Inqilab Logo

শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

অর্থমন্ত্রীর প্রত্যাশা

২ হাজার কোটি ডলার রেমিট্যান্স আসবে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০০ এএম

রেমিট্যান্সের বিপরীতে শতকরা ২ ভাগ আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে সরকার। ফলে চলতি অর্থবছরে ২০ বিলিয়ন ডলার বা দুই হাজার কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স আসবে বলে আশা করছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রবাসী বাংলাদেশিরা এক হাজার ৬৪২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে। গতকাল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এদিকে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়লেই কোনো অনুমোদন ছাড়াই সেসব পণ্য সংগ্রহ করে ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করতে পারবে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। এতদিন শুধু চিনি, ডাল, ভোজ্যতেল, ছোলা আর খেজুর ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করতো সংস্থাটি। তাও এসব পণ্য সংগ্রহে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের প্রয়োজন হতো। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, কেনাকাটায় কোনো আর্থিক সীমাবদ্ধতা নেই। তবে জাতীয়ভাবে আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় যেসব জিনিস যেমন- পেঁয়াজ, রসুন, আদা বা যে কোনো সময় যে কোনো পণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে। হাঠাৎ করে যেসব পণ্যের দাম বাড়বে সেটা টিসিবি যেখানেই পাক সেখান থেকে কিনে চাহিদা মেটাতে পারবে। এজন্য সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের প্রয়োজন হবে না। এ জন্য কোনো আইন পরিবর্তন করতে হবে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আইন পরিবর্তনের কোনো প্রয়োজন হবে না। তাৎক্ষণিকভাবে যেন চাহিদা মেটানো যায় সেজন্যই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অনেক সময় বন্যার কারণে কিছু পণ্যের সরবরাহ কমে যায়। তখন এসব পণ্য হয় আমদানি করতে হয় বা অন্যভাবে সংগ্রহ করতে হয়। কিন্তু ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক হয় সপ্তাহে একদিন। এসব পণ্য কেনার অনুমতির জন্য এ কমিটিতে আসতে সময় লাগে এক মাস। এ জন্য টিসিবি কর্তৃপক্ষ বা মন্ত্রণালয়কে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তারা নিজেরাই প্রয়োজনে এসব পণ্য কিনতে পারবে। 

জানা গেছে, গত ২৪ জুলাই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ঈদুল আজহার আগে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখা এবং গবাদি পশু পরিবহন বিষয়ে অংশীজনদের নিয়ে আয়োজিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার পর্যালোচনা থেকে উঠে আসে যে, ঈদুল আজহা সামনে রেখে বাজারে পেঁয়াজ, রসুন ও আদার দাম অনেক বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় তুলনামূলক কম দামে খোলাবাজারে ট্রাকে এসব পণ্য বিক্রি করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে টিসিবিকে নির্দেশনা দেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মফিজুল ইসলাম।
এ নির্দেশনার প্রেক্ষিতে গত ২৮ জুলাই থেকে ঢাকাসহ সারাদেশে ভোজ্যতেল, চিনি ও ডাল বিক্রি বিক্রি শুরু করে টিসিবি। কিন্তু অনুমতি না থাকায় সংস্থাটি পেঁয়াজ, রসুন ও আদা বিক্রির কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি। এখন এসব পণ্য বিক্রিতেও সমস্যা থাকছে না।
এদিকে প্রণোদনায় অধিক রেমিট্যান্সের আশাবাদ ব্যক্ত করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ইতালি, সউদী আরবসহ কিছু দেশ ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্সের ওপর চার্জ বসিয়েছে। তাই প্রবাসীরা হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে থাকেন। শতকরা ২ ভাগ প্রণোদনা দেয়ার ফলে তারা আর হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠাবেন না। ফলে ব্যাংকিং চ্যানেলে সেটি বেড়ে ২০ বিলিয়ন ডলার হবে বলে আশা করছি।
রেমিট্যান্সের প্রণোদনা কিভাবে দেয়া হবে- জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, যে ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠাবে সে ব্যাংকই তাদের প্রণোদনার অর্থ দেবে। পরবর্তীতে ব্যাংগুলোকে সরকার সে অর্থ পরিশোধ করে দেবে।
উল্লেখ্য, কোনো প্রবাসী এক হাজার ৫০০ ডলার রেমিট্যান্স পাঠালে তাকে কোনো প্রশ্ন না করে পাঠানো অর্থের বিপরীতে শতকরা ২ ভাগ আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে। কিন্তু কেউ যদি এর বেশি অর্থ পাঠান তার কাছে কিছু কাগজপত্র চাওয়া হবে। তবে রেমিট্যান্স পাঠানোর কোনো ঊর্ধ্বসীমা বা আপার লিমিট থাকবে না বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রেমিট্যান্সের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রবাসী বাংলাদেশিরা এক হাজার ৬৪২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ। এর আগে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল এক হাজার ৫৩১ কোটি ৬৯ লাখ মার্কিন ডলার। এছাড়া ২০১৬-১৭ অর্থবছরে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানোর পরিমাণ ছিল এক হাজার ২৭৬ কোটি ৯৪ লাখ মার্কিন ডলার। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এক হাজার ৪৯৮ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিল প্রবাসীরা, যা তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি।#

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ