পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বুলডোজার দিয়ে সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও এমপি হারুণ অর রশীদের বাড়ির সীমানা প্রাচীর ও স্থাপনা গুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। করাত দিয়ে বাড়ির ভেতরের শতবর্ষী গাছও কেটে ফেলা হয়। গত মঙ্গলবার রাত দেড়টা থেকে সকাল সাতটা পর্যন্ত এ তান্ডব চালানো হয়ে। এ ঘটনার পর থেকে ক্লিনিকে রোগীদের সেবা প্রদান বন্ধ রয়েছে।
জানা যায়, ঘটনার সময় পুলিশ সদর হাসপাতালে ভেতরে টহলকার নিয়ে অবস্থান করছিল। ভাঙা শুরু হওয়ার বেশ কিছুক্ষণ পর গাড়ি বের হয়ে যায়। পুলিশের ভ‚মিকা নিয়ে মানুষের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সকালে জেলা বিএনপির সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি, জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক, জেলা আ.লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সাধারণ সম্পাদক এ বি এমন মমিনুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজুল ইসলামসহ শহরের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
জেলা সদর হাসপাতালের প্রধান ফটক থেকে প্রায় ৩০-৪০ ফুট দূরত্বে কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও রেড ক্রিসেন্টের সাবেক চেয়ারম্যান হারুন অর রশীদের বাড়ি। এই বাড়িটি ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মডার্ণ এক্স-রে ও প্যাথলজি ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ তাদের ব্যবসায়ীক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। গত মঙ্গলবার রাত দুইটার দিকে একদল দুর্বৃত্ত বুলডোজার নিয়ে এসে ওই ক্লিনিকে ভাঙচুর চালায়। এ সময় তারা ক্লিনিকের সীমানা প্রচীর, রোগীদের প্রতিক্ষালয়সহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ভাঙচুর ও লোটপাট করে। পাশাপাশি ক্লিনিকের ভেতরে গাছও করাত দিয়ে কেটে ফেলে দুর্বৃত্তরা। বুধবার সকাল সাতটা পর্যন্ত এই তান্ডব চালানো হয়। এসময় তারা কমপক্ষে ৭টি ট্রাক্টর করে মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও মডার্ণ এক্স-রে ও প্যাথলজি ক্লিনিকের এক্স-রে টেকনিশিয়ান শফিক মিয়া বলেন, রাত দেড়টার থেকে প্রায় শতাধিক লোক বুলডোজার নিয়ে ভাঙচুর শুরু করে। তাদের বাধা দিতে গেলে পৌরসভা থেকে এসেছেন বলে জানান।
মডার্ণ এক্স-রে ও প্যাথলজি ক্লিনিকের পরিচালক আজিজুল হক জানান, রাতের আঁধারে একদল দুর্বৃত্ত এসে ভাঙচুর চালিয়েছে। ক্লিনিকের দুটি ফটক, একটি জেনারেটর, একটি আল্ট্রাসনোগ্রাফি মেশিন ও একটি এসি ট্রাকে করে নিয়ে গেছে তারা। এছাড়া ক্লিনিকের তিনটি জেনারেটর, সাতটি এসি, একটি আলট্রাসনোগ্রাফি মেশিন ও পাঁচটি কম্পিউটার নষ্ট হয়ে গেছে।
সূত্রে আরো জানা গেছে, শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মো. জাকারিয়া ও ডা. মনির হোসেন, জেলা আ.লীগ সদস্য সৈয়দ তৌফিক আহমেদ, শহর যুবলীগের আহ্বায়ক আমজাদ হোসেন রনি, শহর স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম, ব্যবসায়ী ওবায়দুল হক সুচী, নাটাই’র বাছির, ছয়গড়িয়া পাড়ার মিজান, শেরপুরের ইয়াছিনসহ শহরের বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী মডার্ণ এক্স-রে ও প্যাথলজি ক্লিনিকের পশ্চিম দিকে নতুন আরেকটি হাসপাতাল নির্মাণের জন্য জায়গা কিনেছেন। সেখানে মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে। মূলত ওই হাসপাতালের রাস্তা তৈরির জন্য মডার্ণ এক্স-রে ও প্যাথলজি ক্লিনিকের সীমানা প্রচীরসহ ভেতরে তান্ডব চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। এদের নেতৃত্বে গত রাতে এ তান্ডব চালানো হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রেজাউল কবীর বলেন, সকালে ভাঙচুরের ঘটনাটি শুনেছি। সদর থানার ওসিকে ঘটনাস্থল পরির্দশন করতে বলেছি। হাসপাতাল মালিকপক্ষ রাতে ভাঙচুর প্রসঙ্গে পুলিশকে অবগত করলে কেউ আসেনি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমার জানা নেই।
গত ৩ জুলাই ডা. জাকারিয়া পৌরসভা মেয়রের কাছে সদর হাসপাতালের রোডে প্রস্তাবিত মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালের দক্ষিণপাশে পৌরসভার পূর্ব-পশ্চিমে লম্বালম্বি দখলকৃত রাস্তাটি (মডার্ণ এক্স-রে ও প্যাথলজি ক্লিনিক সীমানা প্রাচীরের দক্ষিণে পায়ে হাঁটার রাস্তা) সর্বসাধারণ ও সেবামূলক কাজে ব্যবহার করার জন্য দখলমুক্ত করার আবেদন করেন। জাকারিয়া ওই মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
ডা. মো. জাকারিয়া দেশের বাইরে থাকায় তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ক্লিনিকের জায়গার মালিক এডভোকেট হারুন অর রশীদও দেশের বাইরে অবস্থান করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার মেয়র নায়ার কবির জানান, আমাদের বুলডোজার নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে। ডা. জাকারিয়ার আবেদনটি পৌরসভার প্রকৌশল শাখায় রয়েছে বলে জানান তিনি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন জানান, ভাঙচুরের ঘটনাটি শুনে ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।