Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ডেঙ্গু আক্রান্ত ৩৪৬৬৬ জন

মৃত্যু শনাক্তে ‘ডেথ রিভিউ’ কমিটি সুস্থ হয়েছেন ২৫৮৭২

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০১ এএম

এ বছর ডেঙ্গু রোগের আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৩৪৬৬৬ জন রোগী। হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে ঘরে ফিরে গেছেন ২৫৮৭২ জন রোগী। বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৮৭৬৫ জন ডেঙ্গু রোগী। ঢাকায় চিকিৎসা নিচ্ছেন ৫১৪০ জন রোগী। আর ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৩৬২৫ জন ডেঙ্গু রোগী। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ২৩২৬ জন রোগী। এ পর্যন্ত মৃত্যু ২৯ জন। এই হলোÑ ডেঙ্গু নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য। তবে বেসরকারি হিসেব ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা সরকারি হিসেবের প্রায় দ্বিগুন।

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছেই। এ রোগ নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা সর্বত্রই। এখনো ডেঙ্গু জ্বর বিস্তারকারী এডিস মশা মারার ওষুধ ছিঁটানো শুরু হয়নি। কিন্তু ডেঙ্গু জ্বরে মৃত্যু নির্ণয়ের জন্য ‘ডেথ রিভিউ কমিটি’ গঠন করা হয়েছে। হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগের আক্রান্ত রোগীর ভর্তির সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। রাজধানীর বাইরে এই রোগীর সংখ্যা এখন অনেক বেশি। আগস্ট মাসের প্রথম ৭ দিনেই ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১৪ হাজার ৩৭৩ জন রোগী সারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এই সংখ্যা পুরো জুলাই মাসে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যার প্রায় সমান। ওই মাসে সারা দেশে ১৫ হাজারের কিছু বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। এ তথ্য স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত প্রতিবেদন থেকে পাওয়া গেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, ৭ আগস্ট বুধবার সকাল ৮টা থেকে ৮ আগস্ট বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টা সময়ে সারা দেশে ২৩২৬ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকাতেই ভর্তি হয়েছেন ১১৫৯ জন ডেঙ্গু রোগী; আর ঢাকার বাইরে ১১৬৭ জন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী পহেলা আগস্ট সকাল ৮টা থেকে ২ আগস্ট সকাল ৮টা পর্যন্ত সময়ে সারাদেশে ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল ১৬৮৭ জন। পরের ২৪ ঘণ্টায় এমন রোগীর সংখ্যা ছিল ১৬৪৯। পরের দিন আরও ১৮৭০ জন ডেঙ্গু রোগী সারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হন। ৪ আগস্ট সকাল ৮টা থেকে ৫ আগস্ট সকাল ৮টা পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ২০৬৫ জন। পরের দুই দিন আরও ২৩৪৮ ও ২৪২৮ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। আগস্টের প্রথম সপ্তাহেই মোট ১৪ হাজার ৩৭৩ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে এ বছরের এখন পর্যন্ত বিভিন্ন সময় ৩৪ হাজার ৬৬৬ জন রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ২৫ হাজার ৮৭২ জন রোগী সুস্থ হয়েছেন, বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছেন ৮ হাজার ৭৬৫ জন।

এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) ১৩০ জন, মিটফোর্ড হাসপাতালে ১১৮ জন, ঢাকা শিশু হাসপাতালে ৪৪ জন ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ৫৬ জন, বিএসএমএমইউতে ৬৫ জন, রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে ২২ জন, মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১২৪ জন, পিলখানা বিজিবি হাসপাতালে ৪ জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ৩১ জন ও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ১০০ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়েছেন।

এদিকে রাজধানীর বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুনভাবে ডেঙ্গু আক্রান্ত ৪৬৫ জন রোগী চিকিৎসা নিতে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৩৭ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে। এছাড়া বাংলাদেশ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৩০ জন, স্কয়ার হাসপাতালে ২৮ জন, মিরপুর ডেল্টা মেডিক্যাল কলেজে ২৩ জন, সেন্ট্রাল হাসপাতালে ২৬ জন ও কাকরাইল ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতালে ২৭ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিতে ভর্তি হয়েছেন।

এ ছাড়াও ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের বাইরে ঢাকা বিভাগের জেলা শহরগুলোতে ২৮৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২২৭ জন ও খুলনা বিভাগে ১৭৯ জন, রংপুর বিভাগে ৬৬ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৭১ জন, রাজশাহী বিভাগে ১৩০ জন, বরিশাল বিভাগে ১৭৮ জন ও সিলেট বিভাগে ৩৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন বিভিন্ন হাসপাতালে।

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন গতকাল সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, চলতি মাসে ১০৬৯ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগী ঢামেকে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল ত্যাগ করেছেন ৪৫৭ জন। তিনি আরো জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩০ জন রোগী ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে ভর্তি হয়েছেন। এই সময়ে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেছেন ১৭৬ জন। বর্তমানে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৬৭৫ জন রোগী।

সংবাদ সম্মেলনে পরিচালক নাসির উদ্দিন জানান, শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে পারব, ততক্ষণ পর্যন্ত রোগী স্থানান্তর করা হবে না।



 

Show all comments
  • Md Roni Mahmud ৯ আগস্ট, ২০১৯, ১:২৯ এএম says : 0
    আপনি ডেঙ্গু জ্বরে না মরলে, বন্যায় মরবেন। বন্যায় বেঁচে গেলেও, সড়ক দুর্ঘটনায় মরবেন। দুর্ঘটনায় না মরলেও ভেজাল খাদ্য খেয়ে মরবেন। সবকিছুতে বেঁচে গেলেও একদিন আপনাকে বিনা কারণে গনপিটুনি খেয়ে মরতে হবে। এদেশে মৃত্যুর সব পন্থা খোলা আছে। অভিনন্দন আপনি এখনো বেঁচে আছেন!
    Total Reply(0) Reply
  • Gazi Parvez ৯ আগস্ট, ২০১৯, ১:৩০ এএম says : 0
    যে দেশের সরকারী লোক বিভিন্ন দুর্ঘটনায় নিহতদের লাশ গুম করে ফেলে, সেই দেশের সরকার ডেঙ্গু আক্রান্ত মৃতের সংখ্যা সঠিক কি করে প্রকাশ করবে৷ এসব ভাবাও ভুল৷
    Total Reply(0) Reply
  • Sk Safayat Hossen ৯ আগস্ট, ২০১৯, ১:৩০ এএম says : 0
    দেশের অর্ধেক মানুষ মরে গেলেও এরা বলবে সবকিছু স্বাভাবিক আছে, তাই এরকম বলতেছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Alamin Huq ৯ আগস্ট, ২০১৯, ১:৩১ এএম says : 0
    জ্বরহলে তাই অবহেলা না করে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত। তা ছাড়া যেহেতু এবারের জ্বরে ফ্লুইড ঝরে যাচ্ছে শরীর থেকে তাই জ্বর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রচুর ফ্লুইড জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Nazmul Hoque ৯ আগস্ট, ২০১৯, ১:৩১ এএম says : 0
    বাংলাদেশের সরকারী খবর শুধু লেবুর বাম্পার ফলন, আর কোন মন্রী কোথায় ঘুরে বেড়াচ্ছে এগুলো ছাড়া অন্য কোন খবর সরকারী গণমাধ্যম থেকে শুনেনা। সরকারী কর্মচারীরাও শুনেনা। কারন তারাও জানে মিথ্যা না বললে চাকরী থাকবে না।
    Total Reply(0) Reply
  • Ridoy Khan Ridoy Khan ৯ আগস্ট, ২০১৯, ১:৩২ এএম says : 0
    এ দেশের ১৬ কোটি জনগণ যদি ডেঙ্গু জ্বরে মারা যাই তাও বর্তমান সরকার থেকে বলা হবে কিছুই হয়নি।
    Total Reply(0) Reply
  • Ridoy Khan Ridoy Khan ৯ আগস্ট, ২০১৯, ১:৩২ এএম says : 0
    এ দেশের ১৬ কোটি জনগণ যদি ডেঙ্গু জ্বরে মারা যাই তাও বর্তমান সরকার থেকে বলা হবে কিছুই হয়নি।
    Total Reply(0) Reply
  • Hanif Akondo ৯ আগস্ট, ২০১৯, ১:৩২ এএম says : 0
    ডেঙ্গুর জীবাণু বহনকারী এডিস মশা নির্মূল ও এডিস মশার বংশ বিস্তার রোধে বাসাবাড়ির চারপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। আর ফুলের টব, ফুলদানি ও ফ্রিজের ট্রেতে জমা পানি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পরিবর্তন করতে হবে
    Total Reply(0) Reply
  • Rafique Rony ৯ আগস্ট, ২০১৯, ১:৩৩ এএম says : 0
    বেরেছে সব জিনিসের দাম কেবল কমেছে জীবনের মূল্য। সাধারন মানুষের জীবনের কোন মূল্য তো নেই ধনীদের একটু মূল্য তবে তাও নিরাপদ নয়। যে যার মতো চলছে বা চলতে দিচ্ছে। মাঝিহীন নৌকার মতো। সবখানেই মরণ ফাঁদ। রাস্তায়- ঘাটে, স্থলযান, নৌযান কিংবা আকাশযানেও। এমনকি মানুষ নিজ ঘরেও নিরাপদ নয়। নিরাপদ নন কারো হেফাজতেও। এতো মূল্য কমে গেল জীবনের???
    Total Reply(0) Reply
  • Sujan Chandra Mondol ৯ আগস্ট, ২০১৯, ১:৩৪ এএম says : 0
    ডেঙ্গু আক্রান্তদের ঢাকার বাইরে না যাওয়াই সর্বোত্তম।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ডেঙ্গু


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ