Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উপহাস করে নিজেরাই বিদেশে দৌড়াচ্ছেন---- রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০১ এএম

বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে যারা উপহাস করেছে তারা নিজেরাই এখন চিকিৎসার জন্য বিদেশে দৌড়াচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, সুচিকিৎসার অভাবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার ক্রমাগত অবনতি ঘটছে। তাকে শুধুমাত্র প্রতিহিংসাপরায়ণতা চরিতার্থে ক্ষমতার মত্ততায় কারারুদ্ধ রাখা হয়েছে। প্রকাশ্যে স্বগর্বে ঘোষণা দিয়ে তার জামিনে বাধা দিচ্ছেন স্বয়ং সরকার প্রধান নিজেই। দেশনেত্রীর অসুস্থতা নিয়ে উপহাস করে নিজেরাই চিকিৎসার জন্য বিদেশে দৌড়াচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী চোখের চিকিৎসার কথা বলে দুই দফায় দীর্ঘদিন লন্ডনে থেকে এসেছেন। শুধুমাত্র চোখের অপারেশনে এতো দিন সময় লাগে কি না তা নিয়ে আমাদের কিছু বলার কিছু নেই। রোগ-ব্যাধি-জরা বলে কয়ে আসে না। তাই ৭৫ বছর বয়স্কা দেশনেত্রীর অসুস্থতা নিয়ে অবজ্ঞা-উপহাস না করে দ্রæত তাঁকে মুক্তি দিন। গতকাল (বুধবার) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। 

ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করছে উল্লেখ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ব্যক্তির যে সংখ্যা প্রকাশ করা হচ্ছে সেটি প্রকৃত সংখ্যার চেয়ে অনেক কম। অনেক প্রাইভেট হাসপাতাল এবং হাসপাতালে ভর্তি না হতে পেরে যারা বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন তাদের সংখ্যা সরকারি পরিসংখ্যানে উল্লেখ করা হয় না। বাস্তব ঘটনা হচ্ছে সরকার ডেঙ্গু মহামারীতে আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা প্রকাশ নিয়ন্ত্রণ করছেন। প্রতিদিন দেশের কোন না কোন অঞ্চলে বা হাসপাতালে অকাল মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে মানুষ। রোগীতে ঠাসা দেশের সরকারি বেসরকারি হাসপাতালগুলো। তিনি বলেন, ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা শতাধিক ছাড়ালেও সরকার এ নিয়ে এখনও গুজব আবিস্কারের মধ্যেই আছে। ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বলেছেন-এডিস মশা মারার জন্য কার্যকর ঔষধ আনা হয়েছে। প্রকৃত অবস্থা হচ্ছে এই ছিটানো ঔষধে এডিস মশা আরো উৎসাহিত হয়ে সন্তান সন্তুতি ব্যাপকভাবে উৎপাদন করে যাচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে যা বলা হচ্ছে তা রীতিমত বাকওয়াস। ডেঙ্গু আক্রমণের পূর্বেই প্রস্তুতির অভাব এবং ডেঙ্গু রোগে মহামারীতে সারাদেশ আক্রান্ত হওয়ার পরও সরকারের উচ্ছাস ও তামাশারও কোন কমতি নেই। তাই আওয়ামী নেতা-মন্ত্রীদের ফটোসেশনে কাজ হবে না, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা।
ন্যায় বিচারও এদেশ থেকে নিরুদ্দেশ হয়ে গেছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, দেশব্যাপী হত্যা, গুম , গলাকাটাকে পরম যতেœ লালন করা হচ্ছে। ক্ষমতাসীনদের পৃষ্ঠপোষকতায় বেআইনী কার্যক্রমকে উৎসাহিত করার জন্যই মানুষ এখন পণ্যে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিনই শিশু, কিশোর, যুবক, ব্যবসায়ী, ছাত্র, মানবাধিকার কর্মী হয় গুম হচ্ছে, না হয় তাদের গলাকাটা লাশ পাওয়া যাচ্ছে। ফেনীতে নিখোঁজের ৭ দিন পর স্কুল ছাত্রের লাশ উদ্ধার, লক্ষীপুরে আলমগীর হোসেন নামে ব্যবসায়ীকে গলাকেটে হত্যা, হবিগঞ্জে কিশোর সুমন মিয়ার এক মাস দশদিন পার হয়ে গেলেও কোন সন্ধান মেলেনি। গুম, ক্রসফায়ারের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান।
দেশজুড়ে অন্ধকার শ্বাসরোধী পরিবেশ বিরাজ করছে জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, সামাজিক অস্থিরতা, অসহিঞ্চুতা, হানাহানি, রক্তপাত চরম পর্যায়ে পৌছেছে। খুন, ধর্ষণ, পিটিয়ে হত্যা, সারা দেশে ডেঙ্গুর মতোই ছড়িয়ে পড়েছে। ছেলে ধরা সন্দেহে দেশে বেধড়ক গনপিটুনি চলছে। ছেলে ধরা গুজব, হত্যার ঘটনা পরিস্থিতি এমনই ঘোলাটে করে তুলেছে যে, অভিভাবকরা তাদের ছেলে মেয়েদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছে। ধর্ষণ ও ধর্ষণ প্রচেষ্টার কারণে শিশু হত্যার ঘটনা যেন প্রতিদিনের ভয়াবহ সংবাদ পড়তে হচ্ছে মানুষকে। একেই বলে নৈরাজ্য। বিরোধী রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মুল করতে গিয়েই সরকার সন্ত্রাসকে আশকারা দিয়ে যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ক্ষমতাসীনদের পদলেহন করায় সামাজিক অরাজকতায় ছেয়ে গেছে সারাদেশ। বাংলাদেশে এখন ঘাতক ও মৃত্যুরই সহাবস্থান। ###



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ