পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের নির্ধারণ করে দেয়া সীমা বা অবস্থানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে না পশুহাটের গন্ডি। পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে অস্থায়ী এসব পশুহাটের জন্য সীমা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু নির্ধারিত এলাকার আশপাশের খালি জায়গা, রাস্তা, খেলার মাঠসহ উন্মুক্ত বিভিন্ন স্থানে বিস্তৃত হয়েছে এ হাট। ফলে এসব স্থানের সড়কে তীব্র যানজট লেগেই থাকছে। আর সড়ক ও পরিবেশ দূূষিত হচ্ছে পশুর খাদ্য এবং বর্জ্যে। নগরজীবনে ভোগান্তি বাড়লেও এসব ব্যাপারে অনেকটাই নীরব দুই সিটি করপোরেশন।
সূত্র জানায়, সিটি করপোরেশন কোরবানির পশুহাট ইজারা প্রদানের কার্যাদেশ দেয়ার ক্ষেত্রে বেশ কিছু শর্ত দিয়েছে। তবে এর বেশির ভাগই মানছেন না ইজারাদাররা। কোনো ইজারাদারই নিয়মনীতির তোয়াক্কা করছেন না। হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে সিটি করপোরেশন রাস্তায় হাট বসানো ও রাস্তা খোঁড়ায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। কিন্তু তা মানছেন না কেউই। প্রতিটি হাটই রাস্তার ওপর বসানো হচ্ছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সর্বোচ্চ সর্তক অবস্থানে রয়েছে আইন-শৃংখলা বাহিনী। হাটগুলোতে বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা, পুলিশের কন্ট্রোল রুম ও ওয়াচ টাওয়ার। এছাড়া হাট কর্তৃপক্ষের স্বেচ্ছাসেবীরাও রাতদিন কাজ করছেন। ক্রেতা-বিক্রেতাদের সচেতনার জন্য মাইকিংও করা হচ্ছে। রাজধানী ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অস্থায়ী পশুর হাট বসছে ২১টি স্থানে। গবাদিপশুর হাট ঈদের দিনসহ ছয় দিন চালু থাকবে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) কৃষ্ণপদ রায় বলেন, পশুর হাটের চাঁদাবাজি ও এলাকায় রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তার নিয়ে যাতে সংঘর্ষ না হতে পারে তার জন্য পোশাকে ও সাদা পোশাকে পুলিশ কাজ করছে। হাটগুলোতে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। আমাদের টার্গেট, যে কোন উপায়ে কোরবানির পশুর হাটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। চাঁদাবাজি ও ছিনতাইসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ দমন করা।
গতকাল বেশ কয়েকটি হাট সরেজমিনে দেখা গেছে, পশুর আমদানি বাড়ছে। বিক্রি এখনও জমে উঠেনি। তবে দাম কিছুটা বেশি বলে মনে করছেন ক্রেতারা। অবশ্য বিক্রেতারা বলছেন, দাম গতবারের মতোই আছে। পশু আমদানিও অনেক। তবে ভারতীয় গরু নিয়ে এক ধরনের আতংকের মধ্যে আছেন দেশি বিক্রেতারা।
বুধবার সরেজমিন দেখা গেছে, ধোলাইখাল মাঠ থেকে শুরু হয়ে এই হাট আশপাশের রাস্তায় বিস্তার করেছে। শত শত গরু নিয়ে ব্যাপারিরা রাস্তার উপর পরিচর্যা করছেন। এ কারণে গেন্ডারিয়া থেকে সূত্রাপুর কাঠেরপুল, নারিন্দার সঙ্গে সংযোগ সড়কে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন পড়েছে। চলাচলকারি মানুষকে পড়তে হচ্ছে চরম দুর্ভোগে। ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটে পড়ে নারী ও শিশুদের ভোগান্তি উঠেছে চরমে।
অবশ্য ইজারাদাররা বলছেন, পুরো রাস্তা জুড়ে নয়। রাস্তার একপাশে গরু বেঁধে বিক্রি করা হচ্ছে। আর যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে তাদের নিজস্ব ভলেনটিয়াররাও কাজ করছে।
নারিন্দার বাসিন্দা নয়ন মিয়া বলেন, সর্বত্র গরু রাখার কারনে এলাকায় যানজট লেগে থাকে। এর মধ্যে রাস্তায় হাট করার অনুমতি দেয়া ঠিক না। কষ্টের আর শেষ নেই। এ যেন মরার ওপর খাড়ার ঘাঁ।
একই অবস্থা দেখা গেল কমলাপুর পশুর হাটে। হাটের জন্য গোপীবাগ, মতিঝিল, সায়েদাবাদ সংযোগ সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তার দু’ধারে গরু বেঁধে রেখেছেন পাইকাররা। অন্যদিকে রাস্তার উপর ট্রাক রেখে শত শত গরু নামানো হচ্ছে। মুগদা স্টেডিয়ামের সামনের রাস্তাও ভরাট হয়ে গেছে গরুতে। শুধু এ দুটিই নয় হাজারীবাগ, গোলাপবাগ, রহমতগঞ্জ, আফতাবনগর, নয়াবাজার ও শনিআখড়াসহ আরও কয়েকটি গরুর হাটে একই দৃশ্য দেখা গেছে।
শাজাহানপুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, আবাসিক এলাকায়ও হাট বসানো হচ্ছে। বিভিন্ন বাসার সামনে গরু বেঁধে রাখা হয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন ওই এলাকার অধিবাসীরা।
খিলক্ষেত বনরূপা হাট ইজারাদারের বিরুদ্ধে জোর করে হাটে নেয়ার প্রবণতার কথা জানিয়েছেন গরু খামারিরা। শাজাহানপুর হাটে আসা নজরুল ইসলাম নামে একজন খামারি অভিযোগ করেন, রাতে আসার সময় তাদের ট্রাক খিলক্ষেত বনরূপা হাটের লোকজন আটকে দেয়। তারপর তারা জোর করে গরু নামানোর চেষ্টা করে। কিন্তু আমরা প্রতি বছর শাজাহানপুর হাটে আসি। তাদের কাছ থেকে কষ্ট করেই ছাড়া পেতে হয়েছে।
ধানমন্ডির স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ অভিযোগ করেন যে, লেক সার্কাস গলিতে গরুর হাট বসানো হয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের কোন অনুমতি ছাড়াই স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনারের লোকজন এ হাট বসিয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
খামারিরা জানান, গোখাদ্যের দাম অনেক বেশি। তা ছাড়া একটি গরু লালন পালনে অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হয়। এ কারণে দাম বেশি চাচ্ছেন তারা। ভারত থেকে গরু কম আসায় ব্যবসায়ীদের মুখে খুশির ঝিলিক রয়েছে। তবে মনে শঙ্কাও আছে। ভারতীয় গরু এলেই দাম পড়ে যাবে এ ভয় কাজ করছে তাদের। আর না এলে বেশি দামে বিক্রি করা যাবে বলে তাদের আশা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।