Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, ২১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

আগুনে পুড়ে বন্ধ হলো আগুনের ব্যবসা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০০ এএম

মিরপুরের রূপনগরের ঝিলপাড় বস্তিতে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বাণিজ্য চলে আসছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে বিপুল পরিমাণ জাতীয় সম্পদ যেমন নষ্ট হচ্ছিল, তেমনি সরকারি রাজস্বের টাকা পকেটে পুরে ধনী হচ্ছিলেন এই ব্যবসার হর্তাকর্তারা। তবে আগুনে পুড়েই বন্ধ হয়ে গেল সেই আগুনের ব্যবসা।

চলন্তিকা ঝিলপাড় বস্তিতে ১৬ আগস্ট সন্ধ্যায় অগ্নিকাÐের ঘটনা ঘটে। এরইমধ্যে এই অগ্নিকাÐ ষড়যন্ত্রমূলক বলে অভিযোগ করেছেন বস্তিবাসী। একইসঙ্গে এই বস্তিতে অবৈধ গ্যাস সংযোগের রমরমা ব্যবসা এতদিন ধরে চলে আসছিল বলেও তাদের অভিযোগ।

বিভিন্ন সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ২৫-৩০ বিঘা জায়গার ওপর এই বস্তি গড়ে ওঠে। বস্তিতে প্রায় ৩০ হাজার ঘর আছে। বস্তিবাসী এবং আশপাশের এলাকার মানুষজন বলছেন, প্রতিটি ঘরেই ছিল গ্যাসের সংযোগ। অভিযোগ আছে, স্থানীয় ‘নেতারা’ই নিয়ন্ত্রণ করতেন গ্যাসের অবৈধ এই ব্যবসা। বস্তির ঘরগুলো থেকে প্রতি চুলায় এক হাজার টাকা করে বিল আদায় করতেন নেতাদের লাইনম্যান। সেই হিসেবে মাসে দুই কোটি টাকারও বেশি অবৈধ গ্যাস বিলের দারুণ এক ব্যবসা ক্ষেত্র ছিল মিরপুরের সবচেয়ে বড় এই বস্তি।

শারমিন নামের বস্তির এক বাসিন্দা বলেন, ‘সরকার খালি বলে অবৈধ অবৈধ, এগুলাতো নেতা-ফেতারা খাইতেছে। আমরা কি অবৈধ রাখছি, নাকি নেতা-ফেতারা অবৈধ রাখছে? আমরা তো বিল দেই। পানির বিল দেই, বিদ্যুতের বিল দেই, গ্যাসের বিল দেই। এক চুলায় এক হাজার টাকা করে বিল খাইছে (লাইনম্যানরা)। বস্তির আরেক বাসিন্দা সুমনাও এর সঙ্গে যোগ করে বলেন, আমরা তো সবকিছুর বিল দিছি।

কাদের কাছে এসব বিল দিয়েছেন, আর নেতারাই কারা এমন প্রশ্নের জবাবে শারমিন বলেন, এইডির নাম বলা যাবে না। নেতা -ফেতার নামের অভাব নাই। আশপাশেই থাকে, এডি কি দূরে থাহে?
নাম প্রকাশে জীবনের ঝুঁকি আছে উল্লেখ করে সুমনা বলেন, নাম না নেওয়াতেই এতকিছু, নাম নিলে তো আমগো মাইরাই ফালাইব।

আগুনে পুড়েছে পরো বস্তিত। পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক বস্তিবাসীদের কয়েকজন বলেন, রাজনৈতিক মদদপুষ্ট একাধিক গ্রæপ সমঝোতার ভিত্তিতে এলাকা ভাগ করে বস্তির এই অবৈধ গ্যাসের বাণিজ্য পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করতেন।
অন্যদিকে বস্তিতে গ্যাসের অবৈধ কোনো সংযোগই নেই দাবি করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য (ঢাকা-১৬) ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা। এই সংসদ সদস্য বলেন, কেউ যদি বলে এখানে গ্যাসের অবৈধ লাইন আছে, আমি আজও পাইনি। কারণ আমি এই এলাকায় বসবাস করি। প্রত্যেকটা মানুষের খোঁজ-খবর রাখি। এরপরেও কেউ যদি বলে থাকে তাহলে ঐ ব্যক্তিটা কে আমাকে দেখতে হবে।





 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ