Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্বাধীনতার দুই বছর আগেই বাংলাদেশের নামকরণ করেন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০০ এএম

১৯৭১ সালের বিজয়ের দুই বছর আগেই এদেশটির নামকরণ করেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৬৯ সালের ৫ ডিসেম্বর শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব বাংলার নামকরণ করেন ‘বাংলাদেশ’। ‘কারাগারের রোজনামচা’ বইয়ের ২৭৪ নম্বর পৃষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর এই ঘোষণার উদ্ধৃতি রয়েছে। তাছাড়া ইতিহাসবিদরাও বিষয়টির সত্যতার কথা নিশ্চিত করেছেন। বঙ্গবন্ধু ওই আলোচনা সভায় বলেন, “এক সময় এদেশের বুক হইতে, মানচিত্রের পৃষ্ঠা হইতে ‘বাংলা’ কথাটির সর্বশেষ চিহ্নটুকুু চিরতরে মুছিয়া ফেলার চেষ্টা করা হইয়াছে। একমাত্র ‘বঙ্গোপসাগর’ ছাড়া আর কোনও কিছুর নামের সঙ্গে ‘বাংলা’ কথাটির অস্তিত্ব খুঁজিয়া পাওয়া যায় নাই। জনগণের পক্ষ হইতে আমি ঘোষণা করিতেছি আজ হইতে পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশটির নাম ‘পূর্ব পাকিস্তান’-এর পরিবর্তে শুধুমাত্র ‘বাংলাদেশ’।”

বঙ্গবন্ধুর কারাজীবন নিয়ে নিজের লেখা ডায়েরি যা ‘কারাগারের রোজনামচা’ নামে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়েছে, সেই বইয়ের ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবন পরিচয় (১৯৫৫-৭৫)’ অংশে বঙ্গবন্ধুর বছর ভিত্তিক উল্লেখযোগ্য কর্মকান্ডের মধ্যে ১৯৬৯ সালে বাংলাদেশের নামকরণের কথা বলা হয়েছে।

বঙ্গবন্ধুর এই নামকরণের বিষয়ে বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, বাংলাদেশের নামটি ওইদিন প্রকাশ্যে ঘোষণা হয়। বঙ্গবন্ধু সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে সভাপতির ভাষণ দিতে গিয়েই সর্বপ্রথম ওই ঘোষণাটি দেন। তিনি বলেছিলেন, ‘আমাদের দেশের নাম হবে বাংলাদেশ।’ পরদিন আমরা পত্রিকায় দেখি মওলানা ভাসানী ও আতাউর রহমান খান বঙ্গবন্ধুর ওই নামকরণের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন।
ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসির মামুনও ‘বঙ্গবন্ধু কীভাবে স্বাধীনতা এনেছিলেন’ এই বইতে এ তথ্য জানান। তিনি জানান, ওইদিন বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন যে, যদি নতুন দেশ হয় তার নাম হবে বাংলাদেশ।

জাতীয় শোক দিবসের সরকারি কর্মসূচি
স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন উপলক্ষে সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। গতকাল বঙ্গবন্ধুর ৪৪তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন উপলক্ষে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে অনুষ্ঠিত হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং সংস্থার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।

গৃহিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ১৫আগস্ট সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি ভবনসমূহে এবং বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনসমূহে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা, সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও সশস্ত্র বাহিনীর গার্ড অফ অনার প্রদান। এছাড়া ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। পরে ঢাকার বনানী কবরস্থানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শাহাদত বরণকারী জাতির পিতার পরিবারের সদস্য ও অন্যান্য শহিদদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ফাতেহা পাঠ এবং দোয়া করবেন।

সকাল ১০টায় গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এছাড়া সেখানে ফাতেহা পাঠ, সশস্ত্র বাহিনীর গার্ড অফ অনার প্রদান এবং মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি সমাধিস্থলে বিশেষ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
সভায় জানানো হয়, জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সারাদেশে মসজিদসমূহে বাদ জোহর বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সুবিধাজনক সময়ে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বেসরকারি টেলিভিশন ও রেডিও বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে।

এছাড়াও জাতীয় দৈনিক ও সাময়িকীতে ক্রোড়পত্র প্রকাশ, পোস্টার বিতরণ এবং বঙ্গবন্ধুর ওপর প্রামাণ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ, অধিদপ্তর ও সংস্থা জাতীয় কর্মসূচির সাথে সামঞ্জস্য রেখে কর্মসূচি পালন করবে।

তথ্য মন্ত্রণালয় তার আওতাধীন সংস্থা ও দপ্তরের মাধ্যমে জাতীয় কর্মসূচির সঙ্গে সংগতি রেখে আলোকচিত্র প্রদর্শনী, সাময়িকী-নিরীক্ষা, নবারুণ, সচিত্র বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ কোয়ার্টারলির বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ, স্মরণিকা ও বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশ, আলোচনা সভা ও অন্যান্য কার্যক্রম গ্রহণ করবে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে জাতীয় শোক দিবসে আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিলসহ জাতীয় কর্মসূচির সাথে সংগতি রেখে কর্মসূচি পালন করবে।

এছাড়া দেশের সকল সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় শোক দিবস পালনের জন্য জাতীয় কর্মসূচির সাথে সামঞ্জস্য রেখে কর্মসূচি পালন করবে।###



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ