পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ-সাউথের দুই শিক্ষার্থীসহ ৫ জনকে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। তাদের টার্গেট ছিল সুবিধাজনক সময়ে পুলিশের ওপর হামলা করা। সেই লক্ষ্যে তারা ‘এক্সক্লুসিভ ডিভাইস’ বা আইডি তৈরি করার যন্ত্রাংশও সংগ্রহ করেছিল। দীর্ঘ নজরদারির পর জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে তাদেরকে আটক করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিটিটিসির প্রধান মনিরুল ইসলাম।
তিনি আরো বলেন, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলো- মোহাম্মদ শিবলী শাহাজাদ ওরফে সাদী, শাহ এম আসাদুল্লাহ মর্তুজা কবীর ওরফে আবাবীল, মাসরিক আহমেদ, আশরাফুল আল আমীন ওরফে তারেক এবং এস এম তাসনিম রিফাত। এদের মধ্যে দু’জন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তাদের কাছ থেকে এমন কিছু বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে। যেগুলোর সঙ্গে স¤প্রতি খামারবাড়ি ও পল্টন এলাকা থেকে উদ্ধার হওয়া আইইডি’র সঙ্গে মিল রয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।
সিটিটিসির কর্মকর্তারা বলেন, গ্রেফতারকৃতরা দেশের ও বিদেশের কিছু সন্ত্রাসী সংগঠনের অনলাইন প্রচারণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে পুলিশকে টার্গেট করে হামলার পরিকল্পনা এবং তা বাস্তবায়নের জন্য শলাপরামর্শ করতে মিলিত হয়েছিল। লোন উলফ বা একাকী শিকারি যাকে একাকী মুজাহিদ বলে জঙ্গিরা। উলফ প্যাক সেরকমই। তাদের সাংগঠনিক কোনো ভিত্তি নেই বা সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ নেই। এরা সেলফ র্যাডিক্যালাইজড হয়ে ছোট ছোট গ্রুপ তৈরি করে গ্লোবাল জিহাদ এগিয়ে নেয়ার কথা বলে হামলার পরিকল্পনা করে।
গ্রেফতার হওয়া উলফ প্যাকের ৫ সদস্য সিটিটিসির কর্মকর্তারা বলছেন, এই গ্রুপের ৫ সদস্যের মধ্যে সাদী ২০১৪ সাল থেকে জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত। হলি আর্টিজানে হামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত বাসারুজ্জামান চকলেটের মাধ্যমে সে জঙ্গিবাদে জড়ায়। তারা একসঙ্গে কলাবাগান এলাকার আলামীন মসজিদে ‘হালাকা’ (একত্রিত হওয়া) করত। আবাবীল অনলাইনের মাধ্যমে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়েছে। এরপর নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ পড়তে গিয়ে তারা পরস্পর পরিচিত হয়ে ‘উলফ প্যাক’ গ্রুপটি গড়ে তোলে। আবাবীলের বন্ধু মাশরিকের মাধ্যমে তাসনিম রিফাত এই গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত হয়।
সিটিটিসির প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, তারা এই গ্রুপটির কাছ থেকে পুলিশের ওপর হামলার এমন কিছু কৌশল জানতে পেরেছেন, যা সত্যিই উদ্বেগের। বিষয়টি ইতোমধ্যে পুলিশ সদর দফতরের মাধ্যমে সারাদেশের সব ইউনিটকে জানানো হয়েছে। কৌশলগত কারণে তারা এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করতে চাইছেন না। তাহলে সাধারণ মানুষের মধ্যেও উদ্বেগ বাড়তে পারে বলে মনে করছেন তারা। শুরু থেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ‘তাগুত বাহিনী’ আখ্যায়িত করে তাদের টার্গেট করে আসছিল জঙ্গিরা। কয়েক বছর ধরে সেই প্রবণতা আরও বেড়েছে। চলতি বছর অন্তত চারটি ঘটনায় পুলিশকে টার্গেট করে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। গুলিস্তান ও মালিবাগের দু’টি ঘটনায় কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পুলিশের বিভিন্ন অভিযানে বেশি সংখ্যক জঙ্গি গ্রেফতার বা অভিযানে নিহত হয়েছে। সেজন্য তারা পুলিশকে টার্গেট করছে।
তিনি আরো বলেন, হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার পর পুলিশের ধারাবাহিক জঙ্গিবিরোধী অভিযানের কারণে জঙ্গিরা অনেকটা কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। তবে একেবারেই তারা নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়নি। গোপনে তারা ফের সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে। সাংগঠনিকভাবে সক্রিয় হতে না পেরে ‘লোন উলফ’ বা ‘উলফ প্যাক’-এর মাধ্যমে সক্রিয় হয়ে হামলার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে। সারা দুনিয়াজুড়েই এই প্রবণতা বেড়েছে। সিটিটিসির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, উলফ প্যাকে সাধারণত ৫-৭ জন সদস্য থাকে। আমরা গ্রেতারকৃতদের আরও কয়েকজন সহযোগীর সম্পর্কে তথ্য পেয়েছি। তাদের গ্রেফতার করতে অভিযান চলমান রয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।