পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কিছু ঝুঁকি সত্তে¡ও রাবেয়া-রোকেয়ার অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। যমজ মাথা বাচ্চা রাবেয়া ও রোকেয়ার অপারেশন সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল ঢাকায় সাফল্যজনকভাবে সম্পন্ন হওয়ার পর গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। ঢাকা সিএমএইচে কমান্ড্যান্টের কনফারেন্স রুমে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এতে উপস্থিত ছিলেন ডা. হাবিব ই মিল্লাত এমপি মহাপরিচালক, সামরিক চিকিৎসা সার্ভিস মহাপরিদপ্তর, মেজর জেনারেল মো. ফসিউর রহমান কমান্ড্যান্ট, সিএমএইচ ঢাকা, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তৌফিকুল হাসান সিদ্দিকী শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়কারী। সংবাদ সম্মেলনে রাবেয়া-রোকেয়ার সফল অপারেশন সম্পর্কে সাংবাদিকদের বিস্তারিত তথ্য প্রদান করেন এবং বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তারা।
আইএসপিআরের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের ১৬ জুলাই পাবনার চাটমোহরে রফিকুল ইসলাম ও তাসলিমা বেগম দম্পতির ঘরে জন্ম নেয় বিরল দুই মানব শিশু। যাদেরকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয় মাথা জোড়া লাগানো যমজ বাচ্চা চিকিৎসা বিজ্ঞানের জন্য একটি চ্যালেঞ্জিং। ২.৫ মিলিয়ন জীবিত যমজ বাচ্চাদের মধ্যে মাত্র একটি মাথা জোড়া লাগানো বাচ্চা জন্ম নেয়। প্রায় ৪০% মাথা জোড়া লাগানো শিশু মৃত অবস্থায় জন্ম নেয় এবং আরো এক-তৃতীয়াংশ শিশু ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মৃত্যুবরণ করে। তবে শতকরা ২৫ ভাগ শিশু বেঁচে থাকে যমজ মাথা নিয়ে যাদের শল্য চিকিৎসার মাধ্যমে আলাদা করার সুযোগ থাকে। এটি একটি বিরল ধরনের অপারেশন। সারা বিশ্বেই খুব অল্প পরিমাণে হয়েছে। সাফল্যের হারও খুব বেশি নয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, পাবনার একটি ক্লিনিকে শিক্ষক দম্পতির জন্ম নেয়া এই দুই শিশু এবং তার পিতা মাতাকে জন্মের পরই পেতে হয়েছিল সমাজের কুসংস্কারাচ্ছন্নতার পরিচয়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাদের নিয়ে আসা হয়। এখানে সহৃদয়তার সাথে সমস্ত কর্মকান্ডে যোগ দেন ডা. হাবিব ই মিল্লাত এবং ডা. সামন্তলাল সেন সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করেন। হাঙ্গেরির অ্যাকশন ফর ডিফেন্সলেস পিপল-এর ডা. গ্রেগ পাটাকি প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎকালে হাঙ্গেরি জনগণের পক্ষ থেকে এদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জটিল এই শল্য চিকিৎসা করা সম্ভব বলে মত দেন। এই শল্য চিকিৎসাটি কয়েকটি ধাপে সম্পন্ন হয়। প্রথম ধাপে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এবং গত ৪ জানুয়ারি থেকে হাঙ্গেরিতে ৪৮টি ছোট-বড় সার্জারি সম্পন্ন হওয়ার পর ২২ জুলাই রাবেয়া এবং রোকেয়ার অস্ত্রোপচারের সবচেয়ে জটিল অংশ ‘যমজ মস্তিষ্ক’ আলাদাকরণের কাজটি সম্পন্নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় হাঙ্গেরি থেকে তাদেরকে ঢাকা সিএমএইচে নিয়ে আসা হয়। সেনাপ্রধান সমস্ত সহযোগিতার জন্য ডিজিএমএস-কে বিস্তারিত নির্দেশনা দেন। পরে গত ১ আগস্ট ১টায় পৃথকীকরণের জটিল অপারেশনটি শুরু হয়ে ৩৩ ঘণ্টাব্যাপী চলে এবং ২ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টায় শেষ হয়। এই অস্ত্রোপচারে হাঙ্গেরি বিশেষজ্ঞদের সাথে সিএমএইচের নিউরো অ্যানেসথেসিওলজিস্টদের তত্ত্বাবধানে নিউরো ও প্লাস্টিক সার্জনগণসহ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ, শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউট, হার্ট ফাউন্ডেশন, নিউরো সায়েন্স ইনস্টিটিউট, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল ও শিশু হাসপাতালের প্রায় শতাধিক সার্জন ও অ্যানেসথেসিওলজিস্ট এই জটিল অপারেশনে কোনো না কোনোভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বর্তমানে তারা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল ঢাকার পোস্ট অ্যানেসথেটিক কেয়ার ইউনিটে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল এবং শিশু হাসপাতালের নিউরো ইনটেনসিভিস্টদের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। গতকাল তাদের পৃথকীকরণের ৮ম দিন অতিবাহিত হয়েছে। এ ধরনের অপারেশন অত্যন্ত জটিল, সাফল্যের হারও খুব বেশি নয়। অপারেশনের পর এখানে তারা কিছু ঝুঁকি সত্তে¡ও স্থিতিশীল রয়েছে। কিন্তু মনে রাখা দরকার, এ ধরনের অস্ত্রোপচারে অপারেশনের পরবর্তী ঝুঁকি এবং জটিলতা অত্যন্ত বেশি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।