়েছে। আগে যেমনটা রাজধানীতে পানিবদ্ধতা হতো, আমাদের সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায় পানিবদ্ধতা অনেকটা কমে এসেছে। তবে একেবারেই পানিদ্ধতা মুক্ত, এমনটা বলা যাবে না। দুই সিটি কর্পোরেশন এলাকায় আগের চেয়ে পরিচ্ছন্নতা বেশি দেখা যাচ্ছে। তবুও অনেক নাগরিক সমস্যা রয়ে গেছে, এটা ঠিক। তবে পৃথিবীর এমন কোনো দেশ নেই, যারা বলতে পারবে, তাদের নাগরিক সমস্যার শতভাগ সমাধান করতে পেরেছে।

স্থানীয় সরকারের সেবা সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা সবগুলো সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করছি। প্রতিদিন নতুন নতুন বিষয়ে সমন্বয়ের প্রয়োজনীতা দেখা দিচ্ছে। আমাদের সক্ষমতা ও সামর্থ্য অনুযায়ী তারা পরস্পরের সঙ্গে কাজ করছে। আমি মনে করি না, কোথাও সমন্বয়হীনতা আছে। যেখানে সমস্যা আছে সেগুলো আমরা সমাধানের চেষ্টা করছি। যদি সমন্বয়হীনতা থাকে সেটিকে আমরা সমন্বয় করব।

অনুষ্ঠানে স্থপনি ইকবাল হাবিব বলেন, সরকারব্যবস্থা একটি ধারাবাহিক ব্যবস্থা। নগর ভবনে মরহুম মেয়র আনিসুল হকের সভাপতিত্বে তৎকালীন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী, গণপূর্ত মন্ত্রী, পানিসম্পদ মন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ে একটি সভা হয়। সেখানে ঢাকা শহরের পানিজট ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ে আলোচনা হয়। সেই আলোচনায় শহরের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থায় সিটি কর্পোরেশনের নেতৃত্বে একটি মহাপরিকল্পনা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়। কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়। ঢাকা ওয়াসা ও সিটি কর্পোরেশনের ঠেলাঠেলি বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। ওয়াসাকে দ্বিখন্ডিত করে সেটি সিটি কর্পোরেশনে যুক্ত করা হবে বলা হয়েছিল। কিন্তু এসব বাস্তবায়ন হয়নি। এ সময় নাগরিক সমস্যা সমাধানে মন্ত্রীর কাছে ৬টি দাবি তুলে ধরেন তিনি।

অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাপনার ওপর একটি কি নোট উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউড অব প্ল্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ড. আদিল মুহাম্মাদ খান। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দেয়া হয়। আমাদের স্থানীয় সরকারে যে বাজেট দেয়া হয় তা দিয়ে নাগরিকরা সর্বোত্তম সেবা পাচ্ছে কি না সেদিকে আমাদের নজর দিতে হবে। বর্তমান সময়ে আমাদের জনস্বার্থের বিষয়টি বেশি আলোচিত। বিশেষ করে ডেঙ্গুর কারণে অনেক ক্ষতি হয়েছে। জনস্বাস্থ্য কতটুকু নিশ্চিত হচ্ছে সেটা দেখতে হবে। এসব মোকাবেলায় আমরা কীভাবে বছরব্যাপী কাজ করতে পারি সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আর নাগরিকদের দায়িত্ব হচ্ছে তারা কীভাবে স্থানীয় সরকারকে সহযোগিতা করতে পারে সে বিষয়টি নজরে দেয়া।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ বলেন, সেবা প্রদান ও গ্রহণকারীদের মধ্যে সমন্বয় থাকতে হবে। অর্থ ও জনবলের সীমাবদ্ধতা আছে। আমরা যদি ভালো সেবা দিতে চাই, সেবার মান বাড়াতে চাই তাহলে এই জায়গাটিতে আরও বেশি উন্নতির প্রয়োজন রয়েছে। এজন্য রিসোর্স থাকতে হবে এবং সেই রিসোর্সগুলোকে একেবারে স্থানীয় পর্যায় পর্যন্ত নিয়ে যেতে হবে। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত। তাই জনগণের কাছে তাদেরই জবাবদিহি করতে হবে। তাদের কাছে জনগণের প্রত্যাশাও বেশি। ঢাকা ইউটিলিটি রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডুরা) সভাপতি মশিউর রহমান খানের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন রুবেলের সঞ্চালনায় সেমিনারে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হাই, দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনসার আলী খান প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ