Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সেবা রফতানিতে প্রবৃদ্ধি ২৭ শতাংশ ২০১৮-১৯ অর্থবছর

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০১ এএম


পণ্য রফতানির মতো সেবা রফতানিতেও বেশ ভালো প্রবৃদ্ধি নিয়ে শেষ হয়েছে ২০১৮-১৯ অর্থবছর। গত অর্থবছরের সেবা খাতের রফতানির এই তথ্য প্রকাশ করেছে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো-ইপিবি।
তাতে দেখা যায়, সেবা রফতানি করে বাংলাদেশ ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৬৩৫ কোটি (৬ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন) ডলার আয় করেছে। এই অংক ২০১ ৭-১৮ অর্থবছরের চেয়ে ৪৬ শতাংশ বেশি। আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আয় হয়েছে ২৬ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
গত অর্থবছরে সেবা খাতের রফতানির লক্ষ্যমাত্র ধরা ছিল ৫০০ কোটি ডলার। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের আয় হয়েছিল ৪৩৪ কোটি ডলার। সর্বশেষ জুন মাসে সেবা রফতানিতে উল্লম্ফন হয়েছে। এই মাসে ৯২ কোটি ডলারের সেবা রফতানি হয়েছে। যা লক্ষ্যের চেয়ে প্রায় দ্বিগুন এবং গত বছরের জুন মাসের চেয়ে ৯১ শতাংশ বেশি। জুন মাসে লক্ষ্যমাত্রা ধরা ছিল ৪১ কোটি ৬৬ লাখ ডলার। আর গত বছরের জুনে সেবা রফতানি থেকে এসছিল ৪৮ কোটি ১৬ লাখ ডলার। সেবা খাতের রফতানি বৃদ্ধিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। আগামী দিনগুলোতে এ খাতের রফতানি আরও বাড়বে বলে আশার কথা শুনিয়েছেন মন্ত্রী।
২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় তিনি বলেছেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার আওতায় সেবা খাতে স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে প্রদত্ত শুল্কমুক্ত সুবিধার মেয়াদ ২০৩০ সাল পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে। বাংলাদেশের সেবা খাতের রফতানি স¤প্রতি ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এ সুবিধা প্রাপ্তির কারণে ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যায়।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, গত অর্থবছরে বেশ ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে। পণ্য এবং সেবা দুক্ষেত্রেই আমরা খুশি। ২০২১ সালের মধ্যে ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানির যে লক্ষ্যমাত্রা আমরা ধরেছি সেটা অর্জিত হবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সেবা খাতের রফতানি আয়ের মধ্যে ৬২২ কোটি ১৯ লাখ ডলারই এসেছে সরাসরি সেবা খাত থেকে। অর্থাৎ মোট রফতানির ৯৮ শতাংশই এসেছে সরাসরি সেবা খাত থেকে। বাকিটা দেশের বন্দরগুলোতে পণ্যবাহী জাহাজগুলোর কেনা পণ্য ও সেবা এবং মার্চেন্টিংয়ের অধীনে পণ্য বিক্রির আয়।
কোনো অনাবাসীর কাছ থেকে পণ্য কিনে একই পণ্য কোনো অনাবাসীর কাছে বিক্রি করাকে মার্চেন্টিং বলে। এই প্রক্রিয়ায় মোট বিক্রি থেকে মোট ক্রয় বাদ দিয়ে নিট মার্চেন্টিং রফতানি আয় হিসাব করা হয়। দেশের স্থল, সমুদ্র বা বিমান বন্দরে বিদেশি পরিবহনগুলো সেসব পণ্য ও সেবা-যেমন জ্বালানি তেল ও মেরামত সেবা-কিনে থাকে সেগুলোকে সেবা খাতের আওতায় ধরা হয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সেবা খাতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আয় হয়েছে সরকারি পণ্য ও সেবা রফতানি থেকে। এ উপখাত থেকে এসেছে ২৮৮ কোটি ৩৭ লাখ ডলার।
অন্য উপখাতগুলোর মধ্যে অন্যান্য ব্যবসায় সেবা থেকে এসেছে ৯৮ কোটি ডলার। টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি থেকে আয় হয়েছে ৫৪ কোটি ৯০ লাখ ডলার। বিভিন্ন ধরণের পরিবহন সেবা (সমুদ্র, বিমান, রেল এবং সড়ক) থেকে ৬৬ কোটি ২৭ লাখ ডলার আয় হয়েছে। আর্থিক সেবা খাত থেকে ১৩ কোটি ৪ লাখ ডলার এবং ভ্রমণ সেবা উপখাত থেকে ৩৬ কোটি ৭৮ লাখ ডলার রফতানি আয় হয়েছে। নির্মাণ সেবা থেকে এসেছে ৪৩ কোটি ৪৯ লাখ ডলার। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বিভিন্ন পণ্য রফতানি করে বাংলাদেশ চার হাজার ৫৩ কোটি ৫০ লাখ (৪০ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন) ডলার আয় করেছে। এই অংক লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে চার শতাংশ বেশি। আর আগের অর্থবছরের চেয়ে আয় বেশি এসেছে ১০ দশমিক ৫৫ শতাংশ। পণ্য ও সেবা খাত মিলে গত অর্থবছরে মোট রফতানি আয় হয়েছে চার হাজার ৬৮৭ কোটি ৩৫ লাখ (৪৬ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন) ডলার। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে পণ্য রফতানির লক্ষ্য ধরা ছিল তিন হাজার ৯০০ কোটি (৩৯ বিলিয়ন) ডলার। আর সেবা রফতানির লক্ষ্য ছিল ৫০০ কোটি (পাঁচ বিলিয়ন) ডলার। দুইটা মিলিয়ে মোট লক্ষ্য ছিল চার হাজার ৪০০ কোটি (৪৪ বিলিয়ন) ডলার।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রফতানি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ