পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
দেশের ডিজিটাল তথ্যভান্ডারকে সাইবার আক্রমণ থেকে রক্ষা করার উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। এ জন্য ‘বিজিডি ই-গভ সিআইআরটি’র সক্ষমতা বৃদ্ধি’ নামের একটি প্রকল্প হাতে নিতে যাচ্ছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ। পরিকল্পনা কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ১৪৬ কোটি ৭১ লাখ টাকার এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে সরকারি দফতরে সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক সচেতনতা বাড়বে এবং জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, সর্বোপরি জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
সরকারের আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মামুন-আল-রশিদ এ প্রসঙ্গে বলেন, ডাটা সেন্টারটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা আমরা প্রতি মুহূর্তে শঙ্কায় থাকি, কখন কী হয়। এখানে নির্বাচন কমিশনের তথ্যসহ সরকারি সব অফিসের তথ্য সংরক্ষিত আছে। আমরা সবসময় সতর্ক অবস্থায় আছি। তারপরও বিভিন্ন স্থান থেকে সাইবার আক্রমণের চেষ্টা চলে। সেসব আক্রমণ থেকে ডাটা সেন্টারকে রক্ষায় এই প্রকল্প ভূমিকা রাখবে।
পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রকল্প প্রস্তাব পাওয়ার পর গত ২২ মে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় মূল্যায়ন কমিটি বেশকিছু সুপারিশ দেয়। ওই সুপারিশের ভিত্তিতে এরই মধ্যে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পুনর্গঠন করা হয়েছে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী সভায় তা উপস্থাপন করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি)।
আইসিটি বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, রূপকল্প ২০২১ ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের আওতায় সরকারি কাজের বড় অংশ দ্রæত ডিজিটাইজেশনের মাধ্যমে ই-সেবা, ই-কমার্স, অনলাইন ব্যাংকিং সেবা চালু হয়েছে। জনগণের দোরগোড়ায় ই-সেবা পৌঁছে দিতে সরকার জাতীয় ডাটা সেন্টার স্থাপন ও দেশব্যাপী সব সরকারি দফতরগুলোর মধ্যে নেটওয়ার্ক কানেকটিভিটির কাজ শেষ করেছে। কিন্ত জাতীয় ডাটা সেন্টার ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অনলাইন সেবাগুলো বিভিন্ন সাইবার আক্রমণে আক্রান্ত হচ্ছে। এসব আক্রমণ থেকে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অবকাঠামোগুলো নিরাপদ রাখতে বিসিসির আওতায় বিজিডি ই-গভ সিআইআরটি (কম্পিউটার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম) প্রতিষ্ঠা করা হয়। ডিজিটাল বাংলাদেশের আওতায় অর্জনগুলো সুরক্ষিত করার জন্য বিসিসির কার্যক্রমের আওতায় সাইবার নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য এই টিম গঠন করা হয়েছে।
এদিকে, বিজিডি ই-গভ সিআইআরটি’র কার্যক্রম এতদিন পরিচালিত হতো লিভারেজিং আইসিটি ফর গ্রোথ অ্যান্ড এমপ্লয়মেন্ট (এলআইসিটি) প্রকল্প থেকে। এই প্রকল্পের মেয়াদ চলতি বছরের জুনে শেষ হয়েছে। ফলে সিআইআরটি’র কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে নতুন প্রকল্পের প্রয়োজন দেখা দেয়। একইসঙ্গে এই প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারের বিভিন্ন দফতরের নেটওয়ার্ক ও সংশ্লিষ্ট অবকাঠামোতে সাইবার নিরাপত্তাঘটিত বিষয়গুলো দেখভালের প্রয়োজনীয়তাও দেখা দেয়। এই দুই চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি একই প্রকল্পের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর মাধ্যমে উদ্ভূত সাইবার ঝুঁকি নিরসনের কার্যক্রমকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দেওয়া সম্ভব বলে মত আসে। সেই অনুযায়ীই আইসিটি বিভাগ নতুন এই প্রকল্প হাতে নিয়েছে। ফলে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ও জাতীয় তথ্যভান্ডারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এ প্রকল্পের অন্যতম লক্ষ্য।
এ প্রকল্পের আওতায় ৩৮টি বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার ও কম্পিউটার অ্যাকসেসরিজ সংগ্রহ করা হবে; ব্যক্তি পরামর্শকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে; অফিস ইক্যুপমেন্ট ও ফার্নিচার কেনা হবে; বৈদেশিক ও স্থানীয় পর্যায়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে এবং সেমিনার ও কনফারেন্স আয়োজন করা হবে। এ বিষয়ে প্রকল্পটি দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সদস্য আবুল কালাম আজাদ পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় ডাটা সেন্টারে রক্ষিত সরকারের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যভান্ডার এবং ই-গভর্নমেন্ট অবকাঠামোকে সাইবার ঝুঁকি থেকে রক্ষা, সর্বোপরি সরকারি দফতরগুলোতে জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।