Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সেপ্টেম্বরে ময়ূর নদ বাঁচাতে অভিযান

খুলনা ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৫ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০১ এএম

দখলে - দূষণে মৃতপ্রায় খুলনার ময়ূর নদ। কোথাও বেড়া দিয়ে, কোথাও মাটির বাঁধ দিয়ে নদের জায়গা দখল করা হয়েছে। আবার নদের পাড়ের অনেক মানুষ একটু একটু করে নদ ভরাট করে জায়গা বাড়িয়ে নিচ্ছে। তাই ময়ূর নদ বাঁচাতে ও ২৬টি খালের অবৈধ স্থাপনা অপসারণে সেপ্টেম্বর থেকেই শুরু হচ্ছে অভিযান । নদী ও খাল এলাকা থেকে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে শুরু হয়েছে মাইকিং ।

খুলনা নগরের পানি নিষ্কাশন হয়ে থাকে পাশের বিভিন্ন নদীতে। নগরের গুরুত্বপূর্ণ ২০টির বেশি নালার মুখ ময়ূর নদের সঙ্গে মিলিত। এসব নালা-নর্দমার ময়লা-আবর্জনা বিষাক্ত করে তুলছে নদের পানি।

এদিকে, অবৈধ দখল, স্থাপনা নির্মাণ আর দুষণের ফলে খুলনা মহানগরীর ময়ুর নদসহ ২২ খাল অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। এতে নগরীর পয়ঃ ও পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থায় মারাত্মক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়ে প্রতি বছর পানিবদ্ধতাসহ নানা দূর্ভোগের শিকার হচ্ছেন ২০ লাখ মানুষ।

নদ পাড়ের বাসিন্দারা বলেন, দু’যুগ আগেও এ নদ দিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে নৌকা চলাচল করত। পানি ছিল পরিষ্কার। এখন পঁচাডোবা হয়ে গেছে। নৌকা তো চলেই না। নদের পানি এখন শৌচকার্যেও ব্যবহার করা যায় না।
অপরদিকে খুলনার ময়ূর নদ ও ২৬ খালের অবৈধ স্থাপনা অপসারণে সেপ্টেম্বর থেকেই অভিযান শুরু হচ্ছে। এর আগে গত জুনে নদী ও ২৬ খাল দখল করে নির্মাণ করা ৩৮২ স্থাপনার তালিকা চূড়ান্ত করে জেলা প্রশাসন। ৪৬০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এসব স্থাপনা এবং নদীর জমি দখল করে রেখেছে বলে জেলা প্রশাসন, কেসিসি, কেডিএ ও সেটেলমেন্ট অফিসের যৌথ জরিপে উঠে আসে।

জেলা প্রশাসন থেকে জানা গেছে, ময়ূর নদ ও সংযুক্ত খালগুলোর দখল উচ্ছেদে গত ৫ ফেব্রুয়ারি তিনটি কমিটি গঠন করে জেলা প্রশাসন। এর মধ্যে অবৈধ দখলদার চিহ্নিত ও অবৈধ স্থাপনার তালিকা তৈরি করতে গঠিত কারিগরি কমিটির প্রধান করা হয় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সারোয়ার আহমেদ সালেহীনকে। কমিটির সদস্য সচিব হলেন কেসিসির বৈষয়িক কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামান তালুকদার।

সূত্র জানায়, আরএস ম্যাপ অনুযায়ী করা জরিপে ময়ূর নদ ও নগরীর সীমানাবর্তী ২৬ খালে ৪৬০ জন অবৈধ দখলদারের তালিকা চূড়ান্ত করেছে ওই কমিটি। খালের ওপর তাদের তৈরি করা স্থাপনার সংখ্যা ৩৮২টি। শুধু ময়ূর নদে ৭৯ জন দখলদার ৬৩ অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। এর মধ্যে চারতলা ভবনও রয়েছে।

নদের অবৈধ দখলদার চিহ্নিত করতে গঠিত কারিগরি কমিটির সদস্য সচিব ও কেসিসির বৈষয়িক কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামান তালুকদার জানান, জরিপ শেষ করে অবৈধ দখলদারদের তালিকা আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে হস্তান্তর করেছি। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ তালিকা যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। তিনি বলেন, খাল ও নদের সীমানার ভেতরে যাদের স্থাপনা পড়েছে, তাদের নিজ খরচে এসব স্থাপনা সরিয়ে নিতে গত বুধবার থেকে মাইকিং শুরু হয়েছে।

বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির মহাসচিব শেখ আশরাফ-উজ জামান বলেন, ‘দখল ও দূষণের কারণে ময়ূর নদ অনেক আগেই নাব্যতা হারিয়েছে। নদী ও খালের দখল দূষণের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলাকালে হঠাৎ করে নদের পাড়ে দখলদারদের আনাগোনা বেড়েছে। এটা সত্যিই খুব দুঃখজনক। তাছাড়া এ নদের পানি অনেক আগেই ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আমরা বিভিন্ন সময়ে নদ রক্ষার জন্য প্রশাসনকে জানিয়েছি। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে ভূমিদস্যুরা নদ খেয়ে ফেলবে।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ