পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সরকার বাংলাদেশকে বিরাজনীতিকরণ করছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল এক যোগদান অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, এই সরকার অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশকে রাজনীতি শূন্য করে তুলেছে, বিরাজনীতিকরণ করছে, ডি-পলিটিসাইজড করছে। যেন রাজনীতি করতে না পারে বাংলাদেশের মানুষ, যেন রাজনৈতিক দলগুলো রাজনীতি করতে না পারে তার জন্য তারা একে একে সংবিধানে পরিবর্তন নিয়ে এসছে এবং সেই পরিবর্তনগুলো করে বাংলাদেশের রাজনীতিকে সম্পূর্ণভাবে শূন্য করে দেয়ার চক্রান্ত তারা শুরু করেছে। মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে- দেশে এক দল থাকবে, আর কোনো দল থাকবে না। আগে বাকশাল করেছিলো, এখন তারা আওয়ামী লীগকে টিকিয়ে রাখতে চায়, তাকেই তারা ক্ষমতায় রাখতে চায়। এটা তাদের বহুদিনের ইচ্ছা। সেই ১৯৭৫ সালে আওয়ামী লীগ বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিলো, বর্তমান এই আওয়ামী লীগ আবার একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছে এবং এজন্য দীর্ঘদিন ধরে তারা পরিকল্পনা করছে।
১৯৭২-৭৫ সালকে আওয়ামী লীগের ‘দুঃশাসনের সময়’ উল্লেখ করে ওই সময়ে ক্ষমতাসীন দলের দুর্নীতি, বিরোধী দলের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতন, হত্যার চিত্র তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, আমরা অনেকেই ভুলে গেছি- সেই সময়ে বিরোধী দল করত বলে তরুণ যুবককে তার বাবাকে দিয়ে কুঠার দিয়ে গলা কাটিয়েছে, সেই মাথা নিয়ে তারা ফুটবল খেলা করেছে। এটা ইতিহাস। আজকে একইভাবে রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে, রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের নির্যাতন করছে। আজকে বাংলাদেশের কোথাও ভালো অবস্থা নেই, কোথাও সুশাসন নেই। আছে দুঃশাসন। আজকে কোনো আইনশৃঙ্খলা নেই, মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে, মহিলা-শিশুদের ধর্ষণ করা হচ্ছে, নিরহ মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে, বিনা বিচারে হত্যা করা হচ্ছে এবং বিনা বিচারে আটক করে রাখা হচ্ছে বছরের পর বছর।
ফখরুল বলেন- শুধু তাই নয়, অর্থনীতিকে শেষ করে দিয়েছে। ব্যাংকগুলো পুরোপুরিভাবে দেউলিয়া করে ফেলা হচ্ছে। সর্বশেষ যেটা হয়েছে- এই যে, কোরবানির চামড়া নিয়ে। এই কোরবানি চামড়া বিক্রি করে আমাদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো, মাদ্রাসা-এতিমখানাগুলো তাদের ভরণপোষণের জন্য অর্থ-উপার্জন করতো। সেই ব্যবস্থাটাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। আজকে তাদের কারণেই, তাদের সমস্ত দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীদের কারণেই সিন্ডিকেট তৈরি করে এবং একই সঙ্গে সরকারের কোনো নীতি না থাকার কারণে চামড়া শিল্প আজকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। এটা আরেকটা চক্রান্ত। আমাদের চামড়া শিল্প উপরের দিকে উঠছিলো। এখন আমাদের চামড়াজাত দ্রব্যের চাহিদা বিদেশে খুব বেড়ে গিয়েছিলো। এরমধ্য দিয়ে আমাদের চামড়া শিল্প ধ্বংসের পায়তারা চলছে।
গাজীপুরের নেতা-কর্মীদের সংগঠন শক্তিশালীর আহ্বানও জানান বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, সংগঠনের বিকল্প কিছু নেই। সংগঠন থাকলেই আপনি আন্দোলনে সফল হতে পারবেন, সংগঠন থাকলে আপনি নির্বাচনে সফল হতে পারবেন। এই বিষয়টা আমাদের দলের নেতা-কর্মীদের মনে রাখতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের কথা খুব পরিষ্কার কথা-সবার আগে আমরা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই। উনি মুক্তি না হলে গণতন্ত্রকে মুক্ত করা যাবে না। আমরা অবিলম্বে এই যে অনৈতিক সরকার, এই যে দখলদারী সরকার, যারা নির্বাচন না করে জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছে তাদেরকে পদত্যাগ করে অবিলম্বে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আমরা নির্বাচন চাই এবং বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে বাতিল করে দিয়ে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। এটা ছাড়া বাংলাদেশের কোনোদিনই রাজনৈতিক মুক্তি ও অর্থনৈতিক মুক্তি আসবে না।
বিএনপিতে যোগদানকারী গাজীপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. আব্দুল করীম বলেন, আমরা অবশ্যই দেশকে ভালোবাসি। দেশের মানুষ শান্তিতে থাকবে, দেশের আইনশৃঙ্খলা সুন্দর থাকবে, ভালো থাকবে, একজন মানুষ স্বাধীন হিসেবে দেশে বসবাস করবে- এটাই যদি আপনারা না পারেন, এটার প্রতিবাদ যদি আমরা না করতে পারি তাহলে আমরা কিসের মানুষ হলাম?
সেই কারণেই এদেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্য, বিগত দিনে যে আইনশৃঙ্খলা ছিলো, বিগত দিনে যে গণতন্ত্র ছিলো সেই গণতন্ত্রকে আবার পুনরায় ফিরিয়ে আনার জন্যই আজকে আমি এই দলে যোগ দিয়েছি। আপনারা এই দুঃসময়ে দলকে যে ধরে রেখেছে তা কিসের জন্য? আপনাদের ব্যক্তিত্বের জন্য, মানুষকে বাঁচানোর জন্য, দেশকে বাঁচানোর জন্য। এজন্য আমার পক্ষ থেকে আপনাদের (বিএনপি) অভিনন্দন জানাই।
বিএনপিকে যোগদানে আব্দুল করিমকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানান বিএনপি মহাসচিব। গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গাজীপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. আব্দুল করিমের নেতৃত্বে শতাধিক নেতা-কর্মী বিএনপিকে যোগদান উপলক্ষে এই অনুষ্ঠান হয়।
গাজীপুর মহানগর সভাপতি হাসান উদ্দিন সরকারের সভাপতিত্বে ও কোতোয়ালী থানার সাধারণ সম্পাদক আজমল হোসেন ভুঁইয়ার পরিচালনায় অনুষ্ঠানে সিরাজুল হক মোল্লা ও মাহবুব আলম শুক্কর বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে গাজীপুর মহানগরের বসির উদ্দিন বাচ্চু, রাশেদুল ইসলাম কিরন, জিয়াউল হাসান স্বপন, জাবেদ আহমেদ সুমন, আখতার হোসেন, বসির উদ্দিন, রাকিব উদ্দিন সরকার পাপ্পু, আবদুর রহিম খান কালা, সাইফুল ইসলাম টুটুল, আজিজুল হক রাজু মাস্টার, মনিরুল ইসলাম বাবুল, ফারুক হোসেন খান, আবদুল হালিম, হারুন-অর রশিদ, তাইজুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।