Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পটুয়াখালীতে চিকিৎসকের অবহেলায় শিক্ষার্থীর মৃত্যু

পটুয়াখালী জেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ২৮ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০১ এএম

পটুয়াখালীতে ডাক্তারের অবহেলায় ফারদিন খান অভি নামে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় নিহতের সহপাঠিরা বিক্ষুব্ধ হয়ে পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভাঙচুর চালিয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এদিকে ডাক্তার সঠিক সময় চিকিৎসা না করায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে নিহতের পরিবার অভিযোগ করেছে। তারা দোষী ডাক্তারের বিচারের দাবি জানায়। নিহত ফারদিন খান অভি পটুয়াখালী সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রভাতি শাখার দশম শ্রেণির ছাত্র। পৌর শহরের কাঠপট্টি এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেনের দুই ছেলের মধ্যে অভি বড়। সে ক্লাসে ফার্স্ট ছিলো।

নিহত অভির মা মমতাজ বেগম এবং বাবা মো. আনোয়ার খান জানায়, সোমবার রাতে অভিকে অচেতন অবস্থায় পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন তারা। এ সময় কর্তব্যরত ডাক্তারকে জানানো হয় অভি বিষ জাতীয় কিছু পান করেছে। এ সময় জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত ডাক্তার আনোয়ার উল্যাহ শুধুমাত্র অভির প্রেসার মেপে বরিশাল নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। অভির সাথে থাকা স্বজনরা তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে অনুরোধ করেন। কিন্তু ডাক্তার তাতে রাজি না হয়ে ব্যবস্থাপত্র দিয়ে ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেয়। এরপর অভিভাবকরা ওয়ার্ডে নিয়ে দায়িত্বরত নার্সকে ব্যবস্থাপত্র দেখালে নার্স ঔষধ আনার জন্য বলেন। রাত ৮টার পরে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের ডাক্তার মাজহারুল ইসলাম প্রশিক্ষণরত ডাক্তারদের নিয়ে ওয়ার্ডে আসলে অভির স্বজনরা তাকে দেখার অনুরোধ করেন। এসময় ডাক্তার মাজহারুল ইসলাম অভির হাত দেখে সুস্থ আছে বলে জানায়। কিন্তু স্বজনরা আশঙ্কা বোধ করলে ডাক্তারকে পুনরায় অনুরোধ করেন। কিন্তু এটা মাজহারুল ইসলামের দায়িত্ব নয়, এখন তার ক্লাস চলছে বলে স্বজনদের জানিয়ে ওয়ার্ড থেকে বের হয়ে যায়। পরে রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে ওয়ার্ডে দায়িত্বরত নার্স অভির স্পন্দন না পেয়ে জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত ডাক্তার তারেক হাসানকে নিয়ে আসে। এসময় ডাক্তার তারেক হাসান জানায় অভির মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে অভির মৃত্যু হয়েছে এমন খবর শুনে হাসপাতালে উপস্থিত সহপাঠিরা হাসপাতালের দরজা-জানালার গ্লাস ভাঙচুর করে। বিচারের দাবিতে বিক্ষুব্ধ হয়ে বিক্ষোভ করে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান এবং মো. জসিম উদ্দিনসহ পুলিশের কয়েকটি দল ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নিহতের স্বজনরা কর্তব্যরত ডাক্তারের বিচারের দাবি জানায়।

পটুয়াখালী সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দীন হাসপাতালে উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, অভির অকাল মৃত্যুতে সবাই শোকাহত। স্কুলের অত্যন্ত মেধাবী শিক্ষার্থীর মৃত্যু মেনে নেয়া কষ্টকর। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে এ হত্যাকান্ডের বিচার দাবি করেন তিনি।

পটুয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমান জানান, অভির মৃত্যুতে কোন রকম গাফিলতি প্রমাণ হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে পরবর্তী সহিংসতা এড়াতে হাসপাতাল চত্বরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ