পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি চিকিৎসকসহ সার্বিক জনবল মঞ্জুরিবিহীন অবস্থায় ৫শ’ শয্যা থেকে কাগজপত্রে ১ হাজারে উন্নীত করা হলেও পুরনো মঞ্জুরিকৃত পদেরও ৫৫ ভাগ শূন্য। ফলে দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ এ চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠানটির সার্বিক চিকিৎসা ব্যবস্থাই মুখ থুবড়ে পড়েছে। ৫শ’ শয্যার চিকিৎসা সুবিধাসহ অবকাঠামোর এ হাসপাতালটি বছর দুয়েক আগে ১ হাজার শয্যায় উন্নীত করা হলেও এখানে প্রতিদিন গড়ে রোগী থাকছে প্রায় ১ হাজার ৭শ’। অথচ জনবল মঞ্জুরি রয়েছে ৫শ’ শয্যার। আর সে জনবলেরও অর্ধেকের বেশি শূন্য। তবে চিকিৎসক সঙ্কটে সময়মত চিকিৎসা না পাবার কারণেও এ হাসপাতালে অনেক রোগীকে দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে হাসপাতালটিতে মাত্রাতিরিক্ত রোগীর চাপ অব্যাহত থাকছে।
বর্তমান ভবনে ৫শ’ শয্যার শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি চালু করা হয় ১৯৭৮ সালে। সে থেকে এ চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠানটি বরিশাল বিভাগের ৬টি জেলা ছাড়াও মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও গোপালগঞ্জ জেলার সাধারণ মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছে। ৫শ’ শয্যার হাসপাতালটিতে সব সময়ই এক হাজার থেকে ১২শ’ রোগীর চিকিৎসা সেবা দিতে হাসপাতাল প্রশাসন হিমশিম খাচ্ছিলেন। এ অবস্থায় বছর দুয়েক আগে হাসপাতালটিকে ১ হাজার শয্যায় উন্নীতকরণের ঘোষণা আসে।
১ হাজার শয্যার এ হাসপাতালটির ৫শ’ শয্যার বিপরীতে নিজস্ব চিকিৎসকের মঞ্জুরিকৃত পদ ২২৪ জন। কিন্তু গতকাল পর্যন্ত ছিলেন মাত্র ৯৯। ১২৫টি পদে কোন চিকিৎসক নেই। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক থেকে শুরু করে রেজিস্ট্রার, সহকারী রেজিস্ট্রার এবং এ্যানেসথেসিওলজিস্ট পদে প্রয়োজনীয় জনবল নেই। হাসপাতালটির দুজন সহকারী পরিচালকের ১টি পদ শূন্য। হাসপাতালটির একমাত্র সিনিয়র ক্লিনিক্যাল প্যাথলজিস্ট ও ডেন্টালের জুনিয়র কনসালটেন্টের পদ দুটিও শূন্য। ৮টি আবাসিক চিকিৎসক ও সার্জনের দুটি পদে কোন চিকিৎসক নেই। বিভিন্ন ওয়ার্ডের ৩৩ জন রেজিস্ট্রারের ১৮টি ও ৬৬ জন সহকারী রেজিস্ট্রারের ৪৮টি পদেই কোন চিকিৎসক নেই। ১০টি এ্যানেসথেসিওলজিস্টের বিপরীতে আছেন ৬ জন। যার মধ্যে গড়ে একজন বিভিন্ন কারণে ছুটিতে থাকেন। ফলে হাসপাতালটির অপারেশন থিয়েটারগুলো সব সময় কার্যকর থাকছে না। অথচ অস্ত্রপাচারের জন্য ওয়ার্ডগুলোতে দিনের পর দিন রোগীদের অপেক্ষার প্রহর গুনতে হচ্ছে।
হাসপাতালটির জরুরি বিভাগের জন্য মাত্র ১০টি ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসারের পদ থাকলেও শূন্য ২টি। এছাড়া হাসপাতালটির বহির্বিভাগের জন্য মেডিকেল অফিসার, সহকারী সার্জন, মেডিকেল অফিসার-বিটিসি, রেডিওলজিস্ট, রেডিওথেরাপিস্ট, মেডিকেল অফিসার-রক্ত ও ডেন্টালের ৪৬টি পদের বিপরীতে মাত্র ২৫ জন কর্মরত আছেন। ২১টি পদ শূন্য। একমাত্র সিনিয়র ক্লিনিক্যাল প্যাথলজিস্ট পদে কোন জনবল নেই, ৪টি ক্লিনিক্যাল প্যাথলজিস্ট পদের বিপরীতে আছেন মাত্র ১ জন। ফলে এ হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীদের প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয়টি এখন বাইরের ওপরই নির্ভরশীল। এছাড়াও ইনডোর মেডিকেল অফিসারের ২০টি পদে আছেন মাত্র ৯ জন, ১১টি পদ শূন্য। নবসৃষ্ট ২০টি মেডিকেল অফিসার পদের ১৪টি শূন্য।
চিকিৎসক পদের এ বেহাল অবস্থার মধ্যে হাসপাতালটির নার্সিং কর্মকর্তাদের ৮০৬টি মঞ্জুরিকৃত পদের ৩৭টি শূন্য। হাসপাতাল প্রশাসনের ১২৪টি তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী পদের ৪২টি ও ৪২৬টি ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী পদেরও ১১৯টিতে কোন জনবল নেই। ৮টি জমাদার পদের সবগুলো, ২২৪টি অফিস সহায়কের ৬৪টি, ১৩৫ পরিচ্ছন্নতা কর্মীর ৩০টি, ৪টি ওয়ার্ড বয়ের ২টি ছাড়াও বাবুর্চি ও নিরাপত্তা প্রহরীরও বিপুল সংখ্যক পদে কোন জনবল নেই।
ফলে দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ এ সরকারি চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠানটির সার্বিক কার্যক্রমই অনেকটা অচলাবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। উপরন্তু ১ হাজার শয্যার হাসপাতালে দৈনিক গড়ে ১৭শ’ রোগী চিকিৎসাধীন থাকায় ওষুধ ও পথ্যের হাহাকার চলছেই। কিন্তু এসব কিছুর পরেও চিকিৎসক সঙ্কটে গোটা হাসপাতালটির চিকিৎসা সেবা কার্যক্রমই সচল রাখা দায় হয়ে উঠেছে।
এসব বিষয়ে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. বাকির হোসেন জানান, আমরা নিয়মিতভাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিকিৎসকসহ জনবল সঙ্কটের বিষয়টি অবহিত করে চলেছি। অধিদপ্তর থেকেও মন্ত্রণালয়ের সাথে নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। তবে সারা দেশেই চিকিৎসক সঙ্কট থাকায় হঠাৎ করেই সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে না। তারপরেও রোগীদের জন্য সর্বাধিক চিকিৎসা সেবা প্রদানের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।