পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অগ্নিদ্বগ্ধ হওয়ার ২৪ ঘণ্টা পর অ্যাডভোকেট পলাশ কুমার রায়কে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। চিকিৎসার নিমিত্তে দাফতরিক কাজকর্ম সারতেই অনেক সময় ব্যয় করা হয়েছে। কারা হেফাজতে অ্যাডভোকেট পলাশ কুমার রায়ের ‘রহস্যজনক মৃত্যু’র ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য। গতকাল বুধবার বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ এবং বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের ডিভিশন বেঞ্চে প্রতিবেদনের ওপর শুনানি হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পলাশ কুমার রায় পঞ্চগড় কারাগারে গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
দাখিলকৃত প্রতিবেদনে আদালত বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। কারাগারে আগুন বা দিয়াশলাই কিভাবে অবাধে ঢুকলো এ প্রশ্ন রাখেন। আদালত বলেন, আইনজীবী পলাশ রায়ের গায়ে আগুন ধরার পর যদি তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দেয়া যেতো হয়তো বা তাকে বাঁচানো সম্ভব ছিল। আমরা বলবো না তিনি বাঁচতেন। কিন্তু চেষ্টা করলে হয়তো বা বাঁচানো যেতো।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পঞ্চগড় আদালতের অভ্যন্তরে কোনো সিসি ক্যামেরা নেই, প্রবেশপথে কোনো আর্চওয়ে নেই। কারা-ক্যান্টিনে গ্যাস ম্যাচ দিয়ে অবাধে আগুন ধরানো হয়। ভেতরে ধূমপানও চলে। চাল ডালের গাড়ী কারাগারের ভেতরে প্রবেশের সময় হুক ঢুকিয়ে দিয়ে তা পরীক্ষা করা হয়। এ ছাড়া সেখানে ভারপ্রাপ্ত জেলার দায়িত্ব পালন করেন। গঞ্চগড় কারা হাসপাতালে কোনো চিকিৎসক নেই। একজন ডিপ্লোমা নার্স সার্বক্ষণিক থাকেন। এ ছাড়া যাজ্জবজীবন দন্ডপ্রাপ্ত এক আসামি সার্জিক্যাল বিভাগের চিকিৎসকের সরঞ্জামের সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে। সে চাইলেই যে কোনো ছুরি-কাচি অন্যদের হাতে তুলে দিতে পারেন। এ ছাড়া আইনজীবী পলাশ রায়ের গায়ে আগুন লাগার পর দাপ্তরিক কাগজপত্র ঠিক করতেই অনেক সময় ব্যয় করা হয়েছে। এর পর চিকিৎসার জন্য এ হাসপাতাল ওই হাসপাতাল নেয়া হয় এর পর তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। দাপ্তরিক জটিলতায় চিকিৎসা দিতে দেরি হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে উল্লিখিত তথ্য প্রসঙ্গে আদালত বলেন, মুন্নাভাই এমবিবিএস-এর অবস্থা হয়েছে আর কী! যে ডাক্তার দেখানোর আগে ফরম পূরণ করতে হবে। আদালত বলেন, কারাগারের চিকিৎসায় মুন্নাভাই এমবিবিএস-এর অবস্থা হয়েছে। একজন মানুষ দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পর তাকে চিকিৎসা দেয়া দরকার। মনে হচ্ছে- দাপ্তরিক কাজের জন্য কারো চিকিৎসা আটকে থাকবে।
পরে হাইকোর্ট স্বরাষ্ট্র সচিব এবং আইজি প্রিজনকে জেলখানার অব্যবস্থাপনা নিয়ে এই প্রতিবেদেনের জবাব লিখিতভাবে দিতে বলা হয়।
ইতোপূর্বে গত ৮ মে কারা হেফাজতে অগ্নিদগ্ধ হওয়ার পর হাসপাতালে আইনজীবী পলাশ কুমার রায়ের (৩৬) মৃত্যুর ঘটনায় পঞ্চগড়ের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে বিচারিক তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করতে পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক, জেলা কারাগারের প্রধান ও পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেয়া হয়।
জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ৮ মে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ এবং বিচারপতি রাজিক আল জলিলের ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেন। রুলে কারাগারে কারাবন্দিকে যথাযথ নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়। রিটে স্বরাষ্ট্র সচিব, আইজি (প্রিজন), রংপুর বিভাগের ডিআইজি (প্রিজন) ও পঞ্চগড় কারাগারের জেলারকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালত থেকে বেরিয়ে রিটের পিটিশনার ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশে বিচারিক তদন্তের প্রতিবেদনে পলাশ কুমার রায় আত্মহত্যা করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা লেগেছে তাকে চিকিৎসা দিতে। তার ট্রিটমেন্ট শুরু করতে এই কারাগারে ওই কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। শুধু প্রক্রিয়া ও প্রসিডিউর মেন্টেইন করতে দাপ্তরিক কার্যক্রম শেষ করতে ২৪ ঘণ্টা লাগছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছর ২৬ এপ্রিল কারা হাসপাতালে রহস্যজনকভাবে অগ্নিদ্বগ্ধ হোন অ্যাডভোকেট পলাশ কুমার রায়। গত ৩০ এপ্রিল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।