Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বর্জ্য অপসারণে হাইকোর্টের আদেশ উপেক্ষিত

সাঈদ আহমেদ | প্রকাশের সময় : ১১ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০০ এএম

দুই বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি ভোর ৬টার মধ্যে ঢাকার বর্জ্য অপসারণের নির্দেশনা। সক্ষমতার দোহাই দিয়ে মাসের পর মাস কালক্ষেপণ করছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। ফলে জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট এ আদেশটি এখন পর্যন্ত ‘কাগজে আদেশ’ হয়েই রয়ে গেছে। তবে হাইকোর্টের আদেশ অগ্রাহ্য করার কারণে এবার কোরবানি পশুর বর্জ্য অপসারণও বিলম্ব হওয়ার আশংকা ব্যক্ত করেছেন ‘জাস্টিস ওয়াচ ফাউন্ডেশন’র নির্বাহী পরিচালক মাহফুজুর রহমান মিলন। উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন’র সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন।
হাইকোর্টের নির্দেশ সম্পর্কে গতকাল শনিবার সুপ্রিম কোর্ট বারের অ্যাডভোকেট মাহফুজুর রহমান মিলন জানান, একটি রিট পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট দ্রæত বর্জ্য অপসারণে একটি নির্দেশনা দেন। বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক এবং বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর ডিভিশন বেঞ্চ একটি আদেশ দেন। ওই আদেশে ঢাকা দক্ষিণ এবং উত্তর সিটি করপোরেশনের ময়লা রাত ১০টা থেকে ভোর ৬টার মধ্যে অপসারণ করতে বলা হয়। একই সঙ্গে ময়লা অপসারণে ঢাকনাযুক্ত গাড়ি ব্যবহারের নির্দেশ দেয়া হয়। সেই আদেশ এখনো কার্যকর করেনি প্রতিষ্ঠান দুটি।

তিনি বলেন, হাইকোর্টের আদেশের পর আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রতিষ্ঠান দুটিতে ‘নক’ করেছি। তখন দুই সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সকাল ৬টার মধ্যে বর্জ্য সরানোর আদেশ এই মুহূর্তে বাস্তায়ন করা কঠিন। কারণ আদেশ বাস্তবায়নে যে সক্ষমতা প্রয়োজন সেটি আমাদের নেই। জনবলের অভাব। সংকট রয়েছে আধুনিক যন্ত্রপাতিরও। তারপরও দুই সিটি করপোরেশন হাইকোর্টের আদেশ প্রতিপালনে অত্যন্ত আন্তরিক।

বিগত দুটি অর্থবছরের চেয়ে এ বছর সংস্থাটির বর্জ্য সংগ্রহ, অপসারণ ও ল্যান্ড ফিলিংয়ের পরিমাণ ২৫ থেকে ৩৫ শতাংশ বেড়েছে। সংস্থাটি বর্তমানে সকাল ৭-৮টার মধ্যে সড়ক পরিষ্কার করার চেষ্টা চালাচ্ছে। আর গৃহস্থালির ময়লা ৯টার মধ্যে সংগ্রহ করা হয়। সেখান থেকে কর্মীরা তা সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশনে (এসটিএস) এনে অপসারণ করতে ১১-১২টা বেজে যায়। হাইকোর্টের আদেশ বাস্তবায়নে জনবল, যানবাহন ও যন্ত্রপাতি বাড়ানোসহ আরও বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।

এদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন জানান, হাইকোর্টের ওই নির্দেশনাকে গুরুত্ব দিয়েই এবার কোরবানির বর্জ্য অপসারণের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। দক্ষিণ সিটি সব সময় আদালতের নির্দেশনার প্রতি শ্রদ্ধাশীল।

সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে দিনে ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার টন বর্জ্য জমা হয়। খোলা ট্রাকের পাশাপাশি ১২০টি কনটেইনারবাহী ট্রাক দিয়ে এসব স্থানান্তর করা হয়। এসব ট্রাক দিয়ে বর্জ্য অপসারণ করতে দৈনিক ৬৫০ থেকে ৭০০টি ট্রিপ প্রয়োজন হয়।
অন্যদিকে ঢাকা উত্তর সিটি এলাকায়ও প্রায় একই পরিমাণ বর্জ্য জমা হয়। এই প্রতিষ্ঠানের কনটেইনারবাহী ট্রাক রয়েছে ৬০টির মতো। এছাড়া দুই দুই সিটির ওয়ার্ডগুলোতে ৫ হাজার ২ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মী রয়েছেন। এর মধ্যে সম্প্রতি উভয় সিটি করপোরেশনের পরিধিই বেড়েছে। এবার বর্জ্যও আগের তুলনায় বেড়েছে। সীমিত জনবল দিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী কার্যক্রম চালানো কষ্টসাধ্য।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)র সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনা কার্যকর করার দাবি আমাদের। দু:খজনকভাবে কোনো কর্ণপাত করছে না দুই সিটি করপোরেশন। তিনি বলেন, এবার বাড়তি উপকরণ হিসেবে যোগ হয়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। দ্রæত সময়ে কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করতে না পারলে বর্জ্যজনিত দুর্ভোগ কোথায় গিয়ে যে দাঁড়াবে তা কল্পনাতীত। নগরবাসীর কাছে এটি বড় উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ