Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঈদযাত্রায় ২৫০ দুর্ঘটনা প্রাণহানি ২৫৩

যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের প্রতিবেদন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০২ এএম

এবারের ঈদুল আজহায় দেশের সড়ক-মহাসড়কে ১৯৯টি দুর্ঘটনায় ২৫৩ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘ঈদুল আজহার ঈদ আনন্দ যাত্রায় দুর্ঘটনা প্রতিবেদন ২০১৯’ প্রকাশ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান সংগঠনের সভাপতি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জি এম কামরুল ইসলাম। নিরাপদ যাতায়াত ব্যবস্থা নিশ্চিতে তিনি ১৫টি সুপারিশ তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ঈদযাত্রার শুরুর দিন থেকে ঢাকায় ফেরা পর্যন্ত (৬ আগস্ট ১৮ আগস্ট) ১৩ দিনে সড়ক, রেল ও নৌপথে সম্মিলিতভাবে ২৫০টি দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ২৯৯ জন নিহত ও ৭৮৮ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৯৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৫৩ জন নিহত ও ৭৬৫ জন আহত হয়েছেন। নৌপথে ২১ দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত, ৫১ জন নিখোঁজ ও ২৩ জন আহত হয়। এছাড়াও রেলপথে ট্রেনে কাটা পড়ে পূর্বাঞ্চলে ২১ জন ও পশ্চিমাঞ্চলে ৯ জনসহ মোট ৩০ জন নিহত হয়েছেন। দেশের ১৮টি জাতীয় দৈনিক, ৬টি আঞ্চলিক দৈনিক ও ১০টি অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

পর্যবেক্ষণে দেখা যায়- দুর্ঘটনাকবলিত মোট যানবাহনের ৬৬টি বাস, ৬২টি মোটরসাইকেল, ৩৩টি ট্রাক-কাভার্ডভ্যান ও পিকআপ, ১৪টি কার-মাইক্রোবাস, নছিমন-করিমন; ভটভটি-ইজিবাইক ও অটোরিকশা ৪৫টি। এছাড়া ২৬টি অন্যান্য যানবাহন এসব দুর্ঘটনায় জড়িত ছিল। দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়- ৬১টি গাড়িচাপায়, ৭৪টি সংঘর্ষ, ৩০টি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে ও অন্যান্য কারণে ৩৪টি দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়।

জি এম কামরুল ইসলাম দুর্ঘটনার কারণ উল্লেখ করে বলেন, যানবাহনের অতিরিক্ত গতি, ওভারটেকিংয়ের মানসিকতা, নগর পরিবহনের ফিটনেসবিহীন বাস দূরবর্তী রুটে চলাচল, বৈধ চালক সংকট, নির্ঘুম অবস্থায় বিরামহীন গাড়ি চালানো, অতিরিক্ত ট্রিপ দিতে মালিকদের চাপ, অতিরিক্ত যাত্রী চাপ ও যাত্রীদের তাড়াহুড়ার মানসিকতা, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া, মহাসড়কে ছোট যানবাহন অবাধে চলাচল, আইনের কার্যকর প্রয়োগ না করা, ঈদ ফেরত যাতায়াতে মনিটরিং ব্যবস্থার শিথিলতা এবং নৌযানের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা সামগ্রী না থাকাই এসব দুর্ঘটনা ঘটেছে।

১৫ দফা সুপারিশের মধ্যে- যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ, চালকদের সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রদান, চালকদের বিশ্রাম ও কর্মঘণ্টা মানার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার শতভাগ বাস্তবায়ন, বৈধ চালক তৈরি, হালকা গাড়ি চালানো লাইসেন্স নিয়ে ভারী গাড়ি চালানো চালকদের বিশেষ প্রশিক্ষণ, মহাসড়কে নছিমন-করিমন, ব্যাটারিচালিত রিকশা, অটোরিকশা বন্ধে সরকারের গৃহীত সিদ্ধান্ত শতভাগ বাস্তবায়ন, মহাসড়কে ফিটনেসবিহীন লক্কড়-ঝক্কড় ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহন চলাচল বন্ধে উদ্যোগ, রেশনিং পদ্ধতিতে ছুটির ব্যবস্থা, যাত্রী ও পথচারীদের সচেতনতা বৃদ্ধি, ঈদযাত্রায় সরকারি-বেসরকারি সংস্থার স্টাফবাস যাত্রী বহনে ব্যবহার করা এবং প্রয়োজনে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে যানবাহন ভাড়া করা, ঈদ ফেরত যাতায়াতে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার, রেলের ছাদে রেলিংয়ের ব্যবস্থা, মোটরসাইকেল চলাচল নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপদ করা, স্কাউট সদস্যদের সাথে বিএনসিসিসহ অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়োগ প্রদান এবং যাত্রী বীমা চালু করার সুপারিশ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা কেন্দ্রের সহকারী অধ্যাপক কাজী সাইফুন নেওয়াজ, পুলিশ কল্যাণ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডিএ তায়েফ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক মোখলেছুর রহমান, সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের যুগ্ম-সম্পাদক হানিফ খোকন, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সামসুদ্দীন চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।#



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ