Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয়

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০১ এএম | আপডেট : ১২:০৮ এএম, ১০ আগস্ট, ২০১৯

ঈদ যাত্রায় এবার ট্রেনের যাত্রী বেশি। গত ৭ আগস্ট থেকে ট্রেনের ঈদযাত্রা শুরু হলেও প্রথম দুদিন তেমন চাপ ছিল না। গতকাল প্রতিটি ট্রেনে ছিল উপচে পড়া ভিড়। ট্রেনের ছাদেও গাদাগাদি করে যাত্রীরা উঠেছে। শুরু থেকে ট্রেনগুলো সময় মেনে চলেনি। বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে চলাচলকারী উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের ট্রেনগুলোর সিডিউল অনেকটাই লন্ডভন্ড ছিল। গতকাল শুক্রবার সেই মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে একটি ট্রেন লাইনচ্যুতির ঘটনা। দুপুরে টাঙ্গাইলের বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব পাড়ে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনের তিনটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে ঢাকার সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গের ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, দুপুর ২টার দিকে ঢাকা-রাজশাহী রেলপথের টাঙ্গাইল জেলার ভুয়াপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
সিরাজগঞ্জ রেলওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন মজুমদার জানান, সেতুর পূর্বপাড়ে সুন্দরবন এক্সপ্রেসের শেষের তিনটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে করে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম রেলওয়ে স্টেশনে সিল্কসিটিসহ আরও বেশ কয়েকটি ট্রেন আটকে ছিল। তবে আশার কথা হলো কোনো উদ্ধারকারী ট্রেন ছাড়াই বগিগুলো উদ্ধার করা হয় মাত্র আড়াই ঘন্টায়। প্রায় তিন ঘণ্টা পর আবার ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
গতকাল কমলাপুর স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, ট্রেনের জন্য হাজার হাজার যাত্রী অপেক্ষা করছেন। কোনো ট্রেনই সময়মতো না ছাড়ার কারণে যাত্রীরা মহাবিরক্ত। কয়েকজন যাত্রী বলেন, ট্রেন ধরার জন্য কমপক্ষে এক ঘণ্টা আগে তারা স্টেশনে এসে জানতে পারেন ট্রেন তিন ঘণ্টা লেট। এখন কোথায় যাবেন, কোথায় বসবেন তারও কোনো ঠিক নেই। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল উত্তরাঞ্চলগামী সবগুলো ট্রেনই দেরিতে ছেড়েছে। রাতে ঢাকামুখী দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনটি সাড়ে তিন ঘণ্টা বিলম্বে আসছিল। ঢাকামুখি আরেক বিরতিহীন ট্রেন পঞ্চগড় এক্সপ্রেসও চলছিল প্রায় ৪৫ মিনিট বিলম্বে।
কমলাপুর স্টেশন থেকে রাজশাহীগামী ধুমকেতু এক্সপ্রেস সকাল ছয়টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও ট্রেনটি স্টেশনে এসে পৌঁছায় সকাল সোয়া ১০টার পরে। এরপর ট্রেনটি ছাড়ার সম্ভাব্য সময় ১০টা ৪০ মিনিটে বলা হলেও ছেড়ে যায় সকাল ১১টায়।
চিলাহাটীগামী নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনটি সকাল ৮টায় কমলাপুর থেকে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও পরে ছাড়ার নির্ধারিত সময় দেওয়া হয় বেলা ১২টা ৫ মিনিটে।
রংপুরগামী রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনটি সকাল ৯টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও বেলা ১২টা পর্যন্ত ট্রেনটি স্টেশনে এসে পৌঁছায়নি। দিনাজপুর-পঞ্চগড়গামী একতা এক্সপ্রেস ট্রেনটি কমলাপুর ছেড়ে যাওয়ার নির্ধারিত সময় ছিল ১০টায়। পরে সেটি স্টেশন ছেড়েছে সকাল সাড়ে ১১টায়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রতিটি ট্রেনেই যাত্রীরা সবাই একসঙ্গে ওঠার চেষ্টা করেন। অল্প সময়ের মধ্যেই ট্রেন ভরে যায়। যাত্রীদের চাপ এত বেশি যে, ট্রেনজুড়ে পা ফেলারও জায়গাটুকুও আর অবশিষ্ট ছিল না।
দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট সংগ্রহ করলেও অনেক যাত্রীই আসনে বসতে পারেননি। ভিড়ের কারণে আসন খুঁজে নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। একই অবস্থা দেখা গেছে, ট্রেনের ছাদেও। প্রতিটি ট্রেনের ছাদজুড়ে মানুষ আর মানুষ।
রংপুর এক্সপ্রেসের যাত্রী সাবানা আক্তার বলেন, সকাল ৯টার আগেই স্টেশনে এসে পৌঁছেছি। এখন বেলা ১২টা। সম্ভাব্য সময়ও দেওয়া হয়নি। দুপুর দুটায়ও ট্রেনে উঠতে পারবো কিনা জানি না। বাচ্চাদের নিয়ে সমস্যায় পড়েছি।
এদিকে, ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয় প্রসঙ্গে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, বঙ্গবন্ধু সেতু ডাবল লেন না হওয়া পর্যন্ত এই বিপর্যয় থেকে মুক্তি মিলবে না। গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রেলমন্ত্রী কমলাপুর স্টেশন পরিদর্শন করনে। তিনি বলেন, ডাবল লেনের জন্য আগামী ২০২৩ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। সেতুর লেন না বাড়িয়ে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ালে গতি আরও কমে আসবে। ফলে বিপর্যয় আরও বাড়বে। পরিদর্শনকালে রেলমন্ত্রী ঈদে ঘরমুখি যাত্রীদের সাথে কথা বলেন। ##



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ