Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অশুভ লক্ষণ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৬ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০১ এএম

দেখে মনে হচ্ছে নয়াদিল্লীর হিন্দু জাতীয়তাবাদী বিজেপি সরকার দখলকৃত কাশ্মীরে বিপুল সেনা সমাগমের মাধ্যমে সেখানে সঙ্ঘাত উসকে দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

মিডিয়া রিপোর্টের ভাষ্যমতে, দিল্লী এ অঞ্চলে সম্প্রতি ২৫,০০০ সামরিক সদস্য পাঠিয়েছে। গত সপ্তাহে সেখানে যে ১০ হাজার সেনা পাঠানো হয়েছিল, এটা তার অতিরিক্ত। তাছাড়া, পর্যটক ও হিন্দু তীর্থযাত্রীদের ‘সন্ত্রাসী হুমকির’ কারণে ওই অঞ্চল ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই, এই উদ্বেগজনক ধারাবাহিক ঘটনাপ্রবাহের কারণে ভারত অধিকৃত কাশ্মীরে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। খাবার ও জ্বালানি সংরক্ষণের আহ্বান জানানো হয়েছে, যেটার কারণে আতঙ্কিত মানুষ এসব কিনতে শুরু করেছে। অন্যদিকে, দিল্লী থেকে পুলিশের প্রতি দেয়া এক নির্দেশনা ফাঁস হয়েছে, যেখানে মসজিদ ও প্রচারকদের উপর নজর রাখতে পুলিশকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এই বিস্ফোরণোম্মুখ পরিস্থিতির সাথে সাথে আমরা আরো যোগ করতে পারি যে, ভারত প্রায় নিয়মিত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘন করছে। অন্যদিকে বিজেপি সংবিধান থেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি অনুচ্ছেদ মুছে ফেলার চেষ্টা করছে, যেখানে ভারত অধিকৃত কাশ্মীরে বাইরের কোন মানুষের সম্পদ ক্রয়ের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এই সব লক্ষণ তাই কোন আশার আলো দেখাচ্ছে না।

এটা কোন গোপনীয় বিষয় নয় যে বিজেপির আদর্শিক মূল সংগঠন হলো হিন্দু ফ্যাসিবাদী আরএসএস। কাশ্মীরের ব্যাপারে সঙ্ঘ পরিবারের উদ্দেশ্যকে ঘিরেই কি কাশ্মীরে এই সব ঘটনা ঘটছে? আদর্শিক বাবা-মায়ের এজেন্ডা বাস্তবায়ন এবং জনপ্রিয় ভোট ব্যাংক রক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কি সকল গণতান্ত্রিক রীতিনীতি ছুড়ে ফেলার পরিকল্পনা করছেন? এ ব্যাপারে অনেক ধরনের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। ভারতীয় সংবিধানের ৩৫এ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে বিজেপি ভারত অধিকৃত কাশ্মীরের জনসংখ্যার মানচিত্র বদলে দিতে চান, কারণ স্থানীয়রা বহিরাগতের চাপে পিষ্ট হয়ে যাবে। দিল্লীর কট্টরপন্থীরা যদি ভেবে থাকেন যে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে কাশ্মীরকে দখল করা যাবে, তাহলে তারা ভুল ভেবেছেন। এতে করে ভারতের ব্যাপারে কাশ্মীরীদের অনীহাই শুধু বাড়বে, যেখানে এখনই স্বাধীনতার স্লোগান বাজতে শুরু করেছে উপত্যকায়। নিজেদের অশুভ উদ্দেশ্যের বিরুদ্ধে কাশ্মীরীদের প্রতিরোধের ভয়েই সম্ভবত ভারত এই রাজ্যে ব্যাপকভাবে সামরিক শক্তি বৃদ্ধি শুরু করেছে।

দুঃখজনকভাবে, মনে হচ্ছে যেন ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কাশ্মীরে যুক্তি ও সুবিবেচনার বদলে ঔদ্ধত্ব এবং আগ্রাসী বাহিনীকে অস্ত্র হিসেবে গ্রহণ করেছে। সেনা উপস্থিতি বৃদ্ধি এবং কাশ্মীরের সংবিধান বদলে দেয়ার পরিকল্পনা একটা মহাবিপর্যয়ের রেসিপি মাত্র। কাশ্মীরীরা - বিশেষ করে তরুণরা - ভারতের বর্বরতাকে যথেষ্ট সহ্য করেছে এবং নিজেদের মুক্তি ও মর্যাদার জন্য তারা নিজেদের জীবন উৎসর্গ করতে প্রস্তুত।

তবে এখনও সময় আছে; মোদি এবং তার বাহিনী চাইলে এখনও সেনা সরিয়ে নিতে পারেন এবং কাশ্মীরী ও পাকিস্তানের প্রতি সংলাপের হাত বাড়াতে পারেন। সুস্থ মানুষ এটাই চাইবে যাতে ভারত সঙ্ঘাত এড়াবে এবং আলোচনার মাধ্যমে শান্তির চেষ্টা করবে। দিল্লীতে যারা গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় আছেন, তারা এই সুস্থতার পথে কি হাঁটবেন? সূত্র : ডন-এর সম্পাদকীয়।



 

Show all comments
  • Muhammad Alime Laskar ৬ আগস্ট, ২০১৯, ১:২৯ এএম says : 0
    ভারতের সংবিধানের 370 বিধি বিলুপ্তি ঘোষণা করেন তাদের নোংরা মনের বহিঃপ্রকাশ আবার করল। দোয়া করি কাশ্মিরের জনগণকে আল্লাহ হেফাজতে রাখুন।
    Total Reply(0) Reply
  • Muhammad Shafiuddin ৬ আগস্ট, ২০১৯, ১:৩০ এএম says : 0
    কাশ্মীরের সাধারন জনগনের হাতে অস্ত্র তুলে দিন, এবার আর পাথর নয়, গুলির জবাব গুলিতেই দিতে হবে,, হয় শহীদ হবেন, নয় কাশ্মীরকে ভারতীয় দখলদার মুুক্ত করবেন । ভারত নিপাত যাক-কাশ্মীরিরা স্বাধীনতা পাক । নারায়ে তাকবীর আল্লাহু আকবার----
    Total Reply(0) Reply
  • Ali Haider ৬ আগস্ট, ২০১৯, ১:৩০ এএম says : 0
    এটি যেভাবেই হোক, আমাদের ভাগ্য ভালো যে ৪৭ এ উপমহাদেশটা ভাগ হয়েছিল। নাহয় এহেন মানসিকতার ভারতীয়দের সাথে থাকাটা একপ্রকার অসম্ভব। এরা জন্মগতভাবে মুসলিমবিদ্বেষী। ৩৭১ পরবর্তী ভারতীয় সাংবিধানিক ধারাগুলোতে আসাম, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, অন্ধ্র প্রদেশগুলোর এ ক্ষমতা আছে। তাহলে কাশ্মিরের ৩৭০ ধারা কেন তুলে নিতে হল? উত্তরটি হচ্ছে কাশ্মিরিরা বেশিরভাগ মুসলিম।
    Total Reply(0) Reply
  • Hassan Hassan ৬ আগস্ট, ২০১৯, ১:৩০ এএম says : 0
    সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাদ করে ভারত দক্ষিণ এশিয়ায় সুখে শান্তিতে বসবাস করা হিন্দুদের কপালে শনি টাইনা আনতেছে
    Total Reply(0) Reply
  • Kazi Younus ৬ আগস্ট, ২০১৯, ১:৩১ এএম says : 0
    “পারস্পারিক ভালোবাসা, দয়া-মায়া ও স্নেহ-মমতার দিক থেকে গোটা মুসলিম সমাজ একটি দেহের সমতুল্য। যদি দেহের কোন বিশেষ অঙ্গ অসুস্থ হয়ে পড়ে, তাহলে অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গেও তা অনুভূত হয়। সেটা জাগ্রত অবস্থায় হোক কিংবা জ্বরাক্রান্ত অবস্থায়।” (মুসলিম : ৬৭৫১ )। কাশ্মীরে নিপীড়িত মুসলিম ভাইদের উপর উগ্র হিন্দুবাদী ভারতীয় আগ্রাসন দেখে আমাদের হৃৎপিন্ডেও প্রচন্ড রক্তক্ষরণ অনুভূত হচ্ছে। কাশ্মীরের নিপীড়িত ভাইদের ব্যাথায় আমাদের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রতিবেশী রাষ্ট্রেরও ব্যাথিত হবার কথা! নিরব থাকা মানেই মৌন সম্মতির লক্ষন! সমগ্র মুসলিম বিশ্ব এক দেহের ন্যায়! কোন মুসলিমের কষ্টে অন্য মুসলিমেরও কষ্ট হয়। কিন্তু যে মুনাফিক তার কোন কষ্ট হয় না! আল্লাহ্‌ যেন কাশ্মীরসহ বিশ্বের সর্বত্র নিপীড়িত মুসলমানদের রক্ষা করেন।
    Total Reply(0) Reply
  • Borbad Khan ৬ আগস্ট, ২০১৯, ১:৩১ এএম says : 0
    ৩৭০ অনুচ্ছেদ আলোচনা ছাড়া একতরফা ভাবে বিলুপ্ত করার অধিকার ভারতের নাই।কাশ্মীরের আজাদি'র সংগ্রাম মুলত আজ থেকে শুরু হল।
    Total Reply(0) Reply
  • Robi Rahi ৬ আগস্ট, ২০১৯, ১:৩১ এএম says : 0
    আর্টিকেল ৩৫,৩৭০ বলে কাশ্মির মূলত ভারত থেকে আলাদাই ছিল স্বাধীন রাষ্ট্রের মত।সাম্রাজ্যবাদ ভারত সরকার জোরকরে কাশ্মিরের স্বাধীনতা লুট করলো।সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জন করতে হবে তাদের, নইয়ে দখলদার ভারতের কাছে কাশ্মিরিদের ভূমি চিরদিনের মত হারাতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Feruz Ahammad ৬ আগস্ট, ২০১৯, ১:৩২ এএম says : 0
    কথায় আছে রাষ্ট্র প্রধানের একটি ভুল সিদ্ধান্তের কারণে হতে পারে লক্ষ লক্ষ কোটি জনতার প্রাণহানি জানি না এই সিদ্ধান্তের কারণেও অমনটা হয় কিনা।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ