পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রকৃতির অপূর্ব সমাহার মেঘনা বেষ্টিত নিঝুম দ্বীপের সীমিত বনাঞ্চলে ৮০ হাজার হরিণের সংখ্যা নেমে এখন ৩০ হাজার। খাদ্য ও অপুষ্টিতে ইতোমধ্যে কয়েক হাজার হরিণ মারা গেছে। এছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিশেষ করে অতিরিক্ত জোয়ারের সময় সময় বিপুল সংখ্যায় হরিণ সাগরে ভেসে গেছে। খাদ্য ও অপুষ্টিতে মারা যাচ্ছে শত শত হরিণ। তেমনিভাবে ঝড় জলোচ্ছ্বাসে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটছে অগণিত হরিণের। অপরদিকে স্থানীয় এক শ্রেণীর অসাধু চক্র হরিণ শিকার করছে।
ত্রিশ সহস্রাধিক হরিণ ও বনাঞ্চল তত্ত্বাবধানে বন বিভাগের হাতেগোনা যে কয়েকজন কর্মচারী রয়েছে- তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলছেন স্থানীয়রা। দেশের বনজ সম্পদ রক্ষায় বন বিভাগ রয়েছে। কিন্তু নিঝুম দ্বীপের মূল্যবান হরিণ সম্পদ নিয়ে ভবিষ্যত পরিকল্পনা সংশ্লিষ্ট বিভাগের নেই। নিঝুম দ্বীপে হাজার হাজার হরিণ নিয়ে স্থানীয় বন বিভাগও পড়েছে বিপাকে। ২০১১ সালে নোয়াখালীর ডিএফও প্রধান বন সংরক্ষক কার্যালয়ে লিখিত এক চিঠিতে নিঝুম দ্বীপ থেকে কিছু হরিণ দেশের বিভিন্ন বনাঞ্চলে স্থানান্তরের অনুরোধ জানান। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি।
বর্তমানে নিঝুম দ্বীপের সীমিত বনাঞ্চলে মাত্র ৪/৫ হাজার হরিণ অবস্থানের উপযোগী হলেও এখন সেখানে প্রায় ৩০ হাজার হরিণ রয়েছে বলে নোয়াখালীর ডিএফও মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান। খাদ্যের অভাবে প্রতিদিন শত শত হরিণ লোকালয়ে রবিশস্য সাবাড় করছে। আর এ সুযোগে ফাঁদ পেতে হরিণ শিকার করছে কিছু অসাধু চক্র। অন্যদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিশেষ করে জলোচ্ছ্বাসের সময় অসংখ্য হরিণ জোয়ারের পানিতে ভেসে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত শতাব্দীর পঞ্চাশ দশকে হাতিয়া জাহাজমারা ইউনিয়নের পশ্চিম দক্ষিণ প্রান্তে মেঘনার বুকে এক খন্ড ভূমি জেগে ওঠে। সে সময় চরটির নাম ছিল ‘বালুয়ার চর’। কয়েক বছর পর হাতিয়ার তমরদ্দি ইউনিয়নের কয়েকজন অধিবাসী চাষাবাদের জন্য বালুয়ার চর অর্থাৎ নিঝুম দ্বীপের গমন করেন।
কিন্তু তাদের আর কেউ বেঁচে ছিল না। সত্তরের পর থেকে চরটির আয়তন বৃদ্ধি তৎসহ মাটির স্থায়িত্ব মজবুত হতে থাকে। এসময় হাতিয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন নিঝুম দ্বীপের বসতি গড়ে তোলে। ১৯৭৩ সালে স্থানীয় বন বিভাগ উক্ত চরে বনায়ন প্রক্রিয়া শুরু করে। পরে দ্বীপটির আয়তন বৃদ্ধির পাশাপাশি লোক সমাগমও বৃদ্ধি পেতে থাকে। ১৯৭৬ সালে নোয়াখালী বন বিভাগ নিঝুম দ্বীপের বনাঞ্চলে দুই জোড়া হরিণ অবমুক্ত করে। এরপর থেকে হরিনের বংশ বৃদ্ধিতে আর পেছনে তাকাতে হয়নি। বর্তমানে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, খাদ্য, অপুষ্টির এবং শিকারীদের হাতে প্রতি বছর কয়েক হাজার হরিণ বেহাত হচ্ছে। এছাড়া নিঝুম দ্বীপের দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা কিছু ট্রলারে হরিণ পাচার হচ্ছে। বিশেষ করে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন বন্দরে পাচার হচ্ছে হরিণ।
হাতিয়া নিঝুম দ্বীপের ত্রিশ হাজার হরিণ রক্ষণাবেক্ষণ জরুরি হয়ে পড়েছে। প্রয়োজনে এখান থেকে কয়েক হাজার হরিণ দেশের বিভিন্ন বনাঞ্চলে অবমুক্ত করা হলে বংশ বিস্তার ঘটবে। হরিণ বিদেশে রফতানি করে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সুযোগ রয়েছে। স্থানীয়রা মনে করেন, এ বিষয়ে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়কে আন্তরিক হতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।